Advertisement
E-Paper

বেনিয়মে অভিযুক্ত নার্সিংহোমে হানা

মহকুমার একাধিক বেসরকারি নার্সিংহোম ‘ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড এস্ট্যাবলিস্টমেন্ট’ আইনে নির্দেশিত বিধি মানছে নাএই অভিযোগে অভিযান চালাতে গিয়ে শনিবার জেলাশাসককে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে বলে জানাল জেলা প্রশাসন। বিধি না মানা ওই নার্সিংহোমগুলি চিহ্নিতও করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে আচমকা অভিযানও শুরু করেছেন বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৫৬
বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। নিজস্ব চিত্র।

বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। নিজস্ব চিত্র।

মহকুমার একাধিক বেসরকারি নার্সিংহোম ‘ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড এস্ট্যাবলিস্টমেন্ট’ আইনে নির্দেশিত বিধি মানছে নাএই অভিযোগে অভিযান চালাতে গিয়ে শনিবার জেলাশাসককে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে বলে জানাল জেলা প্রশাসন।

বিধি না মানা ওই নার্সিংহোমগুলি চিহ্নিতও করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে আচমকা অভিযানও শুরু করেছেন বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। আসানসোলের দু’টি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে অভিযোগ, শনিবার আসানসোলের এসবি গড়াই রোডের উপরে থাকা একটি নার্সিংহোমে অভিযান চালানোর সময় হুমকির মুখে পড়েন জেলাশাসক। এমনকী তাঁকে কর্তব্য পালনেও বাধা দেওয়া হয়। আসানসোল দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরে ওই নার্সিংহোমের এক চিকিৎসক-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রবিবার দু’জনই জামিনে ছাড়া পান।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল মহকুমার একাধিক নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়েছে জেলাশাসকের কাছে। মূল অভিযোগ, নার্সিংহোমগুলি নির্দিষ্ট কোনও বিধি না মেনে ব্যবসা করছে। প্রশাসনিক কর্তারা জানান, ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড এস্ট্যাবলিস্টমেন্ট আইনে নির্ধারিত বিধি মেনেই নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজনদের পরিষেবা দিতে হবে। কিন্তু বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন জানান, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত যেমন কালনা, কাটোয়া, মেমারি-সহ অনেক জায়গাতেই অনিয়ম চলছে। ওইসব জায়গায় অভিযান চালিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, “আসানসোল থেকেও বহু অভিযোগ পেয়েছি।” নার্সিংহোমগুলি ঘুরেও জানা গেল, রোগী ভর্তি করার সময় নার্সিংহোম কর্তারা প্রচুর প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু পরে আর পরিষেবা মেলে না।

শুধু তাই নয়, এমনও অভিযোগ যে শহরের প্রত্যন্ত এলাকায় উপযুক্ত প্রশাসনিক অনুমতির বদলে শুধুমাত্র পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই অনেকে নার্সিংহোম চালাচ্ছেন। ওই নার্সিংহোমগুলিতে ঠিক কী ধরনের বিধি মানা হচ্ছে না জানতে চাওয়া হলে জেলাশাসক জানান, অনেক জায়গায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। এমনকী ২৪ ঘন্টার চিকিৎসক, প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী, নার্স নেই, নেই রোগ নির্ণয় কেন্দ্রও। কোথাও আবার এগুলো থাকলেও দেখা মেলে নি প্রশিক্ষিত কারিগরী কর্মীর। ওষুধের দোকান থাকলেও ফার্মাসিষ্ট নেই। সৌমিত্র মোহন বলেন, “রোগীদের স্বার্থে অভিযান আরও জোরদার করা হবে।’’

নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে জেলাশাসকের অভিযান প্রসঙ্গে চিকিৎসক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের আসানসোল শাখার সহ সভাপতি সৈকত বসু বলেন, “রোগীদের স্বার্থই আমাদের কাছে প্রধান। নিয়ম মেনেই নার্সিংহোম চালানো উচিত। তবে এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে তা জানি না। খোঁজ নেওয়া হবে।’’ তৃণমূল অনুমোদিত চিকিৎসক সংগঠন, প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা ললিত রায় বলেন, “নার্সিংহোমগুলোতে অন্যায় কাজ যাতে না হয় সেটা অবশ্যই দেখতে হবে। বিধি-ব্যবস্থাও মেনে চলা উচিত। তবে এটাও ঠিক বড় নার্সিংহোমগুলির পক্ষে যতটা বিধি মানা সম্ভব ছোট নার্সিহোমগুলির পক্ষে ততটা সম্ভব নয়। জেলা প্রশাসনকে সেটাও দেখতে হবে।’’ সিপিএম অনুমোদিত সংগঠন অ্যাসোসিয়েশনের অব হেলথ ডক্টর্সের নেতা ইন্দ্রজিৎ মোহন্ত যদিও বলেন, “যদি কোনও নিয়ম থাকে এবং সেটা দেখার দায়িত্ব যাঁদের তাঁরা তা দেখবেন সেটাই বাঞ্ছনীয়।’’

এ দিকে বিভিন্ন মহল থেকে আরও দাবি উঠছে, শহরের একাধিক রোগ নিণর্র্য় কেন্দ্রও সঠিক নিয়ম না মেনে ব্যবসা চালাচ্ছে। এগুলির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

illegal nursinghome asasnsol
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy