Advertisement
০৭ মে ২০২৪

কর্মী নেই, হাসপাতালে বন্ধ এক্স-রে

টেকনিশিয়ান না থাকার কারণে গত প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগ। হাসপাতালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগটি বন্ধ থাকার ফলে প্রতিদিন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজনদের। হাসপাতালের চিকিৎসক এক্স-রে করতে বললেই ছুটতে হচ্ছে বাইরে। এর ফলে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার ঝক্কি যেমন বাড়ছে। তেমনই বাড়ছে খরচের ধাক্কাও।

কল্লোল প্রামাণিক
করিমপুর শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৪ ০২:২৩
Share: Save:

টেকনিশিয়ান না থাকার কারণে গত প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগ। হাসপাতালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগটি বন্ধ থাকার ফলে প্রতিদিন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজনদের। হাসপাতালের চিকিৎসক এক্স-রে করতে বললেই ছুটতে হচ্ছে বাইরে। এর ফলে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার ঝক্কি যেমন বাড়ছে। তেমনই বাড়ছে খরচের ধাক্কাও।

শান্তিপুরের তপন বিশ্বাস বেড়াতে এসেছিলেন হোগলবেড়িয়ার হরেকৃষ্ণপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে। বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে করিমপুর হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন। তপনবাবুর বৃদ্ধা মা বাণীবালাদেবী বলেন, “হাসপাতালে এসে শুনলাম এক্স-রে হয় না। অগত্যা ছেলেকে নিয়ে শুধু এক্স-রে করানোর জন্য বাইরে ছুটতে হল। হাসপাতালে এসেও যদি এভাবে হয়রান হতে হয় তাহলে আর হাসপাতালে আসার মানে কী হল?”

সদ্য ওই একই সমস্যায় পড়তে হয়েছে কুচাইডাঙার বছর পঞ্চাশের বাদল খানকে। পেশায় দিনমজুর ওই প্রৌঢ় পড়ে গিয়ে কোমরে চোট পেয়েছিলেন। হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে এক্স-রে করাতে বলেন। ওই প্রৌঢ় বলছেন, “আমরা গরিব মানুষ। ভাল চিকিৎসার জন্যই তো সরকারি হাসপাতালে আসি। অথচ বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে গিয়ে আড়াইশো টাকা খরচ হয়ে গেল। ওই টাকায় ওষুধ কিনব ভেবেছিলাম। কিন্তু সে আর হল কই?”

করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের উপর প্রায় সাড়ে চার লক্ষ মানুষ নির্ভর করেন। করিমপুর ২ ব্লকে নতিডাঙা ব্লক হাসপাতাল থাকলেও সেখানে এক্স-রে করানোর ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া করিমপুরের অবস্থানগত কারণের জন্যও পাশের জেলা মুর্শিদাবাদ থেকে বহু মানুষ চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালেই আসেন। রোগীর চাপ বাড়লেও সেই অনুপাতে হাসপাতালের পরিকাঠামোর কোনও উন্নতি হয়নি। তার উপরে এক্স-রে বন্ধ থাকায় নিত্যদিন হাসপাতালে এসে হয়রান হতে হচ্ছে বহু মানুষকে।

করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার রাজীব ঘোষ বলেন, “হাসপাতালের বহির্বিভাগেই দৈনিক গড়ে সাড়ে তিনশো থেকে চারশো জন রোগী আসেন। তার মধ্যে গড়ে প্রায় কুড়ি জন আসেন হাড় সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে। সেক্ষেত্রে তাঁদের সকলকেই এক্স-রে করানোর জন্য বাইরের কোথাও পাঠাতে হচ্ছে। এছাড়া আমাদেরও উপায় নেই।” সুপার বলেন, “এক্স-রে বিভাগে যে টেকনিশিয়ান ছিলেন তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর পরিবর্তে অন্য কোনও টেকনিশিয়ান দেওয়া হয়নি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরে বিষয়টি একাধিকবার জানানোও হয়েছে।”

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অধীপ ঘোষ বলেন, “জেলার সর্বত্রই টেকনিশিয়ানের অভাব রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে তাঁদের এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। নতুন কোনও টেকনিশিয়ান না পাওয়া পর্যন্ত করিমপুরে কাউকে পাঠানো সম্ভব নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kallol pramanik karimpur hospital x-ray
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE