Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Scam

ভুয়ো করোনা রিপোর্ট চক্রে গ্রেফতার বাংলার ২ বাসিন্দা

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে তারা স্বাস্থ্য দফতরের কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেয়নি।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২০ ০২:৫৭
Share: Save:

কোভিড পরীক্ষার ভুয়ো রিপোর্ট তৈরির অভিযোগে গুরুগ্রামে পশ্চিমবঙ্গের দুই বাসিন্দাকে গ্রেফতার করল হরিয়ানা পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃতদের মধ্যে অনির্বাণ রায় কলকাতা ও পরিমল রায় মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা।

হরিয়ানার ড্রাগ কন্ট্রোলার অফিসার আমনদীপ চৌহান জানিয়েছেন, করোনা পরীক্ষার ভুয়ো রিপোর্ট তৈরির চক্র নিয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছিল হরিয়ানা পুলিশে মুখ্যমন্ত্রীর ফ্লাইং স্কোয়াড। মুখ্যমন্ত্রীর ফ্লাইং স্কোয়াডের ডেপুটি সুপার ইন্দ্রজিৎ যাদব ও জেলা ইনস্পেক্টর হরিশ বুদ্ধিরাজা জানতে পারেন, গুরুগ্রামের ৩০ নম্বর সেক্টরের সৈনিখেড়া গ্রামে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি নিয়েই করোনা পরীক্ষা করছে ‘মেডিকার্টজ় প্যাথলজি ল্যাব অ্যান্ড মেডিক্যাল টুরিজ়ম’ নামের এক সংস্থা।

আমনদীপ জানিয়েছেন, তদন্তের পরে সৈনিখেড়া গ্রামে ‘মেডিকার্টজ় প্যাথলজি ল্যাব অ্যান্ড মেডিক্যাল টুরিজ়ম’-এর কাজকর্ম নিয়ে সন্দেহ জাগে পুলিশের। প্রথমে এক জনকে ভুয়ো গ্রাহক সাজিয়ে পাঠানো হয় সংস্থাটির দফতরে। টাকার বিনিময়ে তাঁকে কোভিড পজ়িটিভ রিপোর্ট তৈরি করে দেয় সংস্থাটি। গত কাল গভীর রাতে সৈনিখেড়ায় হানা দেয় পুলিশ। গ্রেফতার হয় অনির্বাণ ও পরিমল। তারা বেশ কিছু দিন ধরে ওই গ্রামে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিল।

আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় কমেছে মৃত্যুর সংখ্যা, কমলো দৈনিক সংক্রমণও

আমনদীপের কথায়, ‘‘দু’মাস ধরে এই ভুয়ো রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছিল। এ জন্য ১৪০০ থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত নিত অভিযুক্তেরা। প্রায় ১ হাজার ভুয়ো রিপোর্ট তৈরি করেছে তারা।’’ তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে তারা স্বাস্থ্য দফতরের কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেয়নি। দিল্লির ‘ডাইনেক্স ডায়গনস্টিকস’ ও ‘পাথ ল্যাব’ নামে দুটি সংস্থার সঙ্গে অভিযুক্তদের যোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের তৈরি ভুয়ো কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট দেখিয়ে অনেকে আমেরিকা-সহ কয়েকটি দেশে গিয়েছেন। আবার পজ়িটিভ রিপোর্ট দেখিয়ে অনেকে অফিস থেকে ছুটি নিয়েছেন।

সরকারি সূত্রে খবর, আমেরিকার কয়েকটি শহর, হংকংয়ে ভুয়ো কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট দেখিয়ে যাওয়ার পরে কয়েক জন ভারতীয় যাত্রীর দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। ফলে ওই শহরগুলিতে ভারতীয় বিমান চলাচল বন্ধ হয়। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে সরকার।

আরও পড়ুন: ফোনালাপে গলল বরফ, দিলীপকে মধ্যাহ্নভোজেও ডাকলেন বৈশাখী

সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লির হাউজ় খাস থানার পুলিশ ভুয়ো কোভিড রিপোর্ট তৈরির অভিযোগে মালবীয় নগর থেকে কুশ পরাশর নামে এক চিকি্ৎসক ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করে। অন্তত ৭৫ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে ভুয়ো রিপোর্ট তৈরি করছিল তারা। সংগৃহীত নমুনা পরে নষ্ট করে ফেলা হত। প্রতিটি পরীক্ষার জন্য ২৪০০ টাকা করে নিত তারা। সেই চক্রের সঙ্গে গুরুগ্রামের অভিযুক্তদের কোনও যোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

অন্য রাজ্যেও অবশ্য ভুয়ো কোভিড রিপোর্ট তৈরির একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে। অগস্ট মাসে কলকাতার নেতাজিনগর ও পূর্ব যাদবপুর থানা ভুয়ো কোভিড রিপোর্ট তৈরির দুটি চক্রের খোঁজ পায়। নেতাজিনগরের ঘটনায় তিন জন ও পূর্ব যাদবপুরের ঘটনায় এক জন গ্রেফতার হয়। অক্টোবরে বেঙ্গালুরুতে ভুয়ো কোভিড রিপোর্ট তৈরির অভিযোগে এক পরীক্ষাগারের কর্মী গ্রেফতার হয়। অভিযোগ, ১২ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই রিপোর্ট ‘বিক্রি’ করতে রাজি হয়েছিল সে। তার আগে একই অভিযোগে বরখাস্ত করা হয় এক চিকিৎসক ও দুই কর্মীকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Scam Arrest Coronavirus in India Haryana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE