Advertisement
E-Paper

রোগী দেখতে অস্বীকার করায় চিকিৎসককে চড়

রাতে রোগী দেখতে অস্বীকার করায় বাড়িতে ঢুকে চিকিৎসকে চড় মারার অভিযোগ উঠল আলিপুরদুয়ারের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। সোমবার রাতে জেলা হাসপাতাল লাগোয়া এলাকার ওই ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদে আপাতত শহরে ‘প্রাইভেট প্র্যাকটিস’ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসক সংগঠন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৩

রাতে রোগী দেখতে অস্বীকার করায় বাড়িতে ঢুকে চিকিৎসকে চড় মারার অভিযোগ উঠল আলিপুরদুয়ারের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। সোমবার রাতে জেলা হাসপাতাল লাগোয়া এলাকার ওই ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদে আপাতত শহরে ‘প্রাইভেট প্র্যাকটিস’ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসক সংগঠন।

পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে আলিপুরদুয়ার জংশন এলাকার বাসিন্দা ঠিকাদার অলোক রায়ের ছ’বছরের নাতি বাড়ির সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে চোট পায়। তিনি রাত সওয়া ১০টা নাগাদ চিকিৎসক প্রলয় পণ্ডিতের বাড়িতে যান। ঘটনার সময় অলোকবাবু চিকিৎসকের ভাড়া বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনতলায় তাঁর পুত্রবধূ সুদীপ্তা রায়, তাঁদের এক পরিচিত লিটন চক্রবর্তী যান। সেই সময় চিকিৎসক তাঁদের জানান, তাঁর মেয়ে অসুস্থ। চিকিৎসক অলোক বাবুর নাতিকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কথা কাটাকাটি হতেই লিটন চিকিৎসকে চড় মারেন বলে অভিযোগ। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “চিকিৎসকের অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত লিটন চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করা হয়েছে।” ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের আলিপুরদুয়ার শাখার সভাপতি চিকিৎসক সজল ভট্টাচার্য বলেন, “আলিপুরদুয়ারে চিকিৎসক হেনস্থার ঘটনা ঘটছে বার বার। এবার চিকিৎসকের বাড়িতে ঢুকে চড় মারার ঘটনা ঘটল। এতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আমরা ঘটনার জেরে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

চিকিৎসক প্রলয় পণ্ডিতও বলেন, “সোমবার আমি রাত দশটা নাগাদ বাড়িতে ঢুকি। সেই সময় এক অপরিচিত ব্যক্তি ফোন করে জানান, তিনি এক রোগীকে নিয়ে বাড়িতে আসবেন। আমি তাঁদের জানাই, আমার মেয়ের খুব জ্বর। তাঁরা যেন হাসপাতালে যান। কিছুক্ষণ পরে দরজায় শব্দ শুনে খুলে দেখি একটি শিশুকে নিয়ে কয়েকজন দাঁড়িয়ে রয়েছেন। আমি তাঁদের হাসপাতালে যেতে বলি। দু-এক বার কথা বলার পর ওই যুবক আচমকাই আমার পরিবারের সামনে আমাকে চড় মারে তাতে চশমায় আচড় লেগে চোখের পাশের কিছু অংশ কেটে যায়। পরে তারা আমাকে শাসাতে থাকে ‘দেখে নেবে’ বলে। আমার স্ত্রী বাধা দিতে গেলে তাঁকেও হেনস্থা করা হয়।” অভিযুক্ত লিটনবাবু পাল্টা অভিযোগ করেছেন, “চিকিৎসক ওই শিশুটিকে না দেখে উল্টে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেন এবং অলোকবাবু পুত্রবধূ সুদীপ্তার গায়ে হাত দেন।”

এই ঘটনার আড়ালে রাজনীতি রয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “যাঁরা চিকিৎসকের উপরে হামলা করেছে তারা কংগ্রেসের সমর্থক। বিষয়টি নিয়ে আমরা তীব্র নিন্দা করছি। পুলিশের উচিত আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া।” এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি বিশ্বরঞ্জন সরকার বলেন, “ঘটনার পর তৃণমূলের নেতারাও সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন। তা হলে কি তৃণমূল এতে জড়িত? বিষয়টি তা নয়। ঘটনায় রাজনৈতিক কোনও ছাপ নেই। অলোকবাবু তাঁর নাতিকে দেখাতে গিয়েছিলেন। সেই সময় এই ঘটনাটি ঘটে।” তাঁর বক্তব্য, “চিকিৎসকদের আরও সহনশীল হওয়া উচিত। কেন সাধারণ মানুষ চিকিৎসকদের প্রতি এ ধরণের আচরণ করছে তা নিয়েও ভাবা দরকার।” আলিপুরদুয়ারের স্বেচ্ছা সেবী সংগঠন অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক ল্যারি বসু বলেন, “চিকিৎসকদের গায়ে হাত দেওয়া নিন্দনীয় ঘটনা।”

alipurduar slap private practice doctor patient
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy