ওষুধ আছে কি নেই, জীবাণু পরীক্ষার কিটের ঘাটতি কতটা, তা নিয়েই চাপান-উতোর চলছে। সেই ফাঁকে দাপিয়ে বাড়ছে সোয়াইন ফ্লু। ওই রোগের সংক্রমণে লাগামই পরাতে পারছে না রাজ্য।
সোমবার রাত পর্যন্ত রাজ্যে সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩১। আক্রান্ত পাঁচ জন ভর্তি আছেন কলকাতার আইডি হাসপাতালে। তাঁদের মধ্যে এক মধ্যবয়স্কের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে সিসিইউ-এ রাখা হয়েছে। রাতে মধ্যমগ্রাম ও মুর্শিদাবাদ থেকে দু’জন রোগীকে আইডি-তে পাঠানো হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যকর্তারা। বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতালে আছে দু’টি শিশু। অন্য একটি শিশুর থুতুর নমুনা এ দিন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজ (নাইসেড)-এ পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া থেকে এ দিন আরও কয়েক জনের থুতুর নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে নাইসেডে। সোয়াইন ফ্লুয়ের উপসর্গ নিয়ে বেশ কয়েক জন ভর্তি রয়েছেন উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতালে। রোজই হাঁচি, কাশি, জ্বর নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। জেলা হাসপাতালে যাঁরা চিকিৎসাধীন, তাঁদের আত্মীয়দের অনেকেরই অভিযোগ, ঠিকমতো পরীক্ষা না-হওয়ায় সময়ে ওষুধ পড়ছে না। তাই উদ্বেগ বাড়ছে। স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য জানাচ্ছে, কিছু মানুষ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। বিভ্রান্তি দূর করার ব্যবস্থা হচ্ছে না কেন? স্বাস্থ্য দফতর নিরুত্তর।
রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, ঠিক খবর দেওয়ার বদলে অনেক হাসপাতাল জানিয়েছে, সোয়াইন ফ্লু-র জীবাণু পরীক্ষার কিট না-থাকায় কফ ও থুতু পরীক্ষায় অযথা দেরি হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ভবন অবশ্য এ দিন পরিষ্কার জানায়, ডেঙ্গি বা এনসেফ্যালাইটিসের জীবাণু পরীক্ষার জন্য হাসপাতালকে কোনও কিট-ই দেওয়া হয় না। সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, টানা জ্বরের রোগীদের থুতু ও কফের নমুনা পরীক্ষা করেই সোয়াইন ফ্লু হয়েছে কি না, জানা যায়। তবে এই জীবাণু শনাক্তকরণের ব্যবস্থা রাজ্যের সর্বত্র নেই। শুধু কলকাতার নাইসেডেই থুতু ও কফ পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। জেলা থেকে কফ ও থুতুর নমুনা পাঠানো হয় নাইসেডে। সেখানে পরীক্ষার পরে রিপোর্ট যায় জেলায়। তাই কয়েক দিন সময় লাগে বলে স্বাস্থ্যকর্তারা জানান।
ছাত্রীর মৃত্যু, ক্লাস বন্ধ আলিগড়ে
সোয়াইন ফ্লু-এ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে। এক ছাত্রীর মৃত্যুতে তড়িঘড়ি এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল ক্লাস। বাতিল হল সমস্ত সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও কনফারেন্স। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৮৮ জন পড়ুয়াকে শিক্ষামূলক ভ্রমণে দক্ষিণ ভারত নিয়ে যাওয়া হয়। ফেরার পর থেকে এক সাত জন পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মধ্যে এক ছাত্রীর অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দিল্লির যাওয়ার পথেই মারা যান রুশদা পারভেজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস আহমেদ আলি জানান, সংক্রমণ রুখতে ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy