Advertisement
E-Paper

৮ দিন পর দুই গ্রামে মিলল স্বাস্থ্য পরিষেবা

ইলামবাজার ব্লকের পিঠোপিঠি দুই পঞ্চায়েতের দু’টি গ্রামে ভিন্ন দুই ঘটনার প্রায় আট দিন পর বসল স্বাস্থ্য শিবির। এক দিকে সন্ত্রাসের আবহ ও আতঙ্কে মানুষ গ্রামছাড়া, অন্য দিকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা। এই দু’য়ের মাঝে পড়ে কার্যত আট দিন ধরে ওই দুই গ্রামে বন্ধ ছিল সব রকমের নাগরিক পরিষেবা-সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি পরিষেবাও। শুক্রবার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশে ইলামবাজারের বিএমওএইচ ওই দু’টি গ্রামে দু’টি স্বাস্থ শিবির করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫৬
মাখড়ায় বসল হেলথ ক্যাম্প। —নিজস্ব চিত্র।

মাখড়ায় বসল হেলথ ক্যাম্প। —নিজস্ব চিত্র।

ইলামবাজার ব্লকের পিঠোপিঠি দুই পঞ্চায়েতের দু’টি গ্রামে ভিন্ন দুই ঘটনার প্রায় আট দিন পর বসল স্বাস্থ্য শিবির। এক দিকে সন্ত্রাসের আবহ ও আতঙ্কে মানুষ গ্রামছাড়া, অন্য দিকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা। এই দু’য়ের মাঝে পড়ে কার্যত আট দিন ধরে ওই দুই গ্রামে বন্ধ ছিল সব রকমের নাগরিক পরিষেবা-সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি পরিষেবাও। শুক্রবার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশে ইলামবাজারের বিএমওএইচ ওই দু’টি গ্রামে দু’টি স্বাস্থ শিবির করেন। বিএমওএইচ সুবীর রায়চৌধুরী বলেন, “সিএমওএইচ-এর নির্দেশে দু’টি পঞ্চায়েতের দু’টি গ্রামে স্বাস্থ্য শিবির করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিষয়ক পরিষেবা গ্রামবাসীদের আপাতত এখান থেকে দেওয়া হবে।”

প্রসঙ্গত, ২৪ অক্টোবর বেআইনি ভাবে বোমা-বারুদ মজুত রয়েছে বলে খবর পেয়ে পাড়ুই থানার মঙ্গলকোট পঞ্চায়েতের চৌমণ্ডলপুর গ্রামে উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত হন ওসি প্রসেনজিত্‌ দত্ত। অভিযুক্ত গ্রামবাসীদের একাংশকে ধর-পাকড়ের নামে তাণ্ডব এবং সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি দু’টি পঞ্চায়েত এলাকায় জেলা প্রশাসন জারি করে ১৪৪ ধারা। ১৪৪ ধারার ২৪ ঘণ্টা মধ্যে পুলিশ আক্রান্তের ঘটনাস্থল থেকে দেড় কিলোমিটারের দূরের লাগোয়া গ্রামে তৃণমূল ও তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতী এবং বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে ঝামেলা হয়। চলে গোলাগুলি। পাশাপাশি দু’টি গ্রামের এহেন পরিস্থিতিতে একদিকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা, অন্য দিকে রাজনৈতিক সন্ত্রসের জেরে গ্রাম ছাড়েন বাসিন্দারা। চৌমণ্ডলপুর গ্রাম জনমানব শূন্য হলেও লাগোয়া গ্রামে শ’খানেক পুরুষ মহিলাদের দেখা গিয়েছে। সংঘর্ষের জেরে স্বাস্থ্য, পানীয় জলের মতো জরুরি পরিষেবা বিপর্যস্ত হয় ওই দুই গ্রাম-সহ লাগোয়া এলাকাতে। প্রসূতি থেকে শুরু করে শিশুদের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যস্ত হয় ওই দুই গ্রামে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই গ্রামের দু’টি স্বাস্থ্য শিবিরে প্রায় ২২৫ জন বাসিন্দারা স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। ইলামবাজারের বিএমও এইচ সুবীরবাবুর নেতৃত্বে চিকিত্‌সক, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়ে মোট ৮ সদস্যের দল ওই দু’টি শিবিরের দায়িত্বে ছিলেন। চৌমণ্ডলপুর গ্রামের শিবিরে এ দিন ৯৫ জন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছেন। সর্দি, কাশি, জ্বরের উপসর্গ নিয়ে যেমন শিশু এবং মহিলারা এসেছিলেন ওই শিবিরে, ঠিক তেমনই মারধরে আহত গ্রামের আনসারি বিবিও এসেছিলেন খত দেখিয়ে পরিষেবা নিতে। গ্রামের তিন মাথার মোড়ে বসেছিল ওই শিবির।

অন্য দিকে, মাখড়া গ্রামের পুলিশ ক্যাম্প লাগোয়া ময়ূরাক্ষী ক্যানেলের ওপর সেতুর কাছে বসেছিল স্বাস্থ্য শিবির। ওই শিবিরে প্রায় ১৩০ জন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। পুলিশি পাহারার মধ্যে চলা ওই স্বাস্থ্য শিবিরে ক্যানেল পাড়ের বাসিন্দা শেখ রফিকুল বোমায় জখম পায়ের চোট নিয়ে যেমন ওষুধ নিতে এসছিলেন, ঠিক তেমনই ফজলু হক, রুহিলা বিবির মতো বেশ কয়েকজন পুরুষ ও মহিলা সর্দি, কাশি এবং জ্বরের উপসর্গ নিয়ে এসেছিলেন। ওই আতঙ্কের মধ্যে খানিকটা রসিকতা করে, স্বাস্থ্য কর্মীদের দিকে তাকিয়ে গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ শেখ আজগর আলি আতঙ্ক ছাড়ানোর কোনও ওষুধপাতি রয়েছে কি না বলে প্রশ্ন ছুড়ে ছিলেন।

parui health camp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy