Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জ্বর মোকাবিলায় প্রতি ব্লকে ক্লিনিক

কোথাও ডায়েরিয়া, কোথাও আবার জ্বর-সর্দি-কাশি পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় নানা রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলার সব ব্লকে ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজ্যের নির্দেশ মতোই জেলায় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে এই ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলা থাকবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩৬
Share: Save:

কোথাও ডায়েরিয়া, কোথাও আবার জ্বর-সর্দি-কাশি পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় নানা রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলার সব ব্লকে ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজ্যের নির্দেশ মতোই জেলায় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে এই ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলা থাকবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত। এখানে রোগীদের পরীক্ষা হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকেরা জ্বরে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শও দেবেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “জেলার সব ব্লকেই ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলা হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত এই ক্লিনিক খোলা থাকবে। যে সব এলাকায় জ্বরের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে, সেই সব এলাকায় মেডিক্যাল টিমও কাজ করছে।”

মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে আশা কর্মীরাও থাকছেন। তাঁরাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। পরিস্থিতি দেখে আশা কর্মীদেরও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে জেলায়। সোমবার গড়বেতা-১ ব্লকে আশাকর্মীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। শিবিরে প্রয়োজনীয় কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়। জানানো হয় এই পরিস্থিতিতে ঠিক কী কী করণীয়। পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় চার হাজার আশাকর্মী রয়েছেন। গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে শিশুদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজখবর রাখা, গ্রামে জ্বর, ম্যালেরিয়া, আন্ত্রিক-সহ অন্য রোগ ছড়াচ্ছে কি না দেখা, কোথাও কোনও সমস্যা নজরে এলে দ্রুত ব্লকে জানানো, প্রয়োজনে ব্লক মেডিক্যাল অফিসারকে জানানো এ সবই আশাকর্মীদের দায়িত্ব।

আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ডায়েরিয়া ছড়িয়েছে। অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। সাধারণত, দূষিত জল থেকেই এই রোগ ছড়ায়। তা ছাড়া, জমা জ্বলে মশাও জন্মায়, যা আবার বিভিন্ন মারণ জ্বরের জীবাণুর কারণ। আশাকর্মীদের প্রশিক্ষণ শিবিরে তাই এই সম্পর্কে সচেতনতা প্রচারের কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। প্রচারে বলতে হবে, ফেলে রাখা পুরনো টায়ার, ফুলের টবে, অব্যবহৃত পাত্রে যেন জল জমতে না দেওয়া হয়। কুলার এবং বাড়ির অন্য জলাধার যেমন চৌবাচ্চার জল সপ্তাহে যেন একদিন বদলানো হয়। জলের ট্যাঙ্ক এবং অনান্য বাসন যেন ঢেকে রাখা হয়। বাড়ির চারপাশ এবং নর্দমা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কথাও প্রচার করতে হবে হবে। মশার কামড় এড়াতে শরীর ঢাকা জামাকাপড় পরতে হবে, রাতে মশারি ব্যবহার করতে হবে।

গত তিন মাসে জেলায় বেশ কয়েক দফায় বৃষ্টি হয়েছে। কিছু এলাকা জলমগ্নও হয়ে পড়ে। দেখা গিয়েছে, বৃষ্টির পরপরই জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। সোমবার থেকে আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে, জ্বরের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি দেখে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচার শুরু করেছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকায় গিয়ে জানাচ্ছেন, জ্বর কোন কোন রোগের উপসর্গ, ম্যালেরিয়া-ডেঙ্গি-এনসেফ্যালাইটিসের মতো অসুখ ঠেকাতে কী কী সাবধানতা নেওয়া প্রয়োজন। জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, “যে সব এলাকায় জ্বরের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে, সেই সব এলাকায় মেডিক্যাল টিম যাচ্ছে। আক্রান্তদের রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে জেলা থেকেও মেডিক্যাল টিম পাঠানো হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

medinipur fever diarrhoea clinik
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE