Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
International News

অন্য অফিসারদের টপকে বাজওয়া জেনারেল কেন? জোর চর্চা পাক মিডিয়ায়

অন্য সব লেফটেন্যান্ট জেনারেলদের পিছনে ফেলে পাক সেনার জেনারেল পদে বসছেন কামার জাভেদ বাজওয়া। সাম্প্রতিক কালে তাঁর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করছিলেন যাঁরা, তাঁদেরকে টপকে পাকিস্তানের চিফ অব আর্মি স্টাফ পদ পাচ্ছেন তিনি।

পাকিস্তানের পরবর্তী সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া। —ফাইল চিত্র।

পাকিস্তানের পরবর্তী সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৬ ১৩:৩৭
Share: Save:

অন্য সব লেফটেন্যান্ট জেনারেলদের পিছনে ফেলে পাক সেনার জেনারেল পদে বসছেন কামার জাভেদ বাজওয়া। সাম্প্রতিক কালে তাঁর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করছিলেন যাঁরা, তাঁদেরকে টপকে পাকিস্তানের চিফ অব আর্মি স্টাফ পদ পাচ্ছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ চেয়েছেন বলেই এমনটা হয়েছে, প্রকাশ্যেই জানাচ্ছেন পাকিস্তানের শাসক দলের নেতারা। পাক সংবাদমাধ্যমও সে বিষয়ে নিঃসংশয়। কিন্তু বাজওয়াকেই কেন বাছলেন নওয়াজ? তা নিয়েই এখন জোর চর্চা পাকিস্তানে।

গণতন্ত্রের প্রতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার দায়বদ্ধতাই তাঁকে পাক সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে পৌঁছতে সাহায্য করল— এমনটাই মনে করছে পাক সংবাদমাধ্যম। খ্যাতনামা পাক সংবাদপত্র ‘দ্য নিউজ’ লিখেছে, ‘‘জেনারেল বাজওয়ার কর্মজীবনের উপর ভাল করে নজর দিলেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতাই তাঁকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদটি এনে দিল।’’ পাক সংবাদমাধ্যমের ব্যাখ্যা, প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এমন এক জনকে সেনাপ্রধান পদে বসাতে চাইছিলেন, যিনি এক দিকে যেমন অভিজ্ঞ সমর বিশেষজ্ঞ হবেন, তেমনই অন্য দিকে পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কট্টর সমর্থক হবেন। কামার জাভেদ বাজওয়া সেই দুই মাপকাঠিতেই উতরে গিয়েছেন বলে পাক মিডিয়ার মত।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল বাজওয়া ছাড়া আর কারা পাক সেনাপ্রধান হওয়ার লড়াইতে ছিলেন? পাক মিডিয়া জানাচ্ছে, লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ ওয়াজিদ হুসেইন (চেয়ারম্যান, হেবি ইনডাস্ট্রিজ তক্ষশিলা), লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাজিবুল্লাহ খান, (ডিজি, জয়েন্ট স্টাফ, সদর), লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইশফাক নাদিম আহমেদ (কোর কম্যান্ডার, মুলতান) এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাভেদ ইকবাল রামাদি (কোর কম্যান্ডার, ভাওয়ালপুর)। দ্য নিউজ-এর রিপোর্ট বলছে, যে ক’জন লেফটেন্যান্ট জেনারেলের নাম জেনারেল রাহিল শরিফের উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল, তাঁরা প্রত্যেকেই একই দিনে মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে পাশ করেছিলেন। তবে এঁদের মধ্যে বাজওয়ার কাজের সক্ষমতা, কর্মদক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বেশি।

কামার জাভেদ বাজওয়া পাক সেনার বৃহত্তম বাহিনী ১০ কোর-এর কম্যান্ডার ছিলেন। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের এক বড় অংশের দায়িত্ব রয়েছে এই ১০ কোর-এর উপর। সেই বাহিনীকে দীর্ঘ দিন নেতৃত্ব দেওয়ায় কামার জাভেদ বাজওয়া পাকিস্তানের কাশ্মীর নীতি এবং নিয়ন্ত্রণ রেখার পরিস্থিতি সম্পর্কেও সম্যক ওয়াকিবহাল। সেনাপ্রধান পদের দৌড়ে আর যাঁরা ছিলেন, তাঁদের কারওরই কৌশলগত ভাবে এত গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই বলে পাক মিডিয়া সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন: হবু পাক সেনাপ্রধান সম্পর্কে সতর্ক করলেন তাঁর প্রাক্তন ভারতীয় ‘বস’

আর এক পাক সংবাদপত্র ‘ডন’-এর প্রতিবেদন বলছে, ‘‘গণতান্ত্রিক সরকারের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সম্পর্ক প্রসঙ্গে জেনারেল বাজওয়ার যে অপেক্ষাকৃত নরমপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, সেই দৃষ্টিভঙ্গিই প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নির্ণায়ক হিসেবে প্রমাণিত হল।’’ পাক বাহিনীতে অমায়িক ব্যবহারের জন্য কামার জাভেদ বাজওয়ার সুনাম রয়েছে বলে পাক মিডিয়ার দাবি। বাহিনীতে তিনি বেশ রসিক মানুষ হিসেবেও পরিচিত। বাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কর্মীদের সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগাযোগ এবং তাঁর সহজলভ্যতার কারণেও পাক সেনায় তাঁর সুখ্যাতি রয়েছে। প্রচারের আলো এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা কামার জাভেদ বাজওয়ার আরও একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, দাবি পাক মিডিয়ার। বাজওয়া প্রচারবিমুখ বলেই বাজওয়া কখনও ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে নামবেন না, আশা পাক রাজনীতিকদের। পরবর্তী সেনাপ্রধান পদে তাঁকে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে এই সব বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে ডন-এর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE