Advertisement
০৮ মে ২০২৪

নিয়ম করে প্রতিষেধকই হাম, পক্স ঠেকানোর অন্যতম উপায়

পশ্চিমবঙ্গে শীতের শেষে দক্ষিণের হাওয়া দেওয়ার সময়ে জল বসন্তের প্রকোপ বাড়ে। প্রতিষেধক নেওয়া নেই এমন কম বয়সি শিশুরাই এই রোগের বড় শিকার। সেই রোগের নানা জটিলতা এবং মৃত্যুও হয় তাদের। প্রতিষেধক নেওয়া নেই এমন অন্তঃসত্ত্বা সংক্রমণের শিকার হতে পারেন।

সচেতনতা: পূর্ব মেদিনীপুরে প্রচার। নিজস্ব চিত্র

সচেতনতা: পূর্ব মেদিনীপুরে প্রচার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:০৫
Share: Save:

প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়েছে। শিশুদের এই প্রতিষেধক দেওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে। কিন্তু তাতেও অতি সংক্রামক রোগে প্রাণহানির আশঙ্কা এখনও পুরোপুরি দূর করা যায়নি। ২০১৭ সালে বিশ্বে ১১ লক্ষ জনের মৃত্যু হয়েছে জল বসন্তের কারণে। মৃতদের মধ্যে বেশির ভাগই পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশু। ভাইরাস ঘটিত এই রোগ থেকে তাই সাবধানে থাকা উচিত।

পশ্চিমবঙ্গে শীতের শেষে দক্ষিণের হাওয়া দেওয়ার সময়ে জল বসন্তের প্রকোপ বাড়ে। প্রতিষেধক নেওয়া নেই এমন কম বয়সি শিশুরাই এই রোগের বড় শিকার। সেই রোগের নানা জটিলতা এবং মৃত্যুও হয় তাদের। প্রতিষেধক নেওয়া নেই এমন অন্তঃসত্ত্বা সংক্রমণের শিকার হতে পারেন। অনেক সময়ে শোনা যায়, প্রতিষেধক নেওয়া সত্ত্বেও হাম বা পক্স হয় কারও কারও। এই রকম ঘটনা ঘটতে পারে বলেই জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অনেকের প্রতিষেধক নেওয়া সত্ত্বেও শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে না। তাঁরা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

কী ভাবে ছড়ায় জল বসন্ত বা হাম? সংক্রামক ব্যক্তির হাঁচি এবং কাশি থেকে ছড়ায় এই রোগ। রোগীর সংস্পর্শে এলেও অনেকে রোগের শিকার হতে পারেন। আবার রোগীর নাক বা গলা থেকে নিঃসৃত তরলের সংস্পর্শে এলেও রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জলবসন্তের ভাইরাস বাতাসে সক্রিয় থাকে অন্তত দু’ঘণ্টা। যিনি সংক্রমণের শিকার হয়েছেন তাঁর কাছ থেকে র‌্যাশ বের হওয়ার চারদিন আগেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে অন্যের মধ্যে। আবার র‌্যাশ শুকিয়ে যাওয়ার চারদিন পরেও অন্যের সংক্রমণ হতে পারে। এই রোগ ছড়িয়ে পড়লে মহামারীর আকার নিতে পারে। ঘটতে পারে মৃত্যুও। বিশেষ করে কম বয়সি, অপুষ্টির শিকার বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বিপদের কারণ হতে পারে।

হাম, জল বসন্ত রোগের লক্ষণ কী? মিজলসের প্রথম লক্ষণ হল, ধুম জ্বর। এ ছাড়াও নাক দিয়ে জল পড়া, কাশি হতে দেখা যায় রোগীদের। চোখ লাল হয়ে যাওয়া এবং চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকে। দিনকয়েকের মধ্যে র‌্যাশ বেরিয়ে যায় শরীরে। র‌্যাশ বেশি বেরোয় মুখে এবং ঘাড়ের উপরের অংশে। পাঁচ থেকে ছ’দিন পরে র‌্যাশ শুকোতে থাকে। র‌্যাশ বেরনোর পরে গড়পরতা ১৪ দিন পর্যন্ত সেগুলো সংক্রামক থাকে।

এই রোগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মৃত্যু হয় নানা শারীরিক জটিলতার কারণে। গুরুতর জটিলতা দেখা দিতে পারে পাঁচ বছরের নীচে বাচ্চাদের এবং ৩০ বছরের বেশি বয়সিদের। রোগাক্রান্তদের নানা শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। কারও দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হতে পারে, কেউ এনসেফ্যালাইটিসের আক্রান্ত হন। হতে পারে মারাত্মক ধরনের ডায়ারিয়া। আর সেই কারণে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। কারও কানে সংক্রমণ হয়। কেউ শ্বাসযন্ত্রের প্রবল সংক্রমণে ভোগেন। নিউমোনিয়া হয় কারও কারও। যে বাচ্চাদের শরীরে ভিটামিন এ-র ঘাটতি থাকে এবং যাঁরা এড্‌স আক্রান্ত তাঁদের হাম, পক্স মারাত্মক হতে পারে।

এই রোগের ভাইরাসের সেরকম নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা নেই। নানা সহায়ক চিকিৎসা রয়েছে। চোখ এবং কানের বা নিউমোনিয়ার চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। তবে শিশুদের নিয়মমাফিক প্রতিষেধক দেওয়াটা জরুরি। সেই সঙ্গে জরুরি পুষ্টির বিষয়টি খেয়াল রাখা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Measles Pox Vaccines
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE