নিরামিষ টিফিন আনার ‘অপরাধে’ কর্তৃপক্ষের বকা খেলেন কর্মী। ছবি: সংগৃহীত।
টিফিনে রোজ নিরামিষ স্যান্ডউইচ আনতেন। তা নিয়ে সহকর্মীদের মধ্যে ঠাট্টা-মশকরাও চলত। কিন্তু রোজ একঘেয়ে টিফিন আনার ‘অপরাধে’ যে কর্তৃপক্ষের রোষের মুখেও পড়তে হবে, বোধহয় তা কল্পনাও করেননি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী অ্যালেক্স।
নিজের ব্যাগে যতই খাবার ভর্তি কৌটো থাক, পাশে বসা সহকর্মী কী টিফিন এনেছেন, তা নিয়ে একটা কৌতূহল বেশির ভাগেরই থাকে। এ ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। অ্যালেক্স নিজে অত্যন্ত স্বাস্থ্যসচেতন। বাইরের খাবার তিনি খান না বললেই চলে। প্রতি দিনই শাকপাতা দিয়ে তৈরি স্যান্ডউইচ আনতেন তিনি। রোজ এক খাবার খেতে অ্যালেক্সের কোনও সমস্যা না হলেও, সহকর্মীরা মনে মনে যথেষ্ট বিরক্ত হতেন। কারণ দুপুরের খাবার সকলে একসঙ্গে বসেই খেতেন। ফলে একে-অপরের খাবার ভাগ করেই খাওয়া হত।
অ্যালেক্স বাইরে থেকে আনা খাবার খেতেন না ঠিকই। কিন্তু কারও টিফিনে যদি ঘরোয়া কোনও খাবার থাকত, তা হলে তিনি না করতেন না। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও অ্যালেক্সের খাবারে ভাগ বসাতে পারতেন না অন্যেরা। দু’টো সেঁকা পাউরুটির মাঝে টোম্যাটো, লেটুস পাতা দেওয়া স্বাদহীন খাবারে কামড় বসাতে মন চাইত না কারও। প্রকাশ্যে কিছু বলতে না পারলেও সকলেরই মনেই ক্ষোভ জমা হচ্ছিল।
দীর্ঘ দিন এমন চলার পর আর থাকতে না পেরে কর্তৃপক্ষকে জানান তাঁরা। অভিযোগ পেয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সেটা ভাবতে দু’দিন পার হয়ে গিয়েছিল। তিন দিনের মাথায় ডেকে পাঠানো হয় অ্যালেক্স। তাঁর কাছে রোজ এক টিফিন আনার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল। অ্যালেক্স জানিয়েছিলেন, শরীরের প্রতি খেয়াল রাখতেই নিরামিষ খাবারে ভরসা রেখেছেন তিনি। কিন্তু তাঁর যুক্তি ধোপে টেকেনি কর্তৃপক্ষের কাছে। কর্তৃপক্ষ অ্যালেক্সকে কড়া ভাষায় জানান, সামাজিকতার একটা বিষয় থাকে। সহকর্মীদের খাবারে ভাগ বসালে তাঁদেরকেও ফিরিয়ে দেওয়া নিয়মের মধ্যে পড়ে। স্বাস্থ্যকর খাবারের বহু বিকল্প আছে। রোজ এক খাবার না এনে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাবার আনার পরামর্শ দেওয়া হয় অ্যালেক্সকে। কর্তৃপক্ষের কথা রাখতে এবং সহকর্মীদের কথা ভেবে অ্যালেক্স স্যান্ডউইচের বদলে অন্য কোনও খাবার টিফিনে এনেছেন কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy