ছবি: রয়টার্স।
ভোটের ফল যা-ই হোক, ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের আমেরিকার সিংহাসন দখল করুন কিংবা জো বাইডেন নতুন প্রেসিডেন্ট হন, করোনা-অতিমারির চাকা গড়াতে চলেছে ট্রাম্পের দেখানো পথেই। আতঙ্কে দেশে স্বাস্থ্য বিশারদেরা। কারণ, আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ওভাল অফিসের পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতরের দেখাশোনার ভার থাকবে ট্রাম্পের কাঁধেই। এ দিকে, দফতর থেকে দেশের প্রথম সারির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সরিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। বসিয়েছেন নিজের পছন্দের লোকেদের। যাঁরা প্রেসিডেন্টের বুলি আউড়িয়ে বলে যাচ্ছেন, ‘‘মাস্কের কোনও দরকার নেই!’’
জানুয়ারি আসতে আরও দু’টো মাস। এর মধ্যে আমেরিকায় জাঁকিয়ে পড়বে শীত। আর আশঙ্কা, তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়বে সংক্রমণ ও মৃত্যুমিছিল। দৈনিক সংক্রমণ এখনই লাখ ছুঁইছুঁই। হাসপাতালের শয্যা
ফাঁকা নেই। এ দিকে, হোয়াইট হাউসের যে করোনা টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছিল, তা নিজেই ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। শুধুমাত্র, তাঁর কথামতো না-চলায়। তাঁর এক-এক সময়ে এক-এক ভিত্তিহীন প্রস্তাবের প্রভাবে দেশ জুড়ে বিজ্ঞান-বিরোধী কথাবার্তা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। গত কাল ভোট ছিল। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ট্রাম্প বলে গিয়েছেন, ‘দেশে করোনা প্রায় কোণঠাসা’। তাঁর এ-কথার বিরোধিতা করায় হুমকির মুখে পড়েছেন শীর্ষস্থানীয় সংক্রমণ-বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউচিও। জনসভায় ঘুরিয়ে বলেছেন, ‘‘ভোটটা মিটুক, তার পর দেখছি।’’ ট্রাম্প বরখাস্ত করতে পারেন ফাউচিকে। যদিও, কাজটা খুব কঠিন হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে তাঁর কথাবন্ধ। ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর ডিরেক্টর রবার্ট রেডফিল্ডের সঙ্গেও কথা নেই। না-পসন্দ ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর কমিশনার স্টিফেন হান এবং চিকিৎসক জেরম অ্যাডামসকে।
ট্রাম্পের অন্যতম পছন্দের লোক স্কট অ্যাটলাস, স্ট্যানফোর্ডের প্রাক্তন নিউরোলজিস্ট। তিনিও মাস্ক পরার যৌক্তিকতা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর মতে, অতিমারি যেমন রয়েছে, তেমনই থাকতে দেওয়া হোক। আপনা থেকেই সব শেষ হয়ে যাবে। গত সপ্তাহে একটু রুশ টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁকে ট্রাম্পের বাণী আউড়াতে শোনা যায়। সামগ্রিক ভাবে আতঙ্কে আমেরিকার এপিডিমিয়োলজিস্ট এবং সংক্রমণ বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ। কার্লোস ডেল রিয়ো নামে এক সংক্রমণ বিশারদের কথায়, ‘‘জো বাইডেন যদি জিতেও যান, আরও কয়েক মাস ট্রাম্পের হাতে থাকবে প্রশাসন। আর এই সময়টাতেই ভয়ানক চেহারা নিতে পারে অতিমারি।’’
ইউরোপের অবস্থাও ভয়াবহ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) আজ জানিয়েছে, সংক্রমণ আরও বাড়বে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে যত নতুন সংক্রমণ ঘটেছে, তার অর্ধেক ইউরোপে। সংস্থাটি তাদের সাপ্তাহিক রিপোর্টে আরও জানিয়েছে, গত সপ্তাহের থেকে এই সাত দিনে ৪৬ শতাংশ মৃত্যু বেড়েছে মহাদেশটিতে। সব চেয়ে বেশি সংক্রমণের খবর মিলছে ফ্রান্স, ইটালি, ব্রিটেনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy