জন্মের পরই রক্তপরীক্ষায় ধরা পড়েছিল এইচআইভি পজিটিভ। মায়ের এড্স রয়েছে। সে থেকেই সম্ভবত সংক্রমণ ঘটে। তার পর ছোট্ট শরীরটাতে চলে হাজারো ওষুধ-ইঞ্জেকশন-পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ব্যর্থ হননি ডাক্তাররা। তাঁদের দাবি, ৯ মাসের শিশুকন্যা “আপাতত সম্পূর্ণ এইচআইভি-মুক্ত।”
‘মিসিসিপি বয়’-এর পর এ বার ক্যালিফোর্নিয়ার ‘লং বিচ গার্ল’। চিকিৎসকদের দাবি অনুযায়ী, বিশ্বের দ্বিতীয় শিশু, যে কি না মারণ ভাইরাসটিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে।
গত কাল বস্টনের এড্স কনফারেন্সে উঠে আসে লং বিচ গার্লের সফল চিকিৎসার কথা। ঠিক এক বছর আগে মার্চ মাসের এই সম্মেলনেই চিকিৎসক ডেবরা পেরসউডের মুখে শোনা গিয়েছিল, মিসিসিপি-র শিশুটির এইআইভি-মুক্তির খবর। তার এখন তিন বছর বয়স। এক বছর হল ওষুধপত্রও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সুখবর এই যে, ভাইরাস আর ফিরে আসেনি। ডেবরা জানালেন, এ বারেও ঠিক এক পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরু হয় মেয়েটির। বাল্টিমোরের জন হপকিনস ল্যাবে চলে দীর্ঘ গবেষণা। তাতেই মিলেছে সাফল্য।
গত বছর এপ্রিল মাসে লস অ্যাঞ্জেলেসের মিলার হাসপাতালে জন্ম নেয় দ্বিতীয় শিশুটি। মিসিসিপি বয়-এর কথা তখন সংবাদপত্রের শিরোনামে। তাই তার কথা জানাই ছিল মিলারের ডাক্তারদের। দেরি না করে জন্মের ৩০ ঘণ্টা পর থেকে ওই একই উপায়ে চিকিৎসা শুরু করে দেন তাঁরা। চলে তিন রকম কড়া ওষুধ, যা সাধারণত শিশুদের দেওয়া হয় না। ওষুধ চলছে এখনও। কিন্তু বহু পরীক্ষাতেও রক্তে সংক্রমণের কোনও চিহ্ন মেলেনি। উচ্ছ্বসিত ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস’-এর এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর অ্যান্টনি এস ফৌসি। বললেন, “দ্রুত চিকিৎসা শুরু হলে যে এইচআইভি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, এটা তার দারুণ প্রমাণ!”
সুখবর রয়েছে আরও। এইচআইভি আক্রান্ত ৬০টি সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে ওই একই পদ্ধতিতে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হতে চলেছে আগামী দু’দিনের মধ্যে। প্রতি বছর গোটা বিশ্বে অন্তত আড়াই লক্ষ সদ্যোজাত শিশু এইচআইভি-তে আক্রান্ত হয়। এ বারেও যদি ডেবরা-রা সফল হন, তা হলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নয়া দিগন্ত খুলে যাবে। আশায় গবেষকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy