Advertisement
১১ মে ২০২৪
মেদিনীপুর হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল

রুগন্‌ স্বাস্থ্য দেখে মন্ত্রীর মন্তব্য, ‘সবই যে বাকি’

মেডিক্যালের স্বাস্থ্যই রুগন্‌। পরিকাঠামোর অভাবই যে মেদিনীপুরের হোমিওপ্যাথি মেডিক্যালের প্রধান ‘অসুখ’, পরিদর্শন শেষে তা বুঝতে অসুবিধে হল না স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী (আয়ূষ বিভাগ) আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বুধবার মেডিক্যালের পরিকাঠামো, হস্টেলের পরিকাঠামো-সহ বিভিন্ন দিক ঘুরে দেখেন তিনি।

হোমিওপ্যাথি কলেজ পরিদর্শনে মন্ত্রী। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

হোমিওপ্যাথি কলেজ পরিদর্শনে মন্ত্রী। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:১৩
Share: Save:

মেডিক্যালের স্বাস্থ্যই রুগন্‌।

পরিকাঠামোর অভাবই যে মেদিনীপুরের হোমিওপ্যাথি মেডিক্যালের প্রধান ‘অসুখ’, পরিদর্শন শেষে তা বুঝতে অসুবিধে হল না স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী (আয়ূষ বিভাগ) আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বুধবার মেডিক্যালের পরিকাঠামো, হস্টেলের পরিকাঠামো-সহ বিভিন্ন দিক ঘুরে দেখেন তিনি। প্রতিমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে ছাত্রছাত্রীরাও নিজেদের সমস্যা- অভিযোগের কথা জানান। পরে মন্ত্রীর মন্তব্য, “এটা প্রাচীন হোমিওপ্যাথি কলেজ। আমি এখানে আসার সুযোগ পেতেই রাজি হয়ে গিয়েছি। কারণ, নিজের চোখে কলেজের অবস্থাটা দেখতে চেয়েছি। এখানে ঘুরে যা দেখলাম তাতে সবটাই বাকি!” তাঁর কথায়, “কিছু ঘর সত্যিই খারাপ। জানালা ভাঙা। বাইরের লোকজনও ঢুকে যায় বলে শুনলাম। আমি এ নিয়ে জেলাশাসক-জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলব। অনেকগুলো ঘরই ব্যবহারের অনুপযোগী। সেগুলি সংস্কার করার প্রয়োজন আছে।” মন্ত্রীর আশ্বাস, “আজ এটুকু বলতে পারি, আগামী আর্থিক বছরে আর্থিক সহায়তার ক্ষেত্রে এই কলেজ আমাদের কাছে সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে।”

বুধবার থেকে শুরু হয়েছে মেদিনীপুর হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ৭০ তম প্রতিষ্ঠা দিবস ও ২০ তম প্রাক্তনী পুনর্মিলন উত্‌সব। চলবে আজ, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এ দিন কলেজে আসেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আশিসবাবু। এ দিনের অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহকুমাশাসক তথা এই কলেজের প্রশাসক অমিতাভ দত্ত, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা, বিধায়ক মৃগেন মাইতি, জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে কলেজ চত্বর ঘুরে দেখেন আশিসবাবু। কথা বলেন শিক্ষক- ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে। অনুষ্ঠান শেষেও মেয়েদের হস্টেলেও যান তিনি। সেখানে গিয়ে আবাসিক ছাত্রীদের সমস্যার কথা শোনেন।

তিনি অবশ্য সব রকম সহায়তার আশ্বাসও দেন। আশিসবাবুর কথায়, “কী সহায়তা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো সঠিক ভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হয়েছে কি না, আর কী কী সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন, সবই দেখেছি।” কলেজ-কর্তৃপক্ষকে তাঁর পরামর্শ, “একদিন স্বাস্থ্য ভবনে আসুন। আমাদের দিক থেকে যা যা সহায়তা করা সম্ভব তা করব। প্রয়োজনে বারবার আসতে হবে। কাজটা আদায় করে নিতে হবে। কাজ আদায় না- করলে সার্থকতা থাকবে না।” আশিসবাবু জানান, ইতিমধ্যে এই কলেজের জন্য কিছু আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। মেয়েদের হস্টেলের জন্য ২ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। একটি ভবনের জন্যও বরাদ্দ হয়েছে ৪৭ লক্ষ টাকা। এ বার কাজ শুরু হবে।

বুধবার খড়্গপুরের কৌশল্যার ওই হোমিওপ্যাথি কলেজে এসেছিলেন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। কলেজের অধ্যক্ষ চিত্তরঞ্জন জানা বলেন, “প্রায় ৪০ বছর অতিক্রান্ত হওয়া আমাদের কলেজে পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রয়োজন। কিন্তু সেই বিপুল পরিমাণ অর্থের সংস্থান সম্ভব হচ্ছে না। তাই বিভাগীয় মন্ত্রীকে কাছে এই বিষয়ে নজর দিতে বলেছি।’’ কলেজের ছাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পলাশ দাসের কথায়, “সরকারি কলেজগুলিতে ইন্টার্নশিপে প্রায় ১৬ হাজার টাকা ভাতা পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের কলেজে ৩ হাজার টাকার বেশি পাওয়া যাচ্ছে না।” অভিযোগ শুনে আশিসবাবুর বক্তব্য, “২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে কলেজের সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করব। তবে চলতি অর্থবর্ষেও আপনাদের সমর্থন চাইছি।” সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “দাবি-দাওয়া মানুষের থাকতেই পারে। আলোচনায় মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। কিন্তু ছাত্রদের এমন আচরণ করা উচিত নয় যাতে শিক্ষকেরা বিড়ম্বনায় পড়েন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE