বাঁ দিকে, আগুন লাগে এই অপারেশন থিয়েটারেই। ডান দিকে, অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রোগীদের। ছবিগুলি তুলেছেন শান্তনু হালদার।
হাসপাতালে আগুন লাগার খবর শুনে দেরি না করে চলে এসেছিলেন হাবরা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নীলিমেশ দাস, হাবরা থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়, রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য মনোজ রায়, পাশের অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার চেয়ারম্যান সমীর দত্ত। সঙ্গে ছুটে আসেন এলাকার বহু মানুষও। সকলে মিলে শুরু করেন উদ্ধার কাজ। দমকলের দু’টি ইঞ্জিনও দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। আগুন আয়ত্তে আসতে অবশ্য বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু তত ক্ষণে শুরু হয়েছে আসল দায়িত্ব পালন।
রোগীদের আতঙ্ক কমানোর তাগিদ তো ছিলই। সঙ্গে ছিল অসুস্থদের তক্ষুণি বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানোর গুরুদায়িত্ব। রোগীদের কারও হাতে ঝুলছিল স্যালাইনের বোতল। কেউ সদ্যোজাত শিশুকে কোলে নিয়ে শুরু করেছেন কান্নাকাটি। পুলিশ-প্রশাসন এবং হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরা বিভিন্ন নার্সিংহোম, হাসপাতালে কথা বলতে শুরু করেন। ঘটনা শুনে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও রোগী ভর্তি নিয়ে ফোনে কথা বলেন বিভিন্ন জায়গায়। ডেকে আনা হয় গোটা দশেক অ্যাম্বুল্যান্স। তাতেই রোগীদের পাঠানো হয় বারাসত জেলা হাসপাতাল, অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা পরিচালিত মাতৃ সেবাসদন, অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও বিভিন্ন নার্সিংহোমে। তুলনায় সুস্থ কয়েক জনকে পুলিশও গাড়িতে করে ছেড়ে দেয় অন্য হাসপাতাল পর্যন্ত। সমস্ত জায়গায় তাঁরা বিনা খরচে চিকিৎসা পাবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। যে সব রোগী হাসপাতাল চত্বরেই দাঁড়িয়ে বা শুয়ে ছিলেন, তাঁদের রাত আড়াইটের পরে ওয়ার্ডে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
হাবরা হাসপাতালে মোট চারটি ওয়ার্ড। সব জায়গা থেকেই বের করা রোগীদের। নীলিমেশবাবু, মনোজবাবুরা নিজেরাও হাত লাগান সেই কাজে। দমকল বাহিনীর কর্মীরা অপারেশন থিয়েটারের ঘরের জানালার কাচ ভেঙে জল দেওয়া শুরু করেন। হাবরা দমকল বাহিনীর স্টেশন অফিসার অমরেন্দু ঘোষ বলেন, ‘‘প্রায় আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভানো হয়েছে।”
এসি মেশিনে শর্টসার্কিট থেকেই যে বিপত্তি, তা মোটামুটি স্পষ্ট পুলিশ ও দমকলবাহিনীর কাছে। কিন্তু এই হাসপাতালে বিদ্যুৎ নিয়ে সমস্যা আছে। হাসপাতালে যে ট্রান্সফর্মারটি আছে, সেখান থেকে বাইরেও বিদ্যুৎ সংযোগ গিয়েছে। যার ফলে বেশি চাপ নিতে গিয়ে হাসপাতালের বিদ্যুৎ লাইনের ভোল্টেজ মাঝে মধ্যেই কমে-বাড়ে বলে অভিযোগ। হাসপাতালের জন্য পৃথক ট্রান্সফর্মার বসবে বলে জানান জ্যোতিপ্রিয়বাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy