কখনও সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া, কখনও পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া। জীবনের বিভিন্ন কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে আমাদের সকলকেই যেতে হয়। ব্যর্থতা, হতাশার সঙ্গে মোকাবিলা করার সকলেরই কিছু নিজস্ব পদ্ধতি থাকে। কেউ কেউ নিজেকে আঘাত করার মধ্যে দিয়েই বেছে নেন সেই মোকাবিলার পথ। রাগ, দুঃখ, হতাশার প্রকাশ তারা করেন নিজেকে আঘাত করে। কখনও ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কেটে, কখনও বা দেওয়ালে সজোরে ঘুঁষি মেরে।
নিজেকে আঘাত করার প্রবণতা বা সেলফ হার্মিং টেন্ডেন্সি যে কোনও সময়, যে কোনও জায়গায়, যে কোনও বয়সেই দেখা দিতে পারে। অথচ, এই সমস্যা নিয়ে পরিষ্কার ধারণা বা সচেতনতার অভাব রয়েছে সব স্তরেই। তবে এই বিষয় বা সমস্যা নিয়ে তলিয়ে ভাবার সময় এ বার এসে গিয়েছে। কারণ গবেষকরা জানাচ্ছেন, যারা নিজেদের ক্ষতি করেন তারা অন্যদেরও ক্ষতি করতে পারেন। এবং নিজের ক্ষতি করার থেকে অন্যদের ক্ষতি করার সম্ভাবনা ৫ গুণ বেশি থাকে এদের মধ্যে!
সুইডেনের কারোলিনস্কা ইন্সটিটিউটের গবেষকরা এই বিষয়ে ১,৮৫০,৫২৫ জনের উপর গবেষণা চালান। ১৫ বছর বয়স থেকে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। গবেষণা চলাকালীন এদের মধ্যে ৫৫,১৮৫ জন নিজেকে আঘাত করেন, ৬৬,৬৫১ জন কোনও ভয়াবহ অপরাধে জড়িয়ে পড়েন এবং ৮,১৫৫ জনের নিজেকে আঘাতও করেন, ভয়াবহ অপরাধেও জড়িয়ে পড়েন।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, যারা জীবনের কোনও সময় নিজেকে গুরুতর আঘাত করার জন্য চিকিত্সার মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন তাদের মধ্যে পরবর্তীকালে অন্যদের ক্ষতি করার প্রবণতা ৫ গুণ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। এবং এই প্রবণতা পুরুষ, মহিলা উভয়ের মধ্যেই সমান ভাবে দেখা যায়।
কারোলিনস্কা ইন্সটিটিউটের গবেষক অ্যানা সাহলিন বলেন, যে কারণে কেউ নিজেকে আঘাত করেন, অন্যদের আঘাত করার পিছনেও সেই কারণই কাজ করে। সাধারণত রাগ, মানসিক অস্থিরতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে এ ভাবে। তাই নিজেকে আঘাত করার জন্য যখন কারও চিকিত্সা আমরা করি, তখনই অন্যদের প্রতি সে কতটা আগ্রাসী মনোভাব রাখে সেটাও পরীক্ষা করে দেখা উচিত ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। এতে ভবিষ্যতে অপরাধমূল কাজ রোখা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ঘরে থাকা বাল্ব হতে পারে আপনার উত্কণ্ঠা, অবসাদের কারণ
জামা সাইকিয়াট্রি জার্নালে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy