• কেরাটিন ট্রিটমেন্টের সলিউশনে ফরম্যালডিহাইডের পরিমাণ দেখে নেবেন। এখন অনেক সালঁতেই জ়িরো ফরম্যালডিহাইড বা কম পরিমাণে ফরম্যালডিহাইড যুক্ত সলিউশনও ব্যবহার করা হয়।
• কেরাটিন ট্রিটমেন্ট তা শুধুই প্রোটিন ট্রিটমেন্ট। কখনও তার সঙ্গেই চুল স্ট্রেট করার উপাদানও থাকে।
• বাজারে যে কেরাটিন শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার পাওয়া যায়, তাতে সাময়িক স্মুদ এফেক্ট পাওয়া গেলেও দীর্ঘস্থায়ী নয়।
চুলের ঘনত্ব ও কী ধরনের সলিউশন ব্যবহার করা হবে, তার উপরে নির্ভর করে কতক্ষণ সময় লাগবে। সাধারণত দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। প্রথমে চুল ভাল করে ধুয়ে এই সলিউশন লাগানো হয়। আধ ঘণ্টা থেকে চল্লিশ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়, যাতে চুল এই সলিউশন অ্যাবজ়র্ব করে নিতে পারে। এ বার ব্লো-ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে নিয়ে আয়রন করা হয়। ফলে চুল স্ট্রেট ও স্মুদ দেখায়। এই প্রোটিন ট্রিটমেন্ট ব্যয়সাপেক্ষ। এর এফেক্টও দীর্ঘস্থায়ী নয়। তিন থেকে ছ’মাস পর্যন্ত চুল ভাল থাকে। তার পরে আবার চুলে এই কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করাতে হবে।
পরবর্তী যত্ন
• কেরাটিন ট্রিটমেন্টের পরে তিন দিন চুলে জল লাগাবেন না।
• শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দেখেশুনে বাছুন। কেরাটিন সেফ শ্যাম্পু, কন্ডিশনার কিনতে পারেন।
• সালফেট্স বা নুনও কেরাটিন ট্রিটেড চুলের জন্য খারাপ। তাই সালফেটমুক্ত প্রডাক্ট চুলে ব্যবহার করতে হবে।
• সুইমিং পুল বা সমুদ্রস্নানও একটু এড়িয়ে চলতে হবে।
বায়োটিন কী?
ভিটামিন বি-পরিবারের অন্তর্ভূক্ত হল এই বায়োটিন, ভিটামিন বি সেভেনও বলা যেতে পারে। ভিটামিন এইচ নামেও এর পরিচিতি। বায়োটিনের অভাবেই চুল পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বায়োটিন জলে দ্রাব্য ভিটামিন, যা চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে ও চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। তবে কেরাটিনের মতো বায়োটিনের ব্যবহার বাহ্যিক নয়। বরং বায়োটিন গ্রহণই চুলকে পুষ্টি জোগায়। আর বায়োটিনই কিন্তু শরীরের প্রয়োজনীয় কেরাটিনের গঠন উন্নত করে। তাই সঠিক পরিমাণে বায়োটিন গ্রহণ করলে চুলের কেরাটিনও ভরপুর বজায় থাকবে। যেহেতু আলাদা করে কেরাটিন গ্রহণ করা যায় না, তাই চুলের পুষ্টি জোগাতে ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে বায়োটিনে জোর দিতে পারেন।
বায়োটিন পাবেন কী ভাবে?
বিভিন্ন কারণে শরীরে বায়োটিনের অভাব তৈরি হয়। গর্ভে থাকাকালীন মায়ের সুষম আহারের অভাবে, দীর্ঘকালীন কড়া ওষুধের জন্যও বায়োটিনের অভাব হয়। তবে বায়োটিন ইনটেক বাড়ানো যেতে পারে। তার জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট নিতে হবে। তবে মনে রাখবেন, কারও কাছে শুনে যে-কোনও ডোজ়ের বায়োটিন কিন্তু খেতে শুরু করবেন না। প্রত্যেকের শারীরিক গঠন আলাদা, প্রয়োজন ভিন্ন। কিছু খাবারেও বায়োটিন পাবেন। বিশেষত বাদাম, ডাল, মাংসের মেটে, ডিমের কুসুম, চিজ়, দই, আপেল, টম্যাটো, গাজর, পালং শাক, লেটুসে প্রচুর পরিমাণে বায়োটিন থাকে। তাই রোজকার ডায়েটে এই ধরনের খাবার যোগ করতে থাকলে পর্যাপ্ত পরিমাণে বায়োটিন পেয়ে যাবেন।
শ্যাম্পু, কন্ডিশনার পাল্টে বা বিভিন্ন রকমের তেল মেখে যত না লাভ হয়, তার চেয়ে চুলের কেরাটিন ও বায়োটিনের প্রতি যত্নবান হলে লাভ বেশি। এই দুই বন্ধু চুলের সঙ্গে যদি ভাব করে নেয়, তা হলে চুল সুরক্ষিত। কেরাটিন ও বায়োটিনই চুলের দেহরক্ষী হয়ে তার সুরক্ষা সুনিশ্চিত করবে।
মডেল: হিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্তরা স্বর্ণকার, ছবি: দেবর্ষি সরকার, সুপ্রতিম চট্টোপাধ্যায় (অন্তরা), মেকআপ ও হেয়ার: অভিজিৎ পাল, লোকেশন: বিবোনি, কসবা নিউমার্কেট