ব্যালটে কোথাও তাঁর নাম নেই, আজকের ভোটে তবু তিনিই মধ্যমণি। গতকাল ক্লিভল্যান্ডে শেষবেলার প্রচারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই বললেন, ‘‘মধ্যবর্তী নির্বাচন ব্যাপারটা এত দিন বড্ড বোরিং ছিল। আমার কারণে এ বার সেটাই সবচেয়ে গরমাগরম।’’ এ দিকে আবার ঝড়ও উঠছে। ডেমোক্র্যাটদের বহু আকাঙ্ক্ষিত নীল ঝড় নয়, সত্যিকারের টর্নেডো। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, আজ ভোটের দিন বৃষ্টিতে ভাসতে পারে মিসিসিপির পূর্বে প্রায় প্রতিটি রাজ্যই।
এরই মধ্যে সকাল হতে না-হতেই ভোটের লাইনে আমেরিকা। গুগলের দাবি, ‘কোথায় ভোট দেব’ জানতে চেয়েই আজ সবচেয়ে বেশি মার্কিন জনগণ ঘোরাফেরা করেছেন তাদের সার্চ ইঞ্জিনে। টাইমজ়োনের ভেদে কোথাও ভোট শুরু হয়েছে ভোর ৫টাতেও। যেমন ভেরমন্টে। এ দিকে, ভোটবাক্স খোলার আগেই আগাম ভোট দিয়ে রেখেছেন অন্তত ৪ কোটি। সেনেটের ১০০টির মধ্যে ৩৫টি এবং হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৪৩৫টি আসনেই ভোটগ্রহণ চলছে দেশ জুড়ে। আজকের নির্বাচনে উঠে আসবেন ৩৬ জন গভর্নরও। আমেরিকার এই ভোটের দিকে তাকিয়ে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানির মতো ইউরোপের একটা বড় অংশ। এর আগে কিন্তু এমনটা দেখা যায়নি।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ছবি অনেক রাজ্যেই। ফ্লরিডায় গভর্নরের লড়াইয়ে রিপাবলিকান প্রার্থীর থেকে কিছুটা হলেও এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাট অ্যান্ড্রু গিলাম। জর্জিয়া, টেক্সাসে যেমন বড় খবর— ভোটযন্ত্রে গোলমাল। নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে যন্ত্র খুলতেই কেটে গেল পাক্কা দেড়ঘণ্টা। সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৭টা বুথেই দাঁড়িয়ে রইলেন ভোটাররা। দিনের শুরুতেই আবার বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগে ট্রাম্প শিবিরের বিজ্ঞাপনী প্রচার তুলে সরিয়ে দিয়েছে দু’টি সংবাদমাধ্যম এবং ফেসবুক। ভোটে ষড়যন্ত্রের ছক কিংবা ক্ষতিকারক বিদেশি-ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে আজ ১১৫টি অ্যাকাউন্ট ব্লক করেছে ফেসবুক।
রিপাবলিকানদের একটা বড় অংশে তবু উৎসাহের খামতি নেই। সেনেটে যে তারাই থাকছেন, এমন একটা সম্ভাবনার কথা গোড়া থেকেই বলছেন মার্কিন কূটনীতিকদের একাংশ। প্রেসিডেন্ট অবশ্য হাউসের দখল রাখা নিয়েও একই রকম আত্মবিশ্বাসী। কাল রাতেই তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে— ‘‘একশো বছরের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখবেন, প্রেসিডেন্টের দল মধ্যবর্তী নির্বাচনে খুব একটা ভাল ফল করতে পারে না। কিন্তু এ বার ছবিটা পাল্টাবে।’’
আর এর উল্টোটা হলে? বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিন্টনের ডেমোক্র্যাট দল যদি হাউসের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যায়! ট্রাম্পের সটান উত্তর— ‘‘এমনটা হওয়ার কথা নয়। কংগ্রেসের দু’টি কক্ষেই আমরা খুব ভাল অবস্থানে আছি। এর পরেও যদি ফল উল্টে যায়, তা হলে আমরাও কাজের ধারাটা বদলে ফেলব।’’
ট্রাম্প তবু স্বমেজাজেই। তাঁর প্রথম দফার প্রেসিডেন্ট মেয়াদের এখনও অর্ধেক বাকি। পদে পদে বিতর্ক সঙ্গী তাঁর। সে জন্য কোনও অনুতাপ নেই? এর উত্তরে কাল ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সুর একটু নরম রাখলে বোধ হয় ভালই হত।’’ অথচ তার পরেই তাঁকে সুর চড়াতে শোনা গেল। সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, ডোমোক্র্যাটরা হাউসের দখল নিয়ে যদি তাঁরই আয়করের হিসেব দাখিলের দাবি তোলে! ট্রাম্পের একটাই উত্তর— ‘‘আমি যা খুশি করতে পারি।’’
ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, এর উচিত জবাব দেবেন ভোটাররাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy