Advertisement
E-Paper

এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ বাড়ছে, রবিবার ছুটিতেই সুপার

জাপানি এনসেফ্যালাইটিস এবং অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রম-এ আক্রান্ত হয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অথচ রবিবার ছুটির দিনের দোহাই দিয়ে হাসপাতাল সুপার-সহ চিকিৎসকদের একাংশ গরহাজির রইলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৫ ০১:৪৪
রবিবার মেডিক্যাল কলেজের সুপারের ঘর তালাবন্ধ।—নিজস্ব চিত্র।

রবিবার মেডিক্যাল কলেজের সুপারের ঘর তালাবন্ধ।—নিজস্ব চিত্র।

জাপানি এনসেফ্যালাইটিস এবং অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রম-এ আক্রান্ত হয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অথচ রবিবার ছুটির দিনের দোহাই দিয়ে হাসপাতাল সুপার-সহ চিকিৎসকদের একাংশ গরহাজির রইলেন। জাপানি এনসেফ্যালাইটিস বা অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস পরিস্থিতিতে গত বছর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এবং দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের ছুটি বাতিল করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। অথচ এ বছর ফের জেই এবং এইএস পরিস্থিতি হানা দিলেও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার বা চিকিৎসকদের একাংশের হেলদোল নেই বলে অভিযোগ উঠেছে।

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘পরিস্থিতির উপর কর্তৃপক্ষ সব সময়ই নজর রেখেছেন। তবে সুপার সব্যসাচী দাস অসুস্থতার জন্য কলকাতায় থাকায় সমস্যা হচ্ছে। সুস্থ হলেই তাকে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসাবে নির্মল বেরা রয়েছেন। রবিবার বলেই হয়ত এ দিন তিনি আসেননি। চিকিৎসকদের একাংশ এসেছে কি না তা বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা দেখলেই বোঝা যাবে।’’

এ দিন বেলা ১২ টা পর্যন্ত হাসপাতালের সুপারের অফিস বন্ধ ছিল। পরে কিছুক্ষণের জন্য এক কর্মী দফতর খুললেও আধিকারিকরা কেউ আসেননি। বন্ধ ছিল ডেপুটি সুপারের অফিসও। এ দিকে মেডিসিন ওয়ার্ডে এইএস, জেই নিয়ে ভর্তি রোগীদের একাংশকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত চিকিৎসক দেখে যাননি বলে অভিযোগ। তাতে পরিবারের বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন। পাশাপাশি এইএস বা জেই আক্রান্তদের চিকিৎসা খরচ হাসপাতালের তরফে তথা সরকারের পক্ষে দেওয়া হবে বলে জানানো হলেও রোগীদের পরিবার অনেক ক্ষেত্রেই পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। এমনকী হাসপাতাল থেকে যে মিলবে তাই অনেকে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার নির্মল বেরা বলেন, ‘‘রবিবার ছুটি থাকায় দফতর খোলেনি। তবে ওয়ার্ডে চিকিৎসকরা ছিলেন। নিশ্চয়ই তারা দেখেছেন। জেই বা এইএস আক্রান্ত যাঁরা নিজেরাই খরচ করেছেন সে সব ফেরৎ পাবেন। এ দিন দেখা না হলেও তারা পরে দেখা করে জানালেও হবে।’’

জেই আক্রান্ত এক রোগী ধূপগুড়ির মণি বিশ্বাসকে ১৩ দিন চিকিৎসার পর এ দিন ছুটি দেওয়া হয়। চিকিৎসার খরচ নিজেরাই করেছেন।

এ দিন তাঁর স্ত্রী গঙ্গা দেবী বলেন, ‘‘এমআারই থেকে চিকিৎসার অনেক খরচ নিজেদেরেকেই করতে হয়েছে। সেই মতো ১৫ হাজার টাকার মতো খরচ করেছি। অথচ সেই টাকা হাসপাতাল থেকে মিলবে বলে কেউ জানতাম না। কেউ বলেননি।’’ এ দিন বিষয়টি জেনে হাসপাতালের সুপারের দফতরে গেলেও তা বন্ধ থাকায় ফিরে এসেছেন। খিঁচুনি জ্বর নিয়ে ভর্তি মাটিগাড়ার বাসিন্দা অপর রোগী লক্ষণ মণ্ডলের স্ত্রী ভাগ্য দেবী জানান, তাঁদের ও অধিকাংশ ওষুধ এবং পরিষেবা নিজেদের খরতে করতে হচ্ছে। এমআরআই করানো-সহ ওই সমস্ত খরচ করতে ইতিমধ্যেই অনেক টাকা খরচ করে ফেলেছেন। এমনকী প্রাইভেট ল্যাবরেটরিতে গিয়ে লক্ষণবাবুর রক্ত পরীক্ষাও করিয়ে আসতে হয়েছে বলে পরিবার সূত্রে জানানো হয়। এ দিন বেলা ১২ টা পর্যন্ত চিকিৎসকরা রোগীকে দেখতে ও যায়নি। এমনকী সকাল থেকে স্যালাইন বন্ধ হয়ে গেলে তিনি দুই বার সিস্টারকে বলেন। কিন্তু সঠিক জবাব না পেয়ে ফের জানাতে গেলে সিস্টার ধমক দেন বলে অভিযোগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, বিষয়টি তাঁরা দেখছেন। সিস্টাররা যাতে ভাল ভাবে রোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।

শনিবার রাতে জলপাইগুড়ির ফালাকাটার বাসিন্দা মঙ্গরু নায়েক (৫০) মারা যান। ওই দিন সকালেই তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল। এ দিন বাড়িভাসার বাসিন্দা সনাতন মণ্ডল-সহ অন্তত ৩ জনকে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সব মিলে খিঁচুনি জ্বর, বমি, বেহুঁশ হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ নিয়ে অন্তত ২২ জন ভর্তি রয়েছে সিসিইউ’তে এইএস এবং জেই আক্রান্ত ৬ জন রয়েছেন। তার মধ্যে ৩ জন মহিলা। জেডিয়েট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিকু)-তে জ্বর নিয়ে দউি জন শিশু ভর্তি রয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে।

Siliguri Death toll encephalitis dhupguri falakata doctor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy