Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিতাড়িত ট্রাম্পের ঠাকুর্দা

তরুণদের একটা নির্দিষ্ট মেয়াদ সামরিক বাহিনীতে কাজ করাটা বাভেরিয়ায় বাধ্যতামূলক ছিল সে সময়। ফ্রেডরিক যা করেননি। বছর কুড়ি আগে তাঁর আমেরিকায় আসার বিষয়টিও নিজের দেশে সরকারি ভাবে নথিভুক্ত করাননি।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯ ০৩:২২
Share: Save:

ষোলো বছর বয়সে জন্মভূমি বাভেরিয়া (এখন জার্মানির অংশ) ছেড়ে আমেরিকায় এসেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঠাকুর্দা ফ্রেডরিক ট্রাম্প। ভাগ্যের সন্ধানে। শুরু করেন নাপিতের কাজ দিয়ে। তার পরে রেস্তরাঁর ব্যবসা। একের পরে এক ব্যবসায় ভাগ্য খুলতে থাকে। খোলেন গণিকালয়ও। কিন্তু আমেরিকায় জলহাওয়া সহ্য হচ্ছিল না স্ত্রীর। সে কারণে ১৯০৫ সালে স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে বাভেরিয়ায় ফিরে যান ফ্রেডরিক। কিন্তু জন্মভূমি বাভেরিয়া তখন তাঁকে ঠাঁই দিতে রাজি হয়নি।

তরুণদের একটা নির্দিষ্ট মেয়াদ সামরিক বাহিনীতে কাজ করাটা বাভেরিয়ায় বাধ্যতামূলক ছিল সে সময়। ফ্রেডরিক যা করেননি। বছর কুড়ি আগে তাঁর আমেরিকায় আসার বিষয়টিও নিজের দেশে সরকারি ভাবে নথিভুক্ত করাননি। এই কারণে বাভেরিয়া ছেড়ে চলে যেতে বলা হয় তাঁকে। সে সময় দেশে থেকে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে ‘প্রিন্স রিজেন্ট অব বাভারিয়া’-কে একটি চিঠি লিখেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঠাকুর্দা। তার ছত্রে ছত্রে বিতাড়িত হওয়ার যে যন্ত্রণার কথা তিনি লিখেছিলেন, তাঁর নাতির অভিবাসন নীতির কারণে বর্তমান আমেরিকায় ঠিক সেই-রকম দুর্দশাতেই পড়তে হচ্ছে অভিবাসীদের। জার্মানে লেখা ফ্রেডরিক ট্রাম্পের ওই চিঠির ইংরেজি অনুবাদ সম্প্রতি হার্পাস পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

বাভেরিয়া ছাড়ার জন্য ফ্রেডরিককে আট সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছিল। থেকে যেতে মরিয়া হয়ে তিনি মিনতি করে লেখেন, ‘‘বাভেরিয়া ছাড়ার নির্দেশটা আমাদের কাছে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো।’’ এতে যে একটা পরিবারকে কী রকম দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয়, তার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ফ্রেডরিক লিখেছিলেন, ‘‘সৎ নাগরিকদের কাছে এটা অত্যন্ত দুঃখের।’’ তবে ওই চিঠিতে কাজ হয়নি। বাভেরিয়া ছেড়ে বেরিয়েই আসতে হয় তাঁকে। নিউ ইয়র্কে এসে থিতু হয় তাঁর পরিবার।

হালের জার্মানি অবশ্য সিরিয়ার বিপুল শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। আর ফ্রেডরিকের নাতির জমানায় আমেরিকায় চলছে অভিবাসী বিতাড়নের অভিযান। চলতি মাসেই ৬৫০ জন অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর মধ্যে ৫২০ জনের বিরুদ্ধে কোনও অপরাধমূলক অভিযোগ নেই। ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়াও অভিবাসী। তাঁকেও কি বিদায় করা হবে, প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্পের কট্টর সমালোচকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bavaria Donald Trump Immigration Policy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE