উদ্বোধনের পরে। গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।
ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের উদ্বোধন হল বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা থেকেই কেন্দ্রীয় ভাবে বীরভূম, পুরুলিয়া, নদিয়া-সহ আটটি জায়গার সঙ্গে ওই ইউনিটটির উদ্বোধন করেন। তবে বহরমপুর হাসপাতালেও একটি অনুষ্ঠান হয়। বহরমপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ অজয়কুমার রায় জানান, ১২ শয্যার ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের মাধ্যমে হৃদরোগ ও অন্যান্য জটিল রোগের পরিষেবা দেওয়া সহজ হবে।
বহু দিন ধরেই হাসপাতালে রোগীর চাপ সামলাতে এবং কলকাতা নির্ভরতা কমাতে এ ধরণের বিশেষ পরিষেবার দাবি উঠছিল। রোগীদেরও অভিযোগ ছিল, অনেক ক্ষেত্রেই তাদের কলকাতায় রেফার করে দেওয়া হয়। কিন্তু যাতায়াতে দীর্ঘ সময় লাগায় বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়। তাছাড়া মুর্শিদাবাদের বহরমপুর লাগোয়া গ্রাম থেকে আসা রোগীদের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় কলকাতায় নিয়ে যাওয়ায় সম্ভব হয় না। এ বার বহরমপুরেই ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট হওয়ায় কিছুটা হলেও পরিস্থিতির সুরাহা হবে বলে রোগীদের আশা। তাছাড়া মুর্শিদাবাদের বিপুল জনসংখ্যার হাসপাতালের উপর চাপ সৃষ্টি করে বরাবরই। কলকাতা ছাড়া বর্ধমান মেডিক্যালেও অনেককে রেফার করা হয়। এ বার মরণাপন্ন রোগীদের অনেককেই বাঁচানো যাবে বলে আশা বহরমপুর হাসপাতালের।
বহরমপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ অজয়কুমার রায় জানান, আগের বছরই মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে প্রত্যেকের বাড়ির ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে একটি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট খোলার পরিকল্পনা করা হয়। বহরমপুর মেডিক্যাল এক বছরের মধ্যেই তা বাস্তবায়িত করল। এর ফলে প্রসূতি মৃত্যুর হার কমবে বলেও তাঁর দাবি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ শয্যার ওই ইউনিটের মধ্যে ৪টি আইসিইউ বাকি ৮টি হাই-ডিপেনডেন্সি ইউনিট বা এইচডিইউ। আইসিইউ-এ চিকিৎসার পরে রোগী একটু সুস্থ হলে তাকে এইচডিইউতে নিয়ে যাওয়া হবে। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত দুটি ইউনিটেই ভেন্টিলেটর, মাল্টি চ্যানেল মনিটর-সহ নানা আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। কয়েকজন নার্সকে ওই ইউনিটের জন্য বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলেও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। সন্ধ্যার ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তৃণমূলের বিধায়ক ও বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি সুব্রত সাহা, জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও, পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর, পরিষদীয় সচিব চাঁদ মহম্মদ, বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস প্রমুখ। জেলাশাসক বলেন, “বিপিএল অধ্যুষিত জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দুর্ঘটনায় শুধু মুর্শিদাবাদ জেলাতেই ৩৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের ফলে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর সংখ্যাও কমবে বলে আশা পুলিশ সুুপার হুমায়ুন কবীরের। তবে আর পাঁচটা সরকারি পরিষেবার মতো কিছুদিন যেতে না যেতেই বিপন্ন হয়ে পড়া যেন এক্ষেত্রে না ঘটে সে বিষয়েও সতর্ক করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy