ডেল্টা প্রজাতির ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সেই চিন্তা আরও গাঢ় হয়েছে। ফাইল চিত্র
করোনা তৃতীয় তরঙ্গও আসবে। দ্বিতীয়তেই শেষ নয় লড়াই। এমন কথা বেশ কিছু দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। সঙ্গে জমছে ভয়ও। কারণ পরবর্তী ঢেউয়ে কী ধরনের নতুন ক্ষতি হতে পারে, সে আশঙ্কা মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
আরও একটি ভয়াবহ ঢেউ যদি আসে তবে গোটা দেশের পক্ষেই তা সামাল দেওয়া কঠিন হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু তৃতীয় তরঙ্গ কি দ্বিতীর মতোই আতঙ্কের হবে? নানা জনের নানা মত। বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, তৃতীয় ঢেউ আগের দু’টির চেয়ে আরও কঠিন হতে পারে। ক্ষতি করতে পারে আরও কয়েকগুণ বেশি। বিশেষ করে ডেল্টা প্রজাতির ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সেই চিন্তা আরও গাঢ় হয়েছে। তবে এই দেশের গবেষকেদের চিন্তা খানিক অন্য দিকেই যাচ্ছে। তৃতীয় তরঙ্গ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার আগে তেমন কিছু কথাও জেনে রাখা জরুরি।
১) ঠিক যত তাড়াতাড়ি আসবে ভাবা হচ্ছিল, তেমন সময়ে হয়তো আসবে না করোনার তৃতীয় ঢেউ, মত বিজ্ঞানীদের একাংশের। সাধারণত কোনও মহামারির দু’টি ঢেউয়ের মধ্যে ১৫-১৬ সপ্তাহের ব্যবধান থাকে। দ্বিতীয় ঢেউ মে মাসে সবচেয়ে প্রবল হয়ে দেখা দেয়। ফলে অগস্ট কিংবা সেপ্টেম্বর মাসেই আসবে তৃতীয় ঢেউ। বলেছিলেন, দ্বিতীয় ঢেউ যেতে না যেতেই চলে আসবে তৃতীয়। তবে তেমন নাও হতে পারে বলে মত ভারতের বিজ্ঞানীদের। বিভিন্ন রাজ্যে এ সংক্রান্ত সমীক্ষা চালানো হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, আর কিছু দিন পরেও আসতে পারে তৃতীয় ঢেউ। ডিসেম্বর নাগাদ আসবে বলেও উল্লেখ করছেন কেউ কেউ।
ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মজবুত করার দিকে জোর দিচ্ছেন বহু গবেষক-চিকিৎসক। কারণ সে দফায় ভাইরাস ছড়ানোর ধরন আলাদা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁদের একাংশ। যে সব রাজ্যে এবার বেশি সংক্রমণ দেখা গিয়েছে, সেখানে আবার এক ভাবে নাও ছড়াতে পারে করোনা।
২) শিশুরাই যে বেশি সংক্রমিত হবে, সে কথাও হয়তো ঠিক নয়। সব বয়সের মানুষের মধ্যেই দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে। বহু গবেষক বলছিলেন যে, প্রথম দফায় বৃদ্ধ, দ্বিতীয়তে মাঝবয়সিদের মধ্যে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তৃতীয় দফায় বুঝি শিশুরাই প্রবল ভাবে সংক্রমিত হবে। তবে এখন দেখা যাচ্ছে, দ্বিতীয় দফায় বহু শিশু সংক্রমিত হয়েছে। ফলে এমন শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে নাও ছড়াতে পারে করোনা। সমীক্ষা বলছে, মহারাষ্ট্র এবং উত্তরপ্রদেশে ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ শিশু কোনও না কোনও ভাবে ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছে। তাদের অনেকের শরীরে ইতিমধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে।
৩) আগের চেয়েও ভয়াবহ হবে তৃতীয় ঢেউ। ইতিমধ্যে এমন কথা রটে গিয়েছে। তবে বিজ্ঞানীদের একাংশ বলছে, তেমনটা নাও হতে পারে। এবার সংক্রমণের জন্য যেমন অনেক ভোগান্তি হয়েছে, তেমনই হয়েছে পরিকাঠামোর অভাবে। পরিকাঠামো উন্নত করা গেলে হয়তো ততটাও ভয়ঙ্কর হবে না পরের ঢেউ, আশা বিশেষজ্ঞদের।
তবে দ্বিতীয় ঢেউয়ে এসেছে ডেল্টা প্রজাতির ভাইরাস। তা দেখে খানিক বেশি আতঙ্ক ছড়িয়েছে অনেকের মধ্যে। এই প্রজাতির ভাইরাস ছড়ানো নিয়ন্ত্রণ করা গেলে তৃতীয় ঢেউ অন্য রকম আকারও নিতে পারে বলে মত কারও কারও। বিজ্ঞানীরা এখনও নতুন প্রজাতির ভাইরাসের ক্ষতি করার ক্ষমতা বোঝার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের অনেকেরই আশা, নতুন প্রজাতির ভাইরাসটির আচরণ বোঝা গেলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে ক্ষতির পরিমাণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy