Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বন্ধ হোক নারী নির্যাতন, প্রতিবাদ ইউরোপে

দাবিটা সকলেরই এক— লিঙ্গ ভেদে নির্যাতন, বিশেষ করে মেয়েদের উপরে হিংসা  বন্ধ হোক। 

স্লোগান: ব্যানারে লেখা ‘লিঙ্গ-হিংসার খেলা শেষ! যথেষ্ট হয়েছে।’ নারী নির্যাতন রোখার আন্তর্জাতিক দিনে স্পেনের পামপ্লোনা শহরের রাস্তায়। এএফপি

স্লোগান: ব্যানারে লেখা ‘লিঙ্গ-হিংসার খেলা শেষ! যথেষ্ট হয়েছে।’ নারী নির্যাতন রোখার আন্তর্জাতিক দিনে স্পেনের পামপ্লোনা শহরের রাস্তায়। এএফপি

সংবাদ সংস্থা
প্যারিস শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৫০
Share: Save:

কোথাও হাতে পার্পল পোস্টার, কোথাও মাথার উপরে ধরা লাল কাপড়, কোথাও বা পোশাকের রং সাদা। আর কারও কারও মুখ ঢাকা সাদা মুখোশে। শনিবার থেকে ইউরোপের বিভিন্ন শহরে এমনই বিচিত্র বর্ণের প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। তবে দাবিটা সকলেরই এক— লিঙ্গ ভেদে নির্যাতন, বিশেষ করে মেয়েদের উপরে হিংসা বন্ধ হোক।

রবিবার, ২৫ নভেম্বর দিনটা নারী নির্যাতন রোখার আন্তর্জাতিক দিন হিসেবে ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। শনিবার থেকেই লিঙ্গ-হিংসা বন্ধের দাবিতে ইউরোপের পথে নেমেছেন বহু মানুষ। বহু জায়গায় মিছিলও করেছেন প্রতিবাদীরা।

ফ্রান্সের প্যারিস, লিয়ন, মার্সেই, রেনে, আথেন্স, জেনিভা, রোম, স্পেনের পথে পথে বিক্ষোভ মিছিলে হেঁটেছেন মহিলারা। সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন পুরুষরাও। এমনই এক জন ১৯ বছরের কলেজ পড়ুয়া তরুণ তাংগে। রেনের মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে বললেন, ‘‘এই প্রতিবাদ শুধু মেয়েদের নয়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই। যদি কেউ ভাবেন এ লড়াই তামাম পুরুষজাতির বিরুদ্ধে নারীর— তা হলে ভুল করবেন।’’

যৌন হেনস্থার প্রতিবাদে গত বছর মার্কিন মুলুকে সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে যে #মিটু আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেই পথেই এ বছর সেপ্টেম্বর থেকে প্যারিসে শুরু হয় #nousToutes আন্দোলন। ধীরে ধীরে সেই আন্দোলনের বীজ ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশে। শনিবার থেকে শুরু হওয়া প্রতিবাদ মিছিল সেই নেট দুনিয়ার আন্দোলনকে গণআন্দোলনের পূর্ণতা দিল।

ফ্রান্সে আন্দোলনের অন্যমত উদ্যোক্তা ক্যারোলিনা দে হাসে বললেন, ‘‘শনিবার গোটা দেশে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পথে নেমেছিলেন। শুধু মাত্র প্যারিসেই তিরিশ হাজার হবে। লিয়ন, মার্সেইতে হাজার দশেক মানুষ। গত বছরের তুলনায় এ বছর সংখ্যাটা ১৫ গুণ বেশি!’’ তাঁর মতে, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে গত বছরেও গর্জে উঠেছিলেন প্যারিসের মেয়েরা। তবে এত বড় ‘নারীবাদী আন্দোলনের জোয়ার’ প্যারিস আগে দেখেনি। ক্যারোলিনার কথায়, #মিটু আন্দোলনের জেরেই এ বছর প্রতিবাদের স্রোতে জোয়ার এসেছে।

ইউরোপে নারী নির্যাতনের সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। ক্যারোলিনার দাবি, তবে এই ধরনের আন্দোলনের জেরে অভিযোগগুলো ক্রমশ সামনে আসছে। একই সুর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁর গলায়। তিনি বলেছেন, ‘‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই এখন অনেকটাই জোরদার। তবে আমাদের আরও পথ চলা বাকি। এই ধরনের সমস্যাগুলিকে নিজেদের সমস্যা বলেই ভাবতে হবে। সেই মতো লড়তে হবে।’’

এই আন্দোলনকে আগামী দিনে আরও জোরদার করতে ফ্রান্সে অনলাইনে খোলাখুলি আলোচনার কথা ভাবা হয়েছে। শুধু লেখা নয়, সেখানে এই সংক্রান্ত ছবিও দেওয়া যাবে। শনিবার ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ইদুয়া ফিলিপ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার থেকেই ওই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘‘এমন কিছু ঘটতে দেখলেই ছবি তুলে পাঠিয়ে দিন। নিজেকে ও নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Violence Sexual Harassment Europe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE