Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

এক সপ্তাহের মধ্যে এনসেফ্যালাইটিসে ফের মৃত্যু

ফের বাঁকুড়ায় এনসেফ্যালাইটিসের বলি হলেন এক যুবক। গত এক সপ্তাহের মধ্যে এই জেলায় ‘অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোম’-এ আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হল। মৃতের নাম আশিস মাল (৩৪)। বাঁকুড়া সদর থানার বনকাটা গ্রামে তাঁর বাড়ি। শনিবার সকালে বাঁকুড়া মেডিক্যালে তাঁর মৃত্যু হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৮
Share: Save:

ফের বাঁকুড়ায় এনসেফ্যালাইটিসের বলি হলেন এক যুবক। গত এক সপ্তাহের মধ্যে এই জেলায় ‘অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোম’-এ আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হল। মৃতের নাম আশিস মাল (৩৪)। বাঁকুড়া সদর থানার বনকাটা গ্রামে তাঁর বাড়ি। শনিবার সকালে বাঁকুড়া মেডিক্যালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের পরিবারের দাবি, শুক্রবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৌখিক ভাবে তাঁদের জানিয়েছিলেন, ওই ব্যক্তি জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ দিন ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ করেছেন, ‘অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোমে’ তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ নিয়ে এই বিভ্রান্তির জেরে মৃতের আত্মীয়েরা ক্ষুদ্ধ হয়ে হাসপাতালের সামনে অল্পক্ষণের জন্য পথঅবরোধ করেন।

এক সপ্তাহ আগে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ‘অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোম’-এ মারা যান বিষ্ণুপুরের দ্বারিকা এলাকার এক বাসিন্দা। তার আগে বিষ্ণুপুরের এক শিশুর একই রোগে মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য জানাচ্ছে, গত কয়েক বছরে এনসেফ্যালাইটিসে বাঁকুড়া জেলায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, “আমরা সচেতনতা শিবির করে, লিফলেট বিলি করে মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করছি। স্বাস্থ্যকর্মীদেরও এলাকায় নজর রাখতে বলা হয়েছে।”

আসবাবপত্রের ব্যবসায়ী আশিস জ্বর নিয়ে সোমবার বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি হন। তাঁর মামাতো ভাই তৃণমূল কর্মী অমৃত পাল জানান, গত শনিবার থেকে দাদা জ্বরে ভুগছিলেন। বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করার পর মঙ্গলবার থেকে দাদার খিঁচুনি শুরু হয়, সেই সঙ্গে মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল। হাসপাতাল সূত্রের খবর, অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে আইটিইউ-তে রেখে চিকিত্‌সা করা হচ্ছিল। লাভ হয়নি। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অমৃত-সহ মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ, “শুক্রবার আমাদের জানানো হচ্ছে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়েছে দাদা। পরের দিন ‘ডেথ সার্টিফিকেট’-এ আবার মৃত্যুর কারণ জানানো হচ্ছে, অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোম নিয়ে মারা গিয়েছে। মৃত্যুর কারণ নিয়ে এতে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।” তাঁদের প্রশ্ন, রোগ নির্ণয় করতে এত দিন সময় লাগল কেন? আগে জানা গেলে কলকাতায় বড় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিত্‌সা করানো যেত। বাঁকুড়া মেডিক্যালের সুপার পঞ্চানন কুণ্ডু-র দাবি, “মৃতের রক্তের নমুনা পরীক্ষায় জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোম-এই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই রোগীর শারীরিক লক্ষণ দেখে এনসেফ্যালাইটিস ধরে নিয়েই আমরা চিকিত্‌সা শুরু করেছিলাম। চিকিত্‌সায় কোনও রকম খামতি ছিল না।” গত শনিবার বিষ্ণুপুরের দ্বারিকা এলাকার এক যুবক বাঁকুড়া মেডিক্যালে ‘অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোম’-এ আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

এ দিকে আশিসবাবুর বাড়ির পিছনে শুয়োর চাষ করা হয় বলে তাঁর পরিবারের অভিযোগ। এ নিয়ে মৃতের পরিজনেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বাঁকুড়া সদর মহকুমা শাসক অভিজিত্‌ মুখোপাধ্যায় বনকাটা গ্রামের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ওই গ্রামে স্বাস্থ্য কর্মী পাঠিয়ে বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। মৃতের মা সন্ধ্যা মালের আক্ষেপ, “আশিসের দু’টি ছোট ছোট ছেলে রয়েছে। ওর মৃত্যুতে গোটা সংসারটাই ছারখার হয়ে গেল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

encephalities death bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE