Advertisement
১৯ মে ২০২৪

ডেঙ্গি কমেছে, ঘোষণার পরেও মিলল এডিস লার্ভা

হাওড়া পুরসভা যা পারল না, তা করে দেখাল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। হাওড়া পুরসভার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে যেখানে গত অক্টোবর মাসে সাত জন বাসিন্দার রক্তে ডেঙ্গির জীবাণুু মিলেছিল, সেই জায়গা থেকেই প্রায় এক মাস পরে ডেঙ্গির বাহক এডিস মশার লার্ভা ও পূর্ণবয়স্ক মশা উদ্ধার করলেন স্বাস্থ্য দফতরের চিকিত্‌সক ও কর্মীরা। সেগুলি তাঁরাই মেরে ফেলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৪ ০২:২২
Share: Save:

হাওড়া পুরসভা যা পারল না, তা করে দেখাল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।

হাওড়া পুরসভার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে যেখানে গত অক্টোবর মাসে সাত জন বাসিন্দার রক্তে ডেঙ্গির জীবাণুু মিলেছিল, সেই জায়গা থেকেই প্রায় এক মাস পরে ডেঙ্গির বাহক এডিস মশার লার্ভা ও পূর্ণবয়স্ক মশা উদ্ধার করলেন স্বাস্থ্য দফতরের চিকিত্‌সক ও কর্মীরা। সেগুলি তাঁরাই মেরে ফেলেন।

আর এই ঘটনা কার্যত প্রমাণ করে দিল প্রথমত, হাওড়া পুর এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ কমেনি। দ্বিতীয়ত, ডেঙ্গিতে তিন জনের মৃত্যু হওয়ার পরে রোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা যে ঘোষণা করেছিল, তা ঢক্কানিনাদ ছাড়া কিছুই নয়। কারণ, বুধবারও বিভিন্ন ওয়ার্ডে নতুন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। খোদ পুলিশের পদস্থ অফিসারেরা এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। গোলাবাড়ি থানা ও ট্রাফিক গার্ডের ৬ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

হাওড়ায় ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে, এই অভিযোগ পেয়ে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিত্‌সক পবিত্র সাহার নেতৃত্বে এক বিশেষ দল এ দিন ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসে। দলে ছিলেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরাও। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা দেবাশিস রায় বলেন, “কয়েকটি এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে এ কথা ঠিক। সেগুলি মেরে ফেলা হয়েছে। তবে এই রোগের প্রকোপ আগের চেয়ে অনেকটা কমেছে বলে মনে হচ্ছে।”

হাওড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার ঘটনাকে প্রথমে এড়িয়ে গেলেও তিন জনের মৃত্যুর পরে নড়ে বসে পুরসভা। ঠিক হয়, ১৯০০ স্বাস্থ্যকর্মী পুরসভার ৫০টি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সচেতনতা বাড়াবেন। জমা জল বা মশার লার্ভা থাকলে তাঁরাই বিনষ্ট করবেন। অলিগলিতে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করা হবে। যে সব ওয়ার্ডে অজানা জ্বর হচ্ছে, সেখানে ফিভার ক্লিনিক খোলা হবে। সর্বোপরি, পুরসভায় ডেঙ্গি মোকাবিলায় একটি বিশেষ সেল ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। ওই সেলের কাজ হবে ডেঙ্গি আক্রান্ত এলাকার সব তথ্য তৈরি রাখা।

কিন্তু তার পরেও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দল এক দিনের জন্য এসে হাতেনাতে এডিস মশার লার্ভা পেলেন কী করে? বিশেষ করে যে ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি?

হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, “ডেঙ্গি যাতে ছড়াতে না পারে, সে জন্য আমাদের ১৯০০ জন কর্মী সর্বক্ষণ নজরদারি চালাচ্ছেন। তার পরেও কী ভাবে এটা হল বুঝতে পারছি না। তবে এই রোগ রুখতে সাধারণ মানুষের মধ্যেও সচেতনতা বাড়াতে হবে।”

মেয়রের দাবি, যে ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে সেখানে ডেঙ্গির প্রকোপ আগের থেকে কমেছে। গোলাবাড়ি থানার ৬ জন পুলিশ অফিসার ও কর্মীর ডেঙ্গি হওয়া প্রসঙ্গে মেয়রের বক্তব্য, পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পেরেছেন ওই থানায় বহু বছরের বাজেয়াপ্ত করা জিনিস রয়েছে। তাতে জল জমে থেকে ডেঙ্গির মশা জন্মাচ্ছে। মেয়র জানান, ওই জায়গায় মশা মারার ওষুধ স্প্রে করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dengue howrah aedes aegypty larva
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE