Advertisement
E-Paper

ত্রাণ শিবিরে পেটের অসুখ কালনায়

পাত পেড়ে খাওয়া চলছে। পাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছে গবাদি পশুর দল। আর এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জেরেই পেটের অসুখ দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের। জল খানিকটা কমতেই পেটের অসুখের প্রকোপ দেখা দিল কালনার নান্দাইয়ের নতুনগ্রামের ত্রাণ শিবিরে। এ যাবৎ শিবিরের মোট ১১ জন পেটের অসুখে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিবিরে বসানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের ক্যাম্প।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৫ ০২:১৫
শুরু হয়েছে স্বাস্থ্য শিবির। নিজস্ব চিত্র।

শুরু হয়েছে স্বাস্থ্য শিবির। নিজস্ব চিত্র।

পাত পেড়ে খাওয়া চলছে। পাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছে গবাদি পশুর দল। আর এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জেরেই পেটের অসুখ দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের। জল খানিকটা কমতেই পেটের অসুখের প্রকোপ দেখা দিল কালনার নান্দাইয়ের নতুনগ্রামের ত্রাণ শিবিরে। এ যাবৎ শিবিরের মোট ১১ জন পেটের অসুখে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিবিরে বসানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের ক্যাম্প।
সম্প্রতি দিন কয়েকের টানা বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়ে নান্দাইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। চালু করা হয় বেশ কয়েকটি ত্রাণ শিবির। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গেল, এই মুহূর্তে সবথেকে বড় ত্রাণ শিবিরটি রয়েছে নতুনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে এক হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নেন। তবে শনিবার থেকে শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে, সাড়ে আটশোর মতো। শিবিরে গিয়ে দেখা গেল, জল কবলিত মানুষগুলির ‘খাওয়া, বসা, ঘুম একই জায়গায়।’ স্কুলের ক্লাসঘরগুলিতে রাখা বেঞ্চের নীচেও অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন। স্কুল ভবনের সামনেই রাখা হয়েছে, গৃহপালিত পশুদের। দেখা গেল, স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ২০ জন মহিলা রান্না করছেন। পাশেই চরে বেড়াচ্ছে হাঁস, মুরগির দল। দুর্গতদের অভিযোগ, শিবিরে পর্যাপ্ত সংখ্যায় শৌচাগার না থাকায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ত্রাণ শিবিরে থাকা এক ব্যক্তির আক্ষেপ, ‘‘বাড়ি ঘর সব ডুবে রয়েছে। বিপদে না পড়লে কে আর এখানে মাথা গোঁজে।’’
শিবিরে গিয়ে জানা গেল, শুক্রবার বিকেল থেকে শুরু হয় পেটের অসুখ। ওই দিন রাতেই এক শিশু-সহ চার জনকে ভর্তি করানো হয় কালনা মহকুমা হাসপাতালে। ওই দিন রাতেই মৃত্যু হয় রানি সরেন (৬০) নামে এক বৃদ্ধার। তাঁর বাড়ি, নতুনগ্রাম বটতলা এলাকায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ত্রাণ শিবিরের খাবার খেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধা। বাড়িতেই স্যালাইনের বোতল ঝুলিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছিল ওই মহিলার। আচমকাই তাঁর মৃত্যু হয়। অন্যদিকে ত্রাণ শিবির থেকে কিছুটা দূরে হাটতলা এলাকায় বাড়ি তারক প্রামাণিক (৫৮) নামে এক ব্যক্তির। তিনিও শুক্রবার থেকে পেটের অসুখে আক্রান্ত হন। তাঁকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই মারা যান তারকবাবু।

ত্রাণ শিবিরটি খোলার পর থেকেই এটির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন, কালনা ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সেলিম সেখ। তিনি অবশ্য শিবিরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কথা মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘শিবির নিয়মিত পরিস্কার করা হয়। ছাড়ানো হয় ব্লিচিং পাউডারও। তবুও কী ভাবে পেটের অসুখ ছড়াল জানি না।’’

এ দিন কালনা ও পূর্বস্থলী এলাকার ৫টি ত্রাণ শিবির ঘুরে দেখেন জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু। নতুনগ্রামের শিবিরটি ঘুরে দেখে দেবুবাবু পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর দাওয়াই দেন। শিবিরে স্বাস্থ্য দফতরের একটি ক্যাম্পও চালু করা হয়।

বিভিন্ন ত্রাণ শিবির ঘুরে দেখা গেল, দুর্গতদের অভিযোগ, শিবিরে মানুষ ও পশুদের কাছাকাছি থাকার কারণেই পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে। তবে দেবুবাবু জানান, শিবিরে আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যাতে গবাদি পশু দূরে সরিয়ে রাখা হয়। তবে শুধুমাত্র পরামর্শে শিবিরের ছবি কতটা বদলাবে তা নিয়ে সংশয়ে দুর্গতরা।

kalna flood natungram tarak pramanik
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy