এক বিখ্যাত লেখক বই সম্পর্কে বলেছিলেন, বই হল এমন একটা বিষয় যা আপনাকে ঘরের এক কোণে বসেই বিশ্ব ভ্রমণের অনুভূতি দিতে পারে। এ কথা সত্য। আদতে যিনি বই পড়তে ভালোবাসেন, তিনি তো অজানাকে জানতে পারেন, অদেখাকে দেখতে পারেন, মনের কোণের বাইরে যেতে পারেন নিজের খোলা ব্যালকনিতে বসেই।
বই প্রেমীদের জন্য বর্ষার প্রকৃতি নিঃসন্দেহে মনোরম। শুধুই কি তাই, কত শত কবি এই বর্ষা ঋতুতেই রসদ খুঁজে পেয়েছেন নিজেদের লেখার। “এ ঘোর রজনী, মেঘের ঘটা, কেমনে আইলো বাটে?/ আঙিনার কোণে তিতিছে বঁধুয়া, দেখিয়া পরাণ ফাটে।” চন্ডীদাস কী সুন্দর ভাবে বর্ষার দুর্গমতাকে প্রস্ফুটিত করেছেন তাঁর লেখায়। বর্ষার আঁধারে রাধার অন্তরের সুখ, দুঃখ, অভিসারের বর্ণনা দিয়েছেন। এই রকমই প্রচুর উদাহরণ আছে। বর্ষা কখনও রূপক হিসেবে, কখনও চরিত্র হিসেবে কখনওবা প্রেক্ষাপট হিসেবে পাশে থেকেছে কবিদের। কম বেশি সব কবির জীবনেই বর্ষার অবদান তাই অনেকটা। আর কবির সুজন সফল হয় তখনই যখন তিনি এক সঙ্গে নিজের, অপরের এবং প্রকৃতির আবেগকে ছুঁয়ে যেতে পারেন। ঠিক যেমন আমাদের ছোটবেলা ছুঁয়ে ছিলেন রাস্কিন বন্ড তাঁর 'দ্য ব্লু আমব্রেলা' দিয়ে। আমাদের ছোটবেলার খেলার সঙ্গীও ছিল এক বৃষ্টিমুখর কবিতা– ‘আয় বৃষ্টি ঝেঁপে’।
পাঠকদের জীবনেও বৃষ্টির অবদান কোনও অংশে কম নয়। বৃষ্টি ভেজা শহরে, তাঁর কাছে বইয়ের থেকে আর বড় বন্ধু কে–ই বা হতে পারে। এই রকমই কিছু বন্ধুর কথা থাকল বই প্রেমীদের উদ্দেশ্যে। হয়তো সেগুলি পড়া হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। যদি না হয়, তা হলে নিয়ে বসে পড়ুন কোনও এক বর্ষার ধূসর বিকেলে হাতে এক কাপ কফি নিয়ে।