সিমা গ্যালারিতে কবিতা-গানে ভীতি সংক্রান্ত চর্চায় সুজয়প্রাদ চট্টোপাধ্যায় ও সোহাগ সেন। —নিজস্ব চিত্র।
ভয়কে জয় করার কথা বলা হয়। কিন্তু ভয় নিয়ে আলোচনা হয় না। ভীতির কথা মুখে আনাও যেন ভয়ের। সে ভয়কে জয় করে একটি সন্ধ্যা দেওয়া হল তার মুখোমুখি হওয়ার জন্য। নানা প্রকারের ডরের কথা উঠে এল কথায় কথায়।
আসর বসেছিল সিমা গ্যালারিতে। আলোচনায় সোহাগ সেনের সঙ্গে ছিলেন সুজয়প্রাদ চট্টোপাধ্যায়। কত রকমের ভয় হয়, তা নিয়েই গড়ায় কথা। ভয়ের রাজনীতিও চলে আসে নানা প্রসঙ্গে। কোন ভয় ব্যক্তিগত, কোন ভয়ে ঢুকে পড়ে সামাজিকতার রাজনীতি, সে সব প্রশ্ন উঠতে থাকে কথায় কথায়। যেমন সোহাগ বলেন, ‘‘বিফলতার আতঙ্ক হল একেবারে ব্যক্তিগত একটি বিষয়।’’ তবে সামগ্রিক ভাবে যে সব ভীতি সমাজে দাপিয়ে বেড়ায়, সে সব হল আসল চিন্তার, মনে করেন সোহাগ।
কবিতা-গানে ভীতি সংক্রান্ত চর্চা এগিয়ে নিয়ে যান সুজয়। সিমা গ্যালারির মুখ্য প্রদর্শক প্রতীতি বসু সরকার জিজ্ঞাসা করেন, সমান অধিকার না পাওয়ার ভয় কাজ করেনি কখনও?
আলোচনা ঘোরে বৈষম্যের ডরের দিকে। কাজ শুরুর সময়ের নানা কথা যেমন তুলে আনেন সোহাগ, তেমন আবার ছকভাঙা সাজগোজ-আচরণ নিয়ে কটাক্ষের ভয় ও তা জয় করার প্রসঙ্গ তুলে আনেন সুজয়প্রসাদ। সময়ের সঙ্গে হয়তো খানিকটা ভয়ের কারণ ও ধরন বদলেছে। তবে ভয় নিয়ে কথা বলার অভ্যাসে খুব একটা বদল আসেনি। তা যেন থাকে আড়ালেই। এই আসর কিছুটা হলেও সেই অভ্যাসের বাইরে গিয়ে নতুন নজির গড়ল। আগামী ২৭ মার্চ সোহাগের নির্দেশনায় নতুন নাটক ‘ভীতি’-র প্রথম মঞ্চায়ন। সে নাটকের কথাও উঠে এল ডর নিয়ে আলোচনা করতে করতে। সুজয় ও সোহাগ দু’জনেই নানা কথায় মনে করালেন, অতিরিক্ত ভয় কী ভাবে মাঝেমধ্যেই মানুষকে বোকার মতো কাজ করার দিকে ঠেলে দেয়। বহু ভুল সিদ্ধান্তের মূলে থাকে ভয়। সমাজে আসলে বহু খারাপ কাজ, কুকথা, যুদ্ধ, অভদ্রতার উৎস কোনও না কোনও ভয়। কিন্তু ভয়কে জয় করতে না পারলেই সমস্যা বাড়বে। আর জয় করার জন্য তা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। সেই আলোচনার সূচনা করলেন সুজয়-সোহাগ। একে একে কণ্ঠ মেলালেন সভায় উপস্থিত অনেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy