Advertisement
০৪ মে ২০২৪

ফের সোয়াইন ফ্লু-র জীবাণু মিলল দুই ছাত্রছাত্রীর দেহে

সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত ধূপগুড়ির বাসিন্দা সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সুস্থ আছে। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৭২ ঘণ্টায় জ্বর আসেনি তার। ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এনটেরিক ডিজিস-এর’ পাঠানো রোগীর গলার কফ এবং সংক্রমিত জায়গার রসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট থেকে জানা যায় ছাত্রটি সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত। শুক্রবার ওই রিপোর্ট জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের হাতে পৌঁছয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৫ ০২:২০
Share: Save:

সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত ধূপগুড়ির বাসিন্দা সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সুস্থ আছে। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৭২ ঘণ্টায় জ্বর আসেনি তার।

‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এনটেরিক ডিজিস-এর’ পাঠানো রোগীর গলার কফ এবং সংক্রমিত জায়গার রসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট থেকে জানা যায় ছাত্রটি সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত। শুক্রবার ওই রিপোর্ট জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের হাতে পৌঁছয়। সোয়াইন ফ্লু সংক্রমণের ঘটনা সামনে আসতে জেলা জুড়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ মেনে ছাত্রটির চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা। তিনি বলেন, “সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত ছাত্রটি সুস্থ আছে। গত ৭২ ঘণ্টায় জ্বর আসেনি। সে বাড়িতে যেতে চাইছে। কিন্তু সাবধানতার কারণে এখনই ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”

প্রথাগত চিকিৎসায় জ্বর কমছে না দেখে সোয়াইন ফ্লু সন্দেহে ওই ছাত্রকে গত সোমবার রাতে ধূপগুড়ি হাসপাতাল থেকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। শুরু থেকে সদর হাসপাতালের চিকিসকরা ‘আইসোলেশন ওয়ার্ডে’ রেখে বারো বছরের বালকের চিকিৎসা শুরু করেন। পাশাপাশি রোগ নির্ণয়ের জন্য গত মঙ্গলবার রোগীর গলার কফ এবং সংক্রমিত জায়গার রসের নমুনা (সোয়াব) সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই সাধারণ ইনফুয়েঞ্জার ওষুধ বন্ধ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘গাইড লাইন’ মেনে ছাত্রটি চিকিৎসা শুরু হয়।

শিলিগুড়ির ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক বালিকার দেহেও সোয়াইন ফ্লুর জীবাণু মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। শহরের একটি নার্সিংহোমে তাঁর চিকিৎসা চলছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরেই ওই বালিকা ভর্তি হয়েছে। বয়স ৭ বছর। তাঁর গলার লালা পরীক্ষার জন্য নাইসেডে পাঠানো হয়েছিল। পরীক্ষার রিপোর্টে জানা গিয়েছে ওই বালিকা সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস অবশ্য এ সব নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

এদিকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে শনিবার জলপাইগুড়ি হাসপাতালের ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট’ থেকে সাতজন রোগীকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে একটি ঘরে সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়। দু’সপ্তাহ আগে রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরে সতর্কতা হিসেবে ওয়ার্ড ফাঁকা করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি আতঙ্ক এড়াতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে এদিনও সোয়াইন ফ্লু নিয়ে গুজব না ছড়ানো এবং আক্রান্ত রোগীর নাম পরিচয় গোপন রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা জানান, ওই রোগের জীবাণু বাতাসে ভেসে অন্যজনকে সংক্রমিত করে। বিপদ এড়াতে ভিড় থেকে দূরে থাকা, হাঁচি-কাশির সময় রুমাল ব্যবহার করা, খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, প্রচুর পরিমাণ জল এবং সাধ্যমতো পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “আতঙ্কের কিছু নেই। অনেকের ভুল ধারণা আছে শুয়োর থেকে রোগ ছড়ায়। আসলে রোগটি ছোঁয়াচে। তাই সচেতন থাকতে হবে।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়িতে ঘুরে সমীক্ষার কাজ করছেন। কোথাও জ্বরে আক্রান্ত রোগী থাকলে খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিন দুপুর নাগাদ ধূপগুড়িতে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক, আশা কর্মী এবং পুরসভার কাউন্সিলারদের নিয়ে সভা করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি নূরজাহান বেগম। তিনি বলেন, “সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্ত ছাত্র ধূপগুড়ির বাসিন্দা। তাই সচেতনতা বাড়ানোয় জোর দেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

swine flu jalpaiguri students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE