স্বাস্থ্যকেন্দ্র এখন যে অবস্থায়। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।
চিকিৎসক আসেন সপ্তাহে মাত্র তিনদিন। বাকি দিনগুলি নার্স ও ফার্মাটিস্টদের উপরেই ভরসা করতে হয়ে রোগীদের। তাই সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশির চেয়ে বেশি কিছু হলেই ছুটতে হয় দূরের হাসপাতালে। হাতের কাছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও তার থেকে উপযুক্ত পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে দেউলপুর, গঙ্গাধরপুর, জুজারসাহা, ধূলাগড় পঞ্চায়েত এলাকার লক্ষাধিক মানুষ।
মূলত এলাকার মানুষদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য ১৯৩২ সালে দেউলপুরে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় গড়ে ওঠে। স্বাধীনতার পরে সেটিই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিণত করা হয়। শুরুতে ভাল পরিষেবা দিলেও এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বেহাল হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় বহির্বিভাগটি কোনও মতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললেও ইন্ডোর বিভাগ বহুদিন ধরে বন্ধ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে চিকিৎসা-সহায়ক প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। একই অবস্থায় চিকিৎসক, নার্সদের বসবাসের জন্য তৈরি আবাসনগুলিরও। কোনও পাহারা না থাকায় রাত নামলেই আবাসনগুলিতে বসে যায় মদ-সাট্টার আসর। শুধু তাই নয়, আবাসনগুলির আশপাশে গজিয়ে উঠেছে শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক পার্থেনিয়ামের জঙ্গল। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কয়েকটি আবাসনে আবার চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, “হাসপাতালে এমনিতেই রোগ জীবাণুর প্রকোপ বেশি। অথচ হাসপাতাল চত্বরেই চলছে শিশুদের পঠন-পাঠন। এ ভাবে বেশি দিন চললে শিশুরা যে কোনও সময় রোগাক্রান্ত হতে পারে।” স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এ্ন শোচনীয় অবস্থা সম্পর্কে পাঁচলা থানার প্রাক্তন বিধায়ক সন্তোষ দাস বলেন, “দু’তিন দশক আগেও ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত চিকিৎসকদের দেখা মিলত। সাধারণ অসুখ বিসুখ ছাড়াও প্রসূতিরা ভর্তি হত। পরে ইন্ডোর বিভাগটি পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এখন তো পরিষেবা বলতে কিছু নেই। এলাকার মানুষদের সুবিধার্থে অবিলম্বে ইন্ডোর বিভাগটি চালু হওয়া প্রয়োজন।” হাওড়া জেলার সিএমএইচও দেবাশিস রায় বলেন, “প্রয়োজনীয় কর্মীর অভাবের কারণে ইন্ডোর বিভাগটি এখনএ খোলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে দ্রুত যাতে তা চালু করা যায় সে ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy