ঘটনা: ১
রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনে মেট্রো থেকে নেমেছিল প্রিয়া। পৌঁছতে হবে যাদবপুরের অফিসে। টাইমের কড়াকড়ি তো রয়েছেই, তার উপর আজ বেশ দেরিও হয়ে গিয়েছে। ভেবেছিল মেট্রো থেকে নেমেই মোবাইল অ্যাপ থেকে বুক করে নেবে ট্যাক্সি। কিন্তু মেট্রো থেকে নেমে, স্টেশনের বাইরে বেরোলেও টাওয়ার, নেট কানেকশনের দেখা নেই। হলুদ ট্যাক্সিও মুখ ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছে। বাসে উপচে পড়ছে ভিড়। কোনও মতে অ্যাপ কানেক্ট হলেও দেখা নেই ক্যাবের। উপায়?
ঘটনা: ২
কিছু দিন হল বিহানের স্মার্টফোনটা বিগড়েছে। বাড়িতে থাকা পুরনো ফোন দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। আজ ছিল বন্ধুর বিয়ে। বেশ রাত হয়ে গিয়েছে। বাস ধরে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত তো এসে গিয়েছে। কিন্তু এখান থেকে লেক টাউন ফিরবে কী ভাবে? ট্যাক্সি ধরতে গেলেই বিল হাঁকছে, যেন ট্যাক্সিওয়ালার বাবার বিয়ে। এ দিকে স্মার্টফোনটা না থাকায় ওলা, উবার বুক করারও উপায় নেই। অ্যাপগুলো আসার পর অভ্যাসটাও গেছে বিগড়ে। কেমন যেন নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে এগুলোর উপর। অগত্যা, কী ভাবে ফিরবেন বাড়ি?
এমন অভিজ্ঞতা শুধু প্রিয়া বা বিহানের নয়! মেট্রোযাত্রীদের একটা বড় অংশই এমনটার ভুক্তোভুগী। এ বার সেই সমস্যায় কিছুটা সাহায্য করতে হাত বাড়াল ওলা। শহরের ৬টি মেট্রো স্টেশনে ‘ওলা জোন’ তৈরি করেছে তারা। ‘আমার কলকাতা’ নামের এই উদ্যোগের শুরুতে পার্ক স্ট্রিট, এসপ্লানেড, রবীন্দ্র সদন, কালীঘাট, রবীন্দ্র সরোবর ও মহানায়ক উত্তম কুমরার মেট্রো স্টেশনের বাইরের পার্কিং জোনে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে ‘ওলা জোন।’ প্ল্যাটফর্মে তৈরি হয়েছে ‘ওলা কিয়স্ক’ও।
ওলা জোন-এ গিয়ে নিজের ফোনের অ্যাপ্লিকেশন থেকেই বুক করে নিতে পারবেন ক্যাব। যদি আপনার নেট কানেকশন ঠিক মতো কাজ না করে তা হলে আপনাকে সাহায্য করবে ওলা কিয়স্ক। যদি ফোনে ওলা অ্যাপ ডাউনলোড করা না থাকে, তা হলেও ওলা কিয়স্কের সাহায্য নিয়ে ক্যাব বুক করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আপনার মোবাইল নম্বর রেজিস্টার করলে সেই নম্বরেই এসে যাবে ড্রাইভারের নাম, ক্যাব নম্বর ও বিল।
আরও পড়ুন: দৃষ্টিহীনদের জন্য প্রথম ব্রেল স্মার্টওয়াচ আসছে বাজারে
৬টি মেট্রো স্টেশন দিয়ে শুরু করলেও আগামী দিনে শহরের বাকি ১৮টি স্টেশনেও এই সুবিধা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে ‘ওলা’-র। ওলার ডিরেক্টর অব অপারেশন পীযুষ শর্মা বলেছেন, ‘‘‘আমার কলকাতা’ নামে এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা শহরের পরিবহণ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছি। শুধু ওলা ক্যাব নয়, হলুদ ট্যাক্সির সঙ্গেও আমরা জুটি বেঁধে এই কাজ করব।’’
এমনিতেই বেশ কিছু দিন ধরে টিকিট বিক্রি ছাড়াও অন্য ভাবে আয় বাড়াতে মেট্রো বিভিন্ন পদক্ষেপ করার কথা ভাবছিল। তখনই ওলা কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের এই পরিষেবা দিতে এগিয়ে আসেন। মেট্রোও রাজি হয়ে গিয়ে অনুমতি দেয়। মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাত্রীদের আরও ভাল পরিষেবা দেওয়া ও মেট্রোর ভাড়া-বহির্ভূত আয় বাড়ানোই আমাদের উদ্দেশ্য।’’
তবে, মেট্রো চলাচলের সময়েই ওই পরিষেবা মিলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy