Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চিনে ফেললেন রোগীর আত্মীয়, ধৃত ভুয়ো ডাক্তার

এলাকা বদল করে নতুন চেম্বার খুলে বসেছিলেন এক ভুয়ো মহিলা চিকিত্‌সক। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। পুরনো এক রোগীর আত্মীয় চিনতে পেরে যাওয়ায় গ্রেফতার হলেন তিনি। পুলিশের দাবি, জেরায় ওই মহিলা স্বীকার করেছেন, এমবিবিএস ডিগ্রি নেই তাঁর। পুলিশ জানায়, বছরখানেক আগে আবদুল আজিজ নামে এক ব্যক্তি তাঁর এক আত্মীয়ের চিকিত্‌সায় গাফিলতির অভিযোগ আনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল সোনি প্রসাদ নামে যাদবপুরের বাসিন্দা ওই চিকিত্‌সককে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩৬
Share: Save:

এলাকা বদল করে নতুন চেম্বার খুলে বসেছিলেন এক ভুয়ো মহিলা চিকিত্‌সক। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। পুরনো এক রোগীর আত্মীয় চিনতে পেরে যাওয়ায় গ্রেফতার হলেন তিনি। পুলিশের দাবি, জেরায় ওই মহিলা স্বীকার করেছেন, এমবিবিএস ডিগ্রি নেই তাঁর।

পুলিশ জানায়, বছরখানেক আগে আবদুল আজিজ নামে এক ব্যক্তি তাঁর এক আত্মীয়ের চিকিত্‌সায় গাফিলতির অভিযোগ আনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল সোনি প্রসাদ নামে যাদবপুরের বাসিন্দা ওই চিকিত্‌সককে। তার পরেই আজিজ জানতে পেরেছিলেন, সোনির চিকিত্‌সকের ডিগ্রি ভুয়ো। বুধবার বিকেলে বন্দর এলাকার নাদিয়াল থেকে ধরা পড়েন সোনি। বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে তাঁকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে জাল রবার স্ট্যাম্প, চিকিত্‌সকের নাম লেখা প্যাড উদ্ধার হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, বছরখানেক আগে এমবিবিএস চিকিত্‌সক পরিচয়ে রবীন্দ্রনগর থানা এলাকায় রোগী দেখা শুরু করেন সোনি। অল্প দিনেই এলাকায় পসার জমিয়ে ফেলেন। এ বছরের গোড়ায় তাঁর কাছে চিকিত্‌সার জন্য আসেন রবীন্দ্রনগর সাতঘরার বাসিন্দা বছর তেইশের যুবক ফারুখ। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে সোনি জানায়, পাইল্‌স হয়েছে ওই যুবকের। অস্ত্রোপচার করতে হবে। ফারুখের আত্মীয় আব্দুুল আজিজ পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন, স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে অস্ত্রপচারের সময়েই অপারেশন থিয়েটারে সোনির ভুলে শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে ওঠে ফারুখের। পরে সোনি নিজে তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্‌সকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

পুলিশ জেনেছে, ফারুখের মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারের তরফে সোনির বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনগর থানায় চিকিত্‌সায় গাফিলতির অভিযোগ করা হয়। তার ভিত্তিতে ওই সময়ে পুলিশ গ্রেফতার করে সোনিকে। আজিজ পুলিশকে আরও জানান, ফারুখের মৃত্যুর পরে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেন ওই চিকিত্‌সকের কোনও ডিগ্রি নেই। বর্তমানে সোনি জামিনে ছিলেন বলে জেনেছে পুলিশ। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ফারুখের মৃত্যুর পরে যে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়, তাতে এমন এক চিকিত্‌সকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া ছিল, যিনি ওই সময়ে জীবিতও ছিলেন না।

ওই এলাকার বাসিন্দারা পুলিশকে জানান, ওই ঘটনার পর থেকে সোনিকে আর এলাকায় দেখা যায়নি। এর পরে বুধবার ফের তাঁকে নাদিয়াল থানা এলাকার ১২ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি ওষুধের দোকানে ডাক্তারের চেম্বারে দেখতে পান আজিজ। স্থানীয়দের সঙ্গে তিনি ওই চিকিত্‌সককে দেখতে পেয়ে ঘিরে ধরেন। খবর পেয়ে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায় সোনিকে। পুলিশের দাবি, থানায় জেরার মুখে সোনি স্বীকার করেন, তাঁর কোনও এমবিবিএস ডিগ্রি নেই। এমনকী আদতে তিনি চিকিত্‌সকও নন। অন্য কোথাও সোনির বিরুদ্ধে এমন কোনও অভিযোগ রয়েছে কি না, খোঁজ নিয়ে দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

false doctors rabindra nagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE