প্রতীকী ছবি
আপনি কী জানেন ভারতের মতো দেশের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের মধ্যে ভিটামিন এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসের ঘাটতি দেখা যায়[1]। যার মধ্যে একটি বড় অংশ হচ্ছে শিশুরা। যে সময়টা তাদের বেড়ে ওঠার জন্য সঠিক সময়। আর এই সময়ে ঠিকমতো পুষ্টি না পেলে ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যজনিত প্রচুর সমস্যা দেখা যায়। তবে হ্যাঁ, শুধুমাত্র পুষ্টিকর খাদ্য খেলেই বাচ্চার সামগ্রিক বিকাশ হয় না। এমনকী এমটাও হতে পারে যে, পুষ্টিযুক্ত খাওয়ার খাওয়া সত্ত্বেও, আপনার বাচ্চা হয়তো সঠিক পুষ্টি পাচ্ছে না। যার মূল কারণ - খাদ্যের জৈব পুষ্টিগুণের অভাব।
খাদ্য থেকে যে পরিমাণ পুষ্টি শরীর গ্রহণ করে এবং ব্যবহার করতে সক্ষম হয়, তাকেই বলা হয় জৈব পুষ্টিগুণ বা বায়োঅ্যাভেইলঅ্যাবেলিটি। এই জৈব পুষ্টিগুণ বেশ কতগুলি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। তাই বাবা-মা'রা কী কী করতে পারেন বাচ্চার খাদ্যের জৈব পুষ্টিগুণ বৃদ্ধির জন্য, তার নিয়ে আলোচনা করা হল।
১. খাদ্যের রকমফের
খাদ্য থেকে সর্বোচ্চ পুষ্টিগুণ নিষ্কাশনের জন্য, রংবেরংয়ের শাক-সবজি ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন, বিভিন্ন খাদ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ থাকে। ফলে প্রতিদিন একই খাওয়ার খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলুন। আপনি আপনার বাচ্চাকে প্রাতঃরাশে রোজ একই খাওয়ার খেতে দেওয়ার বদলে, বিভন্ন ধরনের খাওয়ার মিলিয়ে মিশিয়ে দিন। আরও একটি বিষয় - পুরোপুরি বৃদ্ধি পাওয়া সবজির থেকে সদ্য বেড়ে ওঠা সবজি বা এমন সবজি যার সদ্য অঙ্কুরোদগম হয়েছে, তা ব্যবহার করুন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, একটি বয়স্ক ব্রকোলির থেকে অনেক বেশি ভিটামিন-কে পাওয়া যায়, সদ্য বেড়ে ওঠা ব্রকোলির স্প্রাউটে[2]।
২. আসল সত্যটা জানুন
রাসায়নিক মুক্ত পরিবেশে বেড়ে ওঠা সবজিই খাচ্ছেন এমনটা যেন না হয়। বরং খাদ্য থেকে সর্বাধিক পুষ্টিগুণ পাওয়ার জন্য মাটিতে প্রথাগত মিশ্রসার প্রয়োগ এবং সবজির রুট স্পেসিং-এর দিকেও নজর রাখুন। জৈবিকভাবে সুষম মাটির মধ্যে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম মতো যৌগগুলি থাকে যা গাছগুলির মূলের মাধ্যমে খাদ্যের মধ্যে প্রবেশ করে। তাই যখন আপনি জৈব এবং রাসায়নিকমুক্ত সবজি বেছে নিচ্ছেনই, তখন খেয়াল রাখুন, কৃষকরা মাটির স্বাস্থ্য বৃদ্ধির জন্য কী কী করছে।
৩. ফ্রেশ এবং লোকাল খাদ্য কিনুন
যখনই আপনি আপনার পরিবারের জন্য খাওয়ার তৈরি করছেন, নিশ্চিত করুন তা যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব খেয়ে নিতে। গাছপালা, ফল বা শাক-সবজির ক্ষেত্রে, কেটে নেওয়ার পরে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই সেই শাক-সবজি বা ফলের অন্তর্বর্তী পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। এটি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। যাকে বলা হয় রেসপিরেশন। উষ্ণ তাপমাত্রা, রুক্ষভাবে নাড়াচাড়া করা, উচ্চ মাত্রায় রেসপিরেশনের ফলে ফলমূল বা সবজি থেকে পুষ্টিগুণ দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যায়। তাই সর্বদাই সতেজ এবং স্থানীয় খাদ্য কিনুন এবং তা সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করুন।
৪. একসঙ্গে মিশিয়ে নিন
মিল্কশেক-এর মতো পানীয়ের ক্ষেত্রে ফলের টুকরো, পি-নাট বাটার, ইত্যাদি মিশিয়ে নিতে পারেন মিল্কশেকের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করতে। এর ফলে শুধুমাত্র ওই খাদ্যের স্বাদই বৃদ্ধি পায় না, সেই সঙ্গে পুষ্টিগুণও বেড়ে যায় অনেকটা। আপনি হরলিক্সও ব্যবহার করতে পারেন দুধের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধির জন্য।
৫. প্রয়োজনে অঙ্কুররোদগম করুন
চাল ও কিছু বীজের মধ্যে লেকটিনস, ফাইটেটস-এর মতো বিভিন্ন অ্যান্টি-নিউট্রিয়েন্টস উপস্থিত থাকে, যেগুলি খাদ্যের জৈব পুষ্টিগুণ কমিয়ে দেয়। সেই খাদ্যগুলিকে জলে ভিজিয়ে রাখা এবং অঙ্কুরোদগম করার ফলে এই অ্যান্টি-গ্রোথ অনুসেচকগুলি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। যা খাদ্যের মধ্যে জিঙ্ক, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি এবং ফোলেট*-এর মতো যৌগগুলির বৃদ্ধি করে, খাদ্যের জৈব পুষ্টিগুণ বাড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমিয়ে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়াতেও সাহায্য করে এই পদ্ধতি। তাই বাদাজ, বীজ, শস্য এবং বিনস খাওয়ার আগে, তা জলে ভিজিয়ে রাখলে এবং অঙ্কুরোদগম করলে, আপনার শিশু অনেক বেশি পুষ্টি পাবে।
৬. কাঁচা এবং রান্না করা খাওয়ার একসঙ্গে খান[3]
জলে ভিজিয়ে রাখলে বা রান্না করলে ভিটামিন এ, ডি, বি এবং ফোলেট-এর মতো ভিটামিনের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। আবার অন্যদিকে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়ামের মতো মিনারেলগুলির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় রান্না করলে। তাই বাচ্চাদের কাঁচা এবং রান্না করা সবজি, মিলিয়ে মিশিয়ে খেতে দেওয়া উচিৎ। যেমন, প্রাতঃরাশে, ফল এবং গাজরের স্যালাড দিলে, রাতের ডিনারে দিন রান্না করা পালং শাক। রান্না করা পালং শাক, শরীরে অনেক বেশি ক্যারোটেনয়েড শোষণ করতে সাহায্য করে।
এবার বাচ্চাকে কী কী খেতে দেবেন এবং কীভাবে তা পছন্দ করবেন তা তো হল। এর পাশাপাশি, আপনি হেলথ্ ড্রিংকসও ব্যবহার করতে পারেন। যেমন হরলিক্স। এর মধ্যে যে বিভিন্ন জৈব পুষ্টিগুণ* রয়েছে, তা সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত^।
[1] https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC2782240/
[2] https://www.livestrong.com/article/433053-broccoli-sprouts-vs-broccoli/
[3] https://www.eufic.org/en/food-today/article/nutrient-bioavailability-getting-the-most-out-of-food
ডিসক্লেইমার
হরলিক্স একটি পুষ্টিকর পানীয় যা রোজকার ডায়েটেরই একটি অঙ্গ।
^১৯৯০-২০০০-এ [Nutr 2006:22; S15-25] পরীক্ষার ভিত্তিতে এই দাবি করা হচ্ছে।
* ফোলেট, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি২, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন সি
এই নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত সম্পূর্ণভাবে লেখকের নিজস্ব মতামত এবং শিক্ষামূলক স্বার্থে প্রকাশিত। শরীর ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে উপদেশের জন্য ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy