Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
china

চিনের উপরে চাপ বাড়াতেই ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাব

ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাব নিয়ে ভারত এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২০ ০৩:১৭
Share: Save:

ভারত এবং চিনের মধ্যে আচমকা মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছোটখাটো একটি বোমা ফাটিয়েছেন বলে মনে করেছে কূটনৈতিক বিশ্ব। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, মূলত চিনকে আরও চাপে ফেলতেই ট্রাম্পের ওই টুইট।

বেজিংয়ের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিষোদ্গার জারি রয়েছে। ট্রাম্পের টুইট, ‘‘গোটা বিশ্বে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। করোনা বিশ্বকে দেওয়া চিনের অত্যন্ত খারাপ উপহার।’’

ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাব নিয়ে ভারত এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। যদিও বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, ওই প্রস্তাবে ভারতের পক্ষেও কোনও ভাবেই সায় দেওয়া সম্ভব নয়। ভারতের বিদেশনীতি অনুযায়ী, দ্বিপাক্ষিক কোনও সঙ্কটে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা মেনে নেওয়া কার্যত অসম্ভব। একই ভাবে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব ট্রাম্প বারবার দেওয়ার পরেও, তা নাকচ করেছে মোদী সরকার। বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিকের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব, নিঃসন্দেহে ভারত এবং চিনকে অস্বস্তিতে ফেলবে। ভূকৌশলগত পরিস্থিতির কারণে সেই অস্বস্তি ভারতের তুলনায় চিনেরই বেশি।

চলতি মাসের গোড়া থেকে লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে নিজেদের মনোভাব জানিয়েছিল ওয়াশিংটন। আমেরিকার দক্ষিণ-মধ্য এশিয়া বিভাগের প্রধান কর্তা অ্যালিস ওয়েলস বলেছিলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে সীমান্তই হোক অথবা দক্ষিণ চিন সাগর— বরাবরই দেখেছি চিনের অমার্জিত ব্যবহার এবং প্ররোচনামূলক পদক্ষেপ থেকে বোঝা যায়, তারা তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তিকে কী ভাবে অপব্যবহার করছে।’’

চিনকে কোণঠাসা করার পাশাপাশি, ট্রাম্পের মধ্যস্থতা সংক্রান্ত বার্তাটির আরও একটি দিক আছে বলে মত বিদেশ মন্ত্রকের। ঘরোয়া ভাবে জানানো হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের কূটনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার মধ্যে রয়েছে ‘ডিল মেকিং’ অথবা লেনদেনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রফা করানো। যা তিনি কাশ্মীরের ক্ষেত্রেও বারবার করার চেষ্টা করেছেন। চিনের বিরুদ্ধে তাঁর এই তোপের পিছনে আমেরিকার ঘরোয়া রাজনীতিও অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। করোনা সংক্রমণের পর আমেরিকায় চিন-বিরোধী আবহ তৈরি হয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প সেই সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সূত্রের খবর, সীমান্তে চিনের সঙ্গে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল তা কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে কমানোর চেষ্টা চলছে। চিনের প্রভাবে ও ইন্ধনে গলার কাঁটা হয়ে উঠেছিল নেপাল। আপাতত তার থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছে মোদী সরকার। লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ ও কালাপানি—এই তিনটি এলাকাকে নিজের ভূখণ্ডে ঢুকিয়ে যে বিতর্কিত নতুন মানচিত্র বানিয়েছিল নেপাল, তাকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টিকে পিছিয়ে দিল সে দেশের পার্লামেন্ট। বিশেষজ্ঞদের মতে, লাদাখ নিয়ে চিন সুর নরম করায় মানচিত্র নিয়ে অবস্থান লঘু করেছে কাঠমান্ডুও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ladakh China Donald Trump
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE