—ছবি এপি।
নির্বাচনী প্রচারে আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানোর বার্তা দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বছর আবার ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে জানিয়েছিলেন, তালিবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলবেই। সম্প্রতি ফের ভোলবদল। দিন কয়েক আগে সে দেশে শান্তিপ্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করার জন্য পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে চিঠিও লিখেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ইমরান দায়সারা মন্তব্য করলেও, ট্রাম্পের প্রশাসন আফগানিস্তান থেকে অর্ধেকেরও বেশি সেনা সরানোর কথা ঘোষণা করল।
সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা সরানোর সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে গত কালই ইস্তফা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জিম ম্যাটিস। তার পরেই প্রতিরক্ষা দফতরের দুই কর্তা ঘোষণা করেন, কয়েক মাসের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে প্রায় ৭ হাজার সেনা সরানো হবে। আফগান প্রশাসন যদিও দাবি করছে, তাদের কাছে এমন খবর নেই। বরং ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে হঠকারী বলেই মনে করছে কাবুলের একাংশ। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানির মুখপাত্র অবশ্য বলছেন, ‘‘পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। তাই আমেরিকা সেনা সরালেও নিরাপত্তা খাতে প্রভাব পড়বে না।’’
সিরিয়া থেকে সেনা সরানো প্রসঙ্গে ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছিলেন, আইএস জঙ্গিদের পুরোপুরি কাবু করা গিয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পাশে দাঁড়ালেও, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে বিতর্কও তৈরি হয়েছিল। তারপরেও যে আফগানিস্তান থেকে সেনা সরানো হবে, সেটা কার্যত কেউই আন্দাজ করতে পারেননি। এমনকি, পুতিনও কাল কটাক্ষ করেছিলেন— ‘‘১৭ বছর ধরে সরাব-সরাব করেও আফগানিস্তানে রয়ে গিয়েছে মার্কিন সেনা।’’ ট্রাম্প প্রশাসনের আচমকা ঘোষণায় তাই অনেকেই মনে করছেন, বিদেশের মাটিতে সামরিক অভিযানে প্রেসিডেন্টের ধৈর্যচ্যুতি ঘটছে। মার্কিন সেনেটরদের একাংশ বলছেন, এখনই আফগানিস্তান থেকে সেনা সরানো মানে আরও একটা ৯/১১-কে রাস্তা করে দেওয়া।
২০০১-এর ১১ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও পেন্টাগনে তালিবানি হামলার পরেই আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েন করে আমেরিকা। ১৭ বছরে সেখানে প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। তবে গত মঙ্গলবার আমেরিকার ডাকে জঙ্গিদের সঙ্গে এক টেবিলে বসতে আবু ধাবিতে এসেছিল আফগান প্রশাসনের এক প্রতিনিধি দল। একটি সূত্রের দাবি, তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছে আমেরিকাও।
সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারটা নিয়ে কিন্তু ধোঁয়াশা রয়েছে। সূত্রের খবর, এটি মৌখিক নির্দেশ। কাজ কবে থেকে শুরু হবে, তা নিশ্চিত নয়। অর্ধেকেরও বেশি সেনা সরানোর পরে কী ভাবে আফগান সেনার প্রশিক্ষণ কিংবা যুদ্ধের ময়দানে ন্যাটোকে পরামর্শ দেওয়া যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy