গায়ে রোদ লাগালেও মেলে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি।
গরমের দেশে ভিটামিন ডি-র অভাব হয় না
অনেকে তাই ভাবেন বটে। কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক সে রকম নয়। ত্বকে নিয়মিত নির্দিষ্ট সময় ধরে রোদ লাগলে ভিটামিন ডি তৈরি হয় ঠিকই, কিন্তু রোদ কি সব সময় পর্যাপ্ত লাগে? রোদ আছে বলেই কি আপনি রোদ পোহাতে বেরোন! নাকি ঠান্ডা ঘরে বসে থাকার অছিলা খোঁজেন? বাধ্যতামূলক ভাবে যাঁদের বেরতে হয়, তাঁরা ছাড়া রোদে রোদে কেউ ঘোরেন না। বাধ্য হয়ে বেরতে হলে শরীরের খোলা অংশে থাকে সানস্ক্রিনের পুরু আস্তরণ। চোখে রোদচশমা। মাথায় ছাতা। শীতে এক-আধটু রোদ পোহালেও ঠান্ডা ও কালো হওয়ার ভয়ে পুরো শরীরই প্রায় ঢাকা থাকে। থাকে সানস্ক্রিন। রোদ তা হলে ঢুকবে কোথা দিয়ে? নিয়ম হল, দিনে কম করে ৩০-৪০ মিনিট খোলা শরীরে রোদ লাগানো। ত্বক বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় ঘোষ বলছেন, “সারা শরীরে রোদ লাগানোর মতো পরিস্থিতি আমাদের দেশে নেই। সে ক্ষেত্রে সকাল ৭-৮টার মধ্যে খুব একটা শরীর না ঢেকে যদি খোলা জায়গায় হাঁটতে পারেন ৪০-৪৫ মিনিট, কাজ হবে। সম্ভব না হলে পা দুটো কেবল মেলে রাখুন রোদে। যখন সময় পাবেন। তার পরেও যদি সমস্যা হয়, আমাদের দেশে এখন ঘরে ঘরে ভিটামিন ডি-এর অভাব, তখন সাপ্লিমেন্ট খাবেন।”
আরও পড়ুন: দ্বাদশ দিন: আজকের যোগাভ্যাস
অভাব কেন
নানা কারণে হয়। যেমন:
• গায়ের রং ঘোর কালো হলে যতই রোদ পোহান না কেন, ত্বকে উপস্থিত মেলাটোনিনের কারণে ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি না-ও হতে পারে। বয়স্ক মানুষদের এই সমস্যা বেশি হয়।
• ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার, যেমন, তৈলাক্ত মাছ, ক্যানে ভরা টুনা, অতিরিক্ত ভিটামিন ডি মেশানো দুধ-সোয়ামিল্ক-ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল-কমলালেবুর রস, চিজ, ডিমের কুসুম, মাশরুম, কড লিভার অয়েল ইত্যাদি না খেলে বা কম খেলে সমস্যা হতে পারে। সমস্যা হয় ওজন কমানোর তাগিদে ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া একেবারে ছেড়ে দিলে। কারণ, খাবারের ভিটামিন ডি ফ্যাটে দ্রবীভূত হয়েই শরীরে ঢোকে।
• পেটের কিছু গোলমাল, যেমন, ক্রোনস ডিজিজ, সিস্টিক ফাইব্রোসিস, সিলিয়াক ডিজিজ ইত্যাদি থাকলে খাবারের ভিটামিন ডি শরীরে শোষিত হতে পারে না।
• সমস্যা হয় খুব মোটা হলেও। বিএমআই ৩০-এর উপরে উঠে গেলেই শুরু হয় ঝামেলা।
তা হলে সাপ্লিমেন্ট
“সাধারণ অবস্থায় রক্ত পরীক্ষা করে তবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।” জানালেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী। “ভিটামিন ডি-এর মাত্রা ২০ ন্যানোগ্রাম/মিলিলিটারের নীচে গেলেই সচরাচর ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু এখন যে হেতু বেশ কিছু দিন ধরে ঘরের বাইরে পা রাখছেন না, রক্ত পরীক্ষা করে দেখার সুযোগ কম, কাজেই বয়স্ক মানুষ, কোভিডের রিস্ক ফ্যাক্টর আছে, যেমন, হৃদরোগ, হাইপ্রেশার, ডায়াবিটিজ, ফুসফুসের সমস্যা, ধূমপান ইত্যাদি, ঋতুবন্ধ হয়ে গিয়েছে এমন মহিলারা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে সাপ্লিমেন্ট খাওয়া শুরু করে দিতে পারেন। ভয় নেই। রক্তে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা সহজে বিপদসীমার উপরে যায় না। উল্টো দিকে বরং বিপজ্জনক এই সংক্রমণটির আশঙ্কা এক ধাক্কায় কিছুটা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)