Advertisement
E-Paper

প্রতিষেধক অমিল, মাস্কের মান নিয়েও ক্ষুব্ধ ডাক্তাররা

জীবাণু শনাক্তকরণ-পরিকাঠামোর হাল করুণ ছিলই। এ বার অভিযোগ, সোয়াইন ফ্লু মোকাবিলায় যাঁরা কাজ করবেন, সেই চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্যও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারছে না। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্তদের চিকিৎসা করার সময় তাঁদের নিম্নমানের মাস্ক পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। তাঁদের আরও প্রশ্ন, যেখানে অন্য বহু রাজ্যই সময় থাকতে সোয়াইন ফ্লু-র প্রতিষেধক কিনে রেখেছিল, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ তৎপরতা দেখায়নি কেন?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৪২

জীবাণু শনাক্তকরণ-পরিকাঠামোর হাল করুণ ছিলই। এ বার অভিযোগ, সোয়াইন ফ্লু মোকাবিলায় যাঁরা কাজ করবেন, সেই চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্যও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারছে না।

চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্তদের চিকিৎসা করার সময় তাঁদের নিম্নমানের মাস্ক পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। তাঁদের আরও প্রশ্ন, যেখানে অন্য বহু রাজ্যই সময় থাকতে সোয়াইন ফ্লু-র প্রতিষেধক কিনে রেখেছিল, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ তৎপরতা দেখায়নি কেন? বর্তমানে খোলা বাজারে প্রতিষেধকের ব্যাপক আকাল। তার উপর নিম্ন মানের মাস্ক ব্যবহারের চাপ। সব মিলিয়ে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিভ্রান্তি বাড়ছেই। ক্ষুণ্ণ হচ্ছে মনোবল।

রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে কোনও অভিযোগই মানেননি। তাঁর যুক্তি, “প্রতিষেধকের কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সে জন্য কেন্দ্রীয় সরকারও এখনও পর্যন্ত প্রতিষেধকের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেনি। যদি সেটা করে, তা হলে তৎক্ষণাৎ পশ্চিমবঙ্গ প্রতিষেধক কিনবে। তার আগে নয়।” নিম্নমানের মাস্ক ব্যবহার নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, “কোনও এন-৯৫ মাস্ক খারাপ হয়নি। শুধু দড়িগুলো নষ্ট হয়েছে। নতুন দড়ি লাগিয়ে ওগুলি ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। মাস্কের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসলে কাজ না করার ছুতো খুঁজছেন অনেকে।”

সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্তদের চিকিৎসার সময় চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের ‘এন-৯৫’ মাস্ক লাগানোর কথা। ২০০৯-এ এই রকম প্রায় ৬-৭ হাজার মাস্ক দিল্লি থেকে সরবরাহ করা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলি এত দিন ভাঁড়ারেই পড়েছিল। সম্প্রতি ওই মাস্ক যখন হাসপাতালগুলিতে পাঠানো হয় তখন চিকিৎসকেরা অভিযোগ করেছিলেন, মাস্কগুলি খুলে পড়ে যাচ্ছে। ফলে সেগুলি ব্যবহার করা যাবে না। সেই চাপের মুখে বি সি রায় শিশু হাসপাতাল বা আই ডি হাসপাতালকে বাজার থেকে মাস্ক কেনার অনুমতিও দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু দু’দিন না কাটতেই ফের ভোলবদল। যে মাস্কের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, সেই মাস্কই ব্যবহার করতে হবে বলে শনিবার স্বাস্থ্য দফতর থেকে মৌখিক ফরমান জারি করা হয়েছে।

কেন ওই মাস্কগুলি এখন ব্যবহার করতে বাধ্য করা হচ্ছে? স্বাস্থ্যভবনের একাধিক কর্তার যুক্তি, “কয়েক হাজার মাস্ক ফেলে দিলে জনস্বাস্থ্য বিভাগকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে বলে ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না।”

আর প্রতিষেধক? চিকিৎসকদের মনোবল অটুট রাখতে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল এবং বি সি রায় শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেরাই প্রতিষেধক কিনতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু আইডি মোটে ৫০টি প্রতিষেধক পেয়েছে। বি সি রায় একটিও পায়নি। প্রস্তুতকারী সংস্থা জানিয়েছিল, গোটা দেশেই প্রতিষেধক মিলছে না। হাসপাতালগুলি এর পরই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে যোগাযোগ করে। সেখান থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিষেধক দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা সরকারের নেই।

এ দিকে, রাজ্যে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। শনিবার আরও ৫ জনের দেহে সোয়াইন ফ্লুয়ের ভাইরাস মিলেছে। ফলে আক্রান্তের মোট সংখ্যা হয়েছে ৬৩। এদের মধ্যে দু’জন শিশু চিত্তরঞ্জন শিশুসদনে ভর্তি। যাদের এক জনের বয়স ২ মাস। সে কলকাতার ভূকৈলাশ রোডের বাসিন্দা। অন্য শিশুর বাড়ি বালিগঞ্জে। বয়স ৬ বছর। বাকি তিন প্রাপ্তবয়স্ক রোগী কলকাতার নানা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। এঁদের মধ্যে এক জন হুগলির বাসিন্দা, বাকি ২ জন কলকাতার। বি সি রায় শিশু হাসপাতালে আপাতত যে ৭ জন সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত শিশু ভর্তি রয়েছে, তাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে খবর।

microbe not available antidote swain flu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy