Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Holi Festival

দোল-স্পেশ্যাল রকমারি

দোলে বাড়িতে লেগেই থাকে অতিথি সমাগম। তাই সবার কথা মাথায় রেখে এ বার রইল কিছু দোল স্পেশ্যাল রকমারি।

রূম্পা দাস
শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৮:০৬
Share: Save:

বসন্ত মানেই যেমন দোল, তেমনই এর পরতে পরতে জড়িয়ে আছে রঙের বাহার। আর সেই রং শুধু মনেই নয়, এ বার তা লাগুক আমাদের ভুরিভোজে। একেই তো বাঙালি খাদ্যরসিক। তাই এই বসন্তে দোলের রঙে খাবার-দাবারও হয়ে উঠুক রঙিন। দোলে বাড়িতে লেগেই থাকে অতিথি সমাগম। তাই সবার কথা মাথায় রেখে এ বার রইল কিছু দোল স্পেশ্যাল রকমারি।

ভাঙ লস্যি

দোলের দিন রং মাখবেন, আর ভাঙে মজবেন না, তা কি হয়! আর সেই ভাঙের লস্যি যদি বাড়িতেই বানিয়ে নেওয়া যায়, তাহলে তার মজাই বেড়ে যায় দ্বিগুণ। তাই আর দেরি না করে চটপট বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন ভাঙ লস্যি।

২ গ্লাসের জন্য উপকরণ

সিদ্ধি— ৪ টেবিল চামচ

দুধ— ৪ কাপ

আমন্ড— ২ টেবিল চামচ

গরম মশলা গুঁড়ো— ১/৮ চা চামচ

আদা গুঁড়ো— ১/৪ চা চামচ

গোলাপ জল— ১ চা চামচ

চিনি— ১ কাপ

জল— ২কাপ

কনডেন্সড মিল্ক— ১ কাপ

প্রণালী

জল গরম করে ফুটতে থাকলে সিদ্ধি দিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিন। চাপা দিয়ে রেখে দিন মিনিট দশেক। এ বার একটি পাতলা মসলিনের কাপড়ে জলটা ভালো করে ছেঁকে নিন। অবশিষ্ট সিদ্ধি ভালো করে হাত দিয়ে চেপে চেপে বাকি থাকা রসটুকুও নিংড়ে নিন। এ বার একটি পাত্রে ওই সিদ্ধিপাতার সঙ্গে দু’চামচ গরম দুধ মিশিয়ে ভালো করে চামচ দিয়ে ফেটিয়ে নিন। দেখবেন, দুধটা ধীরে ধীরে সিদ্ধির সঙ্গে মিশে গাঢ় হয়ে এসেছে। একটি বড় পাত্রে দুধ গরম করুন। চিনি আর কনডেন্সড মিল্ক মিশিয়ে ভালো করে ফোটান। ফুটে এলে নামিয়ে আমন্ড কুচি, গরম মশলা গুঁড়ো, আদা গুঁড়ো আর গোলাপ জল মেশান। এ বার সিদ্ধি ছাঁকা জল এবং সিদ্ধি মেশানো দুধও মেশান। ভালো করে সমস্ত তরল মিশে গেলে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখুন। ভাঙ লস্যি পরিবেশ করুন একদম ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা।

ভাঙ চকোলেট

ভাঙের লস্যি তো দোলের চিরাচরিত পানীয়। কিন্তু সেই ভাঙ দিয়েই যদি বানিয়ে ফেলা যায় কিছু রকমারি ফিউশন খাবার, কেমন হয়। তাই আপানাদের জন্য রইল ভাঙ স্পেশ্যাল কিছু চকোলেট বল। রং খেলার মাঝে তাই এক ফাঁকে টুক করে খেয়েই দেখুন ভাঙ চকোলেট। এতে মজা বাড়বে বই, কমবে না!

তৈরি হবে ২৪-২৫টি মতো
উপকরণ

ওট— ১ কাপ

পিনাট বাটার— ১/২ কাপ

নারকেল কোরা— ১/২ কাপ

কোকো পাউডার— ৬ টেবিল চামচ

ভ্যানিলা এসেন্স— ১ টেবিল চামচ

মধু— ৬ টেবিল চামচ

গুঁড়ো চিনি— ৬ টেবিল চামচ

মাখন— ৬ টেবিল চামচ

সিদ্ধি— ৪ টেবিল চামচ

চকোলেট বার— ১টি (বড়)

দুধ— ১/২ কাপ

প্রণালী

প্রথমে ওট সামান্য গরম দুধে ভিজিয়ে রাখুন। সেই দুধ থেকে ওট এ বার তুলে আলাদা করে রাখুন। অন্য পাত্রে মাখনে ভাল করে সিদ্ধি মেশান। চামচ দিয়ে মিশিয়ে মাখন আর সিদ্ধি ফেটিয়ে তৈরি করুন ভাঙ-মাখন। এ বার একটি বড় কাচের বাটিতে ওট, মাখন, পিনাট বাটার, কোকো পাউডার, মধু, অর্ধেক গুঁড়ো চিনি মেশান ভাল করে। মণ্ডটি থেকে ছোট ছোট বলের আকার গড়ে নিন। চকোলেট বলগুলো ফ্রিজে আধ ঘণ্টা রাখুন। এ বার চকোলেট বারটি গ্যাস বা মাইক্রোওভেনে গলিয়ে নিন। বলগুলো ফ্রিজ থেকে বের করে প্রথমে এক বার গলানো চকোলেটে দিন। সেখান থেকে তুলে গুঁড়ো চিনি আর কুরিয়ে রাখা নারকেলে এক বার মুড়ে নিন। ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন ভাঙ চকোলেট।

(পিনাট বাটার যে কোনও বড় দোকানে পাবেন।)

পান-বাহার

পান-বাহার এমন একটি পানীয় যা একই সঙ্গে সুস্বাদু এবং শরীরও ঠাণ্ডা রাখে। এই পানীয় তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে গুলকন্দ যা নানা রোগ প্রতিকার করতেও সাহায্য করে। কম সময়ে চটজলদি বানিয়ে ফেলুন এই অভিনব পান-বাহার।

৪ জনের জন্য উপকরণ

পান পাতা— ১৫টি

দুধ— ৬ কাপ

জল— ২ কাপ

আমন্ড— ১/২ কাপ

গোলাপ জল— ৪ ফোঁটা

রোজ সিরাপ— ২ টেবিল চামচ

গুলকন্দ— ১০ চামচ

কাজুবাদাম— ২ টেবিল চামচ

পেস্তা— ২ টেবিল চামচ

গোলাপের পাপড়ি— কয়েকটি

প্রণালী

প্রথমে আমন্ড, কাজু আর পেস্তা ভাল করে বেটে রাখুন। দুধ আর জল ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিন। পান পাতা ঠাণ্ডা জলে চুবিয়ে রাখুন ঘণ্টা খানেক। এ বার মিক্সিতে পান পাতা আর সামান্য ঠাণ্ডা জল দিয়ে বেটে নিন ভাল করে। একটি বড় পাত্র নিন। তাতে ৬ কাপ ঘন ঠাণ্ডা দুধ, দু’কাপ ঠাণ্ডা জল আর বাদাম বাটা মেশান। এর পর একে একে পান পাতা বাটা, গুলকন্দ, গোলাপ জল আর রোজ সিরাপ ভাল করে মেশান। উপর থেকে গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন পান-বাহার।
(গুলকন্দ যে কোনও পানের দোকানে পাবেন। আর যদি বানিয়ে নিতে চান নিজেই, তাহলে একটা সহজ উপায় আছে। বাজার থেকে গোলাপ কিনে এনে প্রথমে ভাল করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন। পাপড়িগুলো বোঁটা থেকে আলাদা করে রাখুন। এ বার একটি বায়ু নিরোধক কাচের শিশি নিন। ওই শিশিতে প্রথমে খান দশেক গোলাপের পাপড়ি পাখুন। তার উপরে এক টেবিল চামচ চিনি ছড়িয়ে দিন। এই একই পদ্ধতি বারবার করুন। কাচের শিশিটি ভরে এলে ঢাকনা ভাল করে চেপে আটকে দিন। এক বার শিশিটি ভাল করে ঝাঁকিয়ে নিন। শিশিটি রোজ রোদে দিন। প্রত্যেক দিন এক বার করে শুকনো চামচ দিয়ে ভিতরের মিশ্রণটি নাড়িয়ে দেবেন। সূর্যের তাপ পেয়ে গোলাপের পাপড়িগুলো চিনির রসে জারিয়ে উঠবে। আর এ ভাবেই বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন গুলকন্দ। গুলকন্দ যে কোনও মুখশুদ্ধি হিসাবে, পানের সঙ্গে, ঠাণ্ডা পানীয়ে অথবা মিষ্টি তৈরিতে ব্যবহার করতে পারেন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE