Advertisement
E-Paper

চোখ হারাল শিশু, অভিযুক্ত চিকিৎসক

এক চিকিত্সকের গাফিলতিতে সাড়ে পাঁচ বছরের শিশুর একটি চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মালদহের চাঁচলের প্রাণসাগর এলাকায় জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ওই ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় ওই চিকিত্সকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন শিশুটির বাবা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৫ ০২:৩০
মায়ের সঙ্গে আফতাব। —নিজস্ব চিত্র।

মায়ের সঙ্গে আফতাব। —নিজস্ব চিত্র।

এক চিকিত্সকের গাফিলতিতে সাড়ে পাঁচ বছরের শিশুর একটি চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মালদহের চাঁচলের প্রাণসাগর এলাকায় জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ওই ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় ওই চিকিত্সকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন শিশুটির বাবা। চক্ষুরোগ বিশে়ষজ্ঞ ওই চিকিত্সকের বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুরে। ছাড়া শিলিগুড়িতেও ক্লিনিক রয়েছে তাপস ভট্টাচার্য নামে প্রবীণ ওই চিকিত্সকের। ওই শিশুর বাবা মুরসেদ আলি অভিযোগ, ওই চিকিৎসক তাঁর ছেলেকে সুস্থ করে তোলার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে কলকাতায় গিয়ে শিশুটির ডান চোখ তুলে ফেলতে হয়েছে।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই চিকিত্সক।

চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ উঠলেই কাউকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা যায় না। গাফিলতি রয়েছে কি না তা তো পুলিশ বলতে পারে না। ফলে শিশুটির চিকিত্সা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার কাছে পাঠানো হচ্ছে। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পুলিশ ও শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জুলাই মাসের ৮ তারিখে বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় চোখে পাটকাঠি ঢুকে গুরুতর জখম হয় প্রথম শ্রেণির পড়ুয়া আফতাব খান। ওইদিন বিকেলেই তাকে চিকিত্সক তাপসবাবুর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন অর্থাৎ ৯ তারিখ সকালে চিকিত্সক তাকে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার কথা বলার পর হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে নিয়ে এসে সেদিন রাতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করানো হয়। তখন ডান চোখ তুলে না ফেললে দু’টি চোখই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে চিকিত্সকরা জানিয়ে দেন। ফলে অপারেশন করে শিশুটির ডান চোখ তুলে ফেলা হয়।

শিশুর বাবার অভিযোগ, হরিশ্চন্দ্রপুরে আফতাবকে নিয়ে যাওয়ার পর সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। রাতে তার চোখে অপারেশনও করা হয়। সেজন্য আড়াই হাজার টাকাও নেন ওই চিকিত্সক। কিন্তু সকালে চোখের অবস্থা খারাপ হওয়ায় দ্রুত তাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। চিকিত্সায় গাফিলতি ঢাকতে শিশুটিকে শেষমুহূর্তে অন্যত্র পাঠানো হয় বলে অভিযোগ। পেশায় ছাদের সিলিং মিস্ত্রি শেখ মুরসেদ আলি বলেন, ‘‘অভাবের সংসার। তবু কষ্ট করেই ছেলেকে কলকাতায় নিয়ে যাই। ওরা বলে সংক্রমণ হয়েছে, ডান চোখ তুলে না ফেললে দু’টি চোখই নষ্ট হয়ে যাবে। উনি পারবেন না তা তো প্রথমদিন দেখে বলে দিলেই পারতেন।’’

উত্তরবঙ্গে চক্ষু বিশেষজ্ঞ হিসাবে প্রবীণ চিকিত্সক তাপসবাবুর খ্যাতি রয়েছে। বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুরে হলেও শিলিগুড়ির চার্চ রোডেও ক্লিনিক রয়েছে তাঁর। অভিযোগ অস্বীকার করে তাপসবাবু বলেন, ‘‘শিশুটির চোখের লেন্স ও পিছনের অংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আর যে কিছু করার নেই তা প্রেসক্রিপশনে লেখার পাশাপাশি ওদেরও বলি। এখানে চোখ তুলে ফেলার মতো পরিকাঠামো না থাকায় ওদের অন্যত্র যেতে বলেছিলাম। আর অপারেশনের প্রসঙ্গ আসছে কোথা থেকে। চোখটা যাতে বেরিয়ে না যায় সেজন্য প্রাথমিক চিকিত্সা বলতে যা বোঝায় তাই করেছিলাম। ইঞ্জেকশন দিয়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এখন কেন অভিযোগ করা হচ্ছে বুঝতে পারছি না।’’

Malda doctor chanchal harishchandra pur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy