দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে শুরু হতে চলেছে আন্দুলের লক্ষ্মীকমল হাসপাতালের সংস্কার কাজ। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর বিষয়ে প্রস্তাব প্রাথমিক অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। এখন শুধু কাজ শুরুর অপেক্ষা।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেন, “হাসপাতালটি সংস্কারের জন্য কয়েক কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন থেকে ইতিবাচক সাড়াও মিলেছে। আমরা চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছি।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, নতুন রূপের লক্ষ্মীকমল হাসপাতালে থাকবে অন্তর্বিভাগ, অপারেশন থিয়েটার ও লেবার রুম।
ডোমজুড় ব্লকের অর্ন্তগত মহিয়াড়ি ১ পঞ্চায়েতের অর্ন্তগত প্রায় দু’বিঘা জমির উপর তৈরি এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির অবস্থা বর্তমানে খুূবই খারাপ। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে রয়েছেন এক জন চিকিত্সক, দু’জন নার্স ও এক জন স্বাস্থ্যকর্মী ও ২ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। বর্তমানে এখানে শুধু প্রাথমিক চিকিত্সাটুকু পাওয়া যায়। তবে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রোগী আসেন না। যদিও প্রায় পরিত্যক্ত এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি এক সময় জমজমাট ছিল। মহিয়াড়ি ১ ও ২ পঞ্চায়েত, হাওড়া পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশ ও আন্দুল পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। এখন সমস্যায় পড়লে এই এলাকাগুলির নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র মানুষকে ছুটতে হয় ডোমজুড় গ্রামীণ হাসপাতাল কিংবা উলুবেড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। যাতায়াতে সময় ও খরচ লাগে অনেক বেশি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে এই হাসপাতালে ১০ শয্যার অর্ন্তবিভাগ, অপারেশন থিয়েটার, মহিলা ও প্রসূতি বিভাগ, চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার আবাসন ছিল। সেই আবাসনটি বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রায় এক দশক আগে অর্ন্তবিভাগটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধীরে ধীরে জীর্ণ হতে শুরু করে হাসপাতাল। এখন অন্ধকার নামলে এই বাড়িটিতে ঢুকলে বোঝাই মুশকিল যে সরকারি নথিতে এটি একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির সংস্কারের দাবি তুলে ২০১৩ সালে চিকিত্সক, শিক্ষাবিদ, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গণ কনভেনশন করা হয়। তৈরি হয় লক্ষ্মীকমল হাসপাতাল কল্যাণ সমিতি। এই সংগঠন প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে লক্ষ্মীকমল হাসপাতাল সংস্কারের জন্য দরবার করতে শুরু করে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়। এর পর রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে ওই হাসপাতালের পুনরুজ্জীবন প্রকল্প পাঠাতে বলা হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে কয়েক কোটি টাকার প্রকল্প পাঠানো হয়।
হাসপাতাল কল্যাণ সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ও ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সজল ঘোষের (বীরু) দাবি, রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দফতরকে এই হাসপাতালের সংস্কার কাজ দ্রুত শুরু করতে অনুরোধ করেছেন। স্বাস্থ্য দফতর থেকেও ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “যে এলাকায় ওই হাসপাতালটি অবস্থিত তার অনেকটাই আমার বিধানসভা এলাকার মধ্যে অবস্থিত। সব ঠিকঠাক থাকলে নতুন বছরের শুরুতেই কাজ শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy