Advertisement
E-Paper

রোগী নিখোঁজ, জমা পড়েনি তদন্ত-রিপোর্ট

নর্দমা থেকে তুলে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল অসুস্থ কালু মাঝিকে। আচমকা উধাও হয়ে গিয়েছেন ৮১ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধ। প্রায় এক মাস পেরিয়ে গিয়েছে। আজও অশীতিপর কালু মাঝির খোঁজ মেলেনি। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে অভিযোগ হওয়ার পরে তদন্ত কমিটি তৈরি করে তদন্ত শুরু করানোর ঘোষণা করেন হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল। কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল সাত দিনের মধ্যে। তবে ২০ দিন পার হয়ে গিয়েছে, কালুর হদিস তো দূর, কোনও রিপোর্টই পেশ করতে পারেনি কমিটি।

সংগ্রাম সিংহ রায়

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৫ ০২:০৯

নর্দমা থেকে তুলে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল অসুস্থ কালু মাঝিকে। আচমকা উধাও হয়ে গিয়েছেন ৮১ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধ। প্রায় এক মাস পেরিয়ে গিয়েছে। আজও অশীতিপর কালু মাঝির খোঁজ মেলেনি।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে অভিযোগ হওয়ার পরে তদন্ত কমিটি তৈরি করে তদন্ত শুরু করানোর ঘোষণা করেন হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল। কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল সাত দিনের মধ্যে। তবে ২০ দিন পার হয়ে গিয়েছে, কালুর হদিস তো দূর, কোনও রিপোর্টই পেশ করতে পারেনি কমিটি। অভিযোগকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে রিপোর্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন কমিটির একাংশ। কিন্তু সে সম্বন্ধে কোনও খবর নেই সুপারের কাছে। ঘটনায় বিরক্ত ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দ্বারস্থ হয় পুলিশের।

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা অভিযোগ পেয়ে শিলিগুড়ি থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে পুলিশকেও রিপোর্ট দিতে হবে বলে জানানো হয়েছে। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।’’ শিলিগুড়ি থানায় ও পুলিশ কমিশনারের কাছে ওয়ার্ড মাস্টার-সহ হাসপাতালের কর্মী ও নার্সদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতি ও ইচ্ছাকৃত নিখোঁজের বিষয়ে তথ্য গোপনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এমনকী এই সমস্ত অভিভাবকহীন দেহ অন্য কোনও উদ্দেশ্যে ব্যবহার হয় কি না তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে ওই অভিযোগে।

গত ৫ এপ্রিল কালুবাবুকে নর্দমায় পড়ে থাকতে দেখেন সূর্য সেন কলোনি এলাকার বাসিন্দারা। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করার পর দেখা যায়, তাঁর সারা শরীরে জখমের চিহ্ন, বাঁ হাত নাড়াতে পারছেন না। তার মধ্যেই তিনি জানান, তাঁর বাড়ি বিহারে। বয়স প্রায় ৮০ বছর। ছেলেরা মারধর করে ফেলে দিয়েছে। এর পরে এলাকার বাসিন্দারা কয়েকজন মিলে তাঁকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে লিগাল এডের সদস্যরাও। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর, তাঁর বাঁ হাতের হাড় ভেঙেছে বলে জানা যায়। হাসপাতালে ভর্তির পরে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা লিগাল এড ফোরামের বিহার শাখাকে খবর দেওয়া হয়। যদিও নিখোঁজের পরিবারের খোঁজ এ দিন পর্যন্তও খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানা গিয়েছে।

কেন রোগী নিখোঁজের মত গুরুতর বিষয়ে এত দিনেও তদন্ত শেষ হল না, সে বিষয়ে হাসপাতালের সুপারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি ছুটিতে আছেন বলে জানান। তাঁর দাবি, ‘‘গত কয়েকদিন ধরে ছুটিতে থাকায় তদন্তের বিষয় আমার জানা নেই। বুধবারে কাজে যোগ দেওয়ার পরেই জানতে পারব।’’ সুপার করেছেন, হাসপাতালে বহু আনুষ্ঠানিক কাজকর্মের চাপেই তদন্ত শেষ করতে সময় লাগছে। তিনি যে তদন্ত কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাতে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। পরে অবশ্য সাত দিনের সময়সীমা পার হয়ে গেলে তিনি পনেরো দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল বলে জানান। ১৫ দিনের জায়গায় ২০ দিন পার হয়ে গিয়েছে।

অভিযোগকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার অভিযোগ করেন, ‘‘নিজেদের গাফিলতি ঢাকতে ইচ্ছেকৃতভাবে গড়িমসি করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে মিলছে না উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের তথ্যও।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সহযোগিতা পাননি। তাই পুলিশের দ্বারস্থ হতে হয়েছে বলে দাবি করছেন তিনি। অমিতবাবু শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের কাছে এবং শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সূর্য সেন কলোনির বাসিন্দা প্রমল বণিক। তিনিও হাসপাতালের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

sangram singha roy siliguri hospital police darjeeling
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy