Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Anuttama Banerjee

এইচআইভিতে আক্রান্ত হওয়া মানেই কি জীবন শেষ? আলোচনায় মনোবিদ অনুত্তমা

লোকে কী বলবে! সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এ পর্বের বিষয় ‘এইচআইভি পজিটিভ’! মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই পর্বে নিজের জীবনের কাহিনি ভাগ করে নিলেন লেখক জয়দীপ জানা।

যাঁদের এডস আছে, তাঁদের কি সমাজ আজও ভাল চোখে দেখে? উত্তর দিলেন মনোবিদ।

যাঁদের এডস আছে, তাঁদের কি সমাজ আজও ভাল চোখে দেখে? উত্তর দিলেন মনোবিদ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২২ ২০:৫০
Share: Save:

‘ছুঁনেসে এডস নেহি হোতা, ছুঁনেসে তো সিরফ পেয়ার ফেহেলতা হে’, এডসের সচেতনতার জন্য শাবানা আজ়মির এই বিজ্ঞাপনের কথা হয়তো অনেকেরই মনে আছে। এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তিদের যেন আমরা অচ্ছুত না মনে করি, তার জন্যই ছিল সেই বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনটি মনে রাখলেও বিজ্ঞাপনের কথাগুলf কি আমরা আদৌ মনে রেখেছি? আজও কি আমাদের সেই বৈষম্য দূর করা সম্ভব হল? যাঁদের এডস আছে, তাঁদের কি সমাজ আজও ভাল চোখে দেখে? এই সব প্রশ্নের জবাব নিয়েই সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউবে আলোচনায় বসলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘লোকে কী বলবে! সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এ পর্বের বিষয় ছিল ‘এইচআইভি পজিটিভ’।

তবে আজ মনোবিদ একা নন, তার সঙ্গে ছিলেন লেখক জয়দীপ জানা, যিনি নিজেও এইচআইভি পজিটিভ। জয়দীপ এইচআইভি সংক্রমণের সঙ্গে ২০০৬ সাল থেকে সহবাস করছেন। যাঁরা এডসে আক্রান্ত, তাঁদের অধিকারের লড়াই লড়েন জয়দীপ। জয়দীপের জীবনের নানা গল্প এবং এইচআইভিতে আক্রান্ত আরও মানুষের জীবন সংগ্রামের কাহিনি উঠে এসেছে এই পর্বে।

সমাজের এক চিরাচরিত ধারণা যে এইচআইভি মানেই সব শেষ। এই ‘সব শেষ’কে চ্যালেঞ্জ করা কতটা মুশকিল? জয়দীব বললেন, ‘‘এইচআইভির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লোকের যৌনজীবন। তাই আমার যৌনজীবন সম্পর্কে লোকে জেনে গেলে লোকে কী বলবে এই ভাবনা থেকেই আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যায় আক্রান্ত ব্যক্তির। আর তাতেই হয় সমস্যা! কী ভাবে এই রোগ ছড়ায়, সে বিষয়ে অনেকের কমবেশি ধারণা থাকলেও নিজেদের যে এই রোগ হতে পারে, সেই সত্যিটা মানতে পারি না আমরা। কন্ডোম যে শুধু গর্ভ নিরোধক নয়, যৌনরোগের কবল থেকে রক্ষা পেতেও যে কন্ডোম ব্যবহার করা উচিত, আর সমকামীরাদেরও ব্যবহার করা উচিত, তা অনেকের কাছেই স্পষ্ট নয়। যতই এইচআইভি সচেতনতা নিয়ে আমরা কাজ করি না কেন, সচেতনতা মানুষের ভিতর থেকে না এলে কিন্তু এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করা মুশকিল। নিজেদেরও যে পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন হতে পারে, সে বিষয়ে মনের মধ্যে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে।’’

এইচআইভি নিয়ে কি সুস্থ জীবনযাপন করা যায়?

এইচআইভি নিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব। এমনই বক্তব্য জয়দীপের। এইচআইভি নিয়ে যে এত ঢাক ঢাক গুড় গুড় রব, তার কারণ হল লোকে কী বলবে এই ভয়! আর একটি কারণ হল, এই রোগের আদৌ কি চিকিৎসা আছে, সেই প্রশ্নটি। ইদানীং সরকারি ব্যবস্থায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই রোগ নির্ণয় করার পদ্ধতি ও চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা হয়। বেসরকরি খরচায় চিকিৎসা করালে প্রতি মাসে ওষুধের খরচ পরে কমপক্ষে ৩০০০ টাকা। এই রোগের ওষুধ এক বার চালু হলে কিন্তু সারা জীবন খেয়ে যেতে হবে। তাই বেসরকারি হাসপাতালের খরচ সারা জীবন বহন করতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে আগে থেকেই ধারণা রাখা ভাল। যদি আমি চিকিৎসা করাতে যাই, সেখান থেকে লোকে জেনে যাবে আমার রোগের কথা। এই ভাবনা থেকে অনেকেই লুকিয়ে রাখেন রোগটি! বিপদ বাড়ে। আপনি এইচআইভি আক্রান্ত কি না, সেই তথ্য কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় সরকারি হাসপতালে অনেক বেশি নিরাপদ!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anuttama Banerjee Loke Ki Bolbe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE