কেট স্পেড। এপি-র ফাইল চিত্র।
বেশ কয়েক বছর ধরে অবসাদে ভুগছিলেন। কিন্তু বহু বলা সত্ত্বেও বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেননি। মার্কিন ডিজাইনার কেট স্পেডের মৃত্যুর পরে এ কথা জানিয়েছেন তাঁর বোন রিটা স্যাফো। নিউ ইয়র্কের ফ্ল্যাটে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটায় ৫৫ বছর বয়সি কেটের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আত্মহত্যা করেছেন কেট।
অবসাদ ও উদ্বেগের মতো মানসিক ব্যাধি কী ভাবে এক জন ‘সফল’ ব্যক্তিকেও খাদের কিনারে নিয়ে গিয়ে ঠেলে ফেলে দিতে পারে, তা ফের দেখিয়ে
দিল কেটের মৃত্যু। বিহ্বল ফ্যাশন দুনিয়ার মুখে এখন একটাই কথা— ‘অবসাদে ভুগছেন? তা হলে এখনই কারও সাহায্য নিন।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে, ফ্যাশন ডিজাইনার ইভাঙ্কা টুইট করেছেন, ‘‘কেট স্পেডের এই অসময়ে চলে যাওয়া আমাদের ফের দেখিয়ে দিল, আমরা সত্যিই অন্যের দুঃখ-কষ্ট বুঝতে পারি না। সবাইকে বলব— কেউ যদি অবসাদে ভোগেন, এক বারের জন্যও আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় আসে, তা হলে অবিলম্বে কারও সাহায্য নিন।’’ নীনা গুপ্ত ও ভিভ রিচার্ডসের কন্যা, ডিজাইনার মাসাবা গুপ্তও টুইটারে এক দীর্ঘ পোস্ট লিখে কেটকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। মাসাবার কথায়, ‘‘এ ধরনের পদক্ষেপ এক জন মানুষ কী ভাবে নেয়, তা আমি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারি না। তবু এ ধরনের কোনও মৃত্যুসংবাদ পেলেই আমার মনে হয়, চারপাশের মানুষের প্রতি আরও সংবেদনশীল হতে হবে আমাদের। যদি কেউ বলেন, তিনি ভাল নেই, বারবার তার খোঁজ নিন। তাঁকে বোঝান যে, আপনি তাঁর পাশেই আছেন।’’
অনেক অবসাদগ্রস্তের মতোই কেটকে দেখে মনে হত— তাঁর চেয়ে সফল আর সুখী এই দুনিয়ায় আর কেউ নেই। রূপকথার মতো কেরিয়ার, সফল বৈবাহিক জীবন, ফুটফুটে মেয়ে, কী নেই তাঁর জীবনে! ১৯৯৩ সালে নিউ ইয়র্কের দু’কামরার একটা ফ্ল্যাটে কালো নাইলনের ‘টেকসই, কাজের’ ব্যাগ বানানো শুরু করেন কেট। সঙ্গী ভাবী স্বামী অ্যান্ডি। চোদ্দো বছর পরে, ২০০৭ সালে, যখন ‘মেয়েকে বড় করার জন্য’ কোম্পানির সত্ত্ব বিক্রি করছেন, তখন তাঁর ব্র্যান্ড ‘কেট স্পেড নিউ ইয়র্ক’-এর মূল্য কয়েকশো কোটি টাকা। নিউ ইয়র্ক ফ্যাশন উইকের অন্যতম উদ্যোক্তা ফার্ন মেলিসের কথায়, ‘‘কেট আর অ্যান্ডিকে কখনও পরস্পরের থেকে আলাদা করা যেত না। সে কাজের জগতেই হোক, বা নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনে। খুব সুখী মনে হত ওদের।’’
তা হলে? মৃতদেহের পাশে পাওয়া সুইসাইড নোট পুলিশ প্রকাশ করলে হয়তো উত্তর মিলতে পারে। এখন শুধু এ-টুকুই জানা গিয়েছে— সেই নোটে কিশোরী মেয়েকে কেট লিখেছিলেন ‘‘তোমার কিন্তু কোনও দোষ নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy