Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
National News

ভরাডুবির পর কোন্দল কংগ্রেসে, ছেলের হারের জন্য সচিনকে দায়ী করলেন গহলৌত

লোকসভা নির্বাচনে নিজের ছেলের হারের জন্য রাজস্থানের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলটকে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত।

বাগযুদ্ধ শুরু। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত (বাঁ দিকে) ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলট। - ফাইল ছবি।

বাগযুদ্ধ শুরু। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত (বাঁ দিকে) ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলট। - ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৯ ১৬:০০
Share: Save:

ভোটে ভরাডুবির পর যা হয়, নেতাদের মধ্যে সেই কাদা ছোড়াছুড়ি পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে কংগ্রেসে। তা সে রাজস্থানই হোক বা মধ্যপ্রদেশ অথবা কর্নাটক। সেই নিয়মের ব্যাতিক্রম ঘটছে না কোথাও। লড়াইটা কোথাও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পায়লটের মধ্যে। মধ্যপ্রদেশে সেই লড়াইটা কমল নাথ বনাম জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। কংগ্রেস যে সব রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে, সেখানে সেই লড়াইটা যেমন শুরু হয়েছে দলীয় নেতাদের মধ্যে, তেমনই যে রাজ্যে কংগ্রেস জোট সরকারের গুরুত্বপূর্ণ শরিক, সেই কর্নাটকে মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর দল জেডিএসের সঙ্গে দৃশ্যতই দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছে কংগ্রেসের।

লোকসভা নির্বাচনে নিজের ছেলের হারের জন্য রাজস্থানের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পায়লটকে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। জোধপুর আসন থেকে অশোকের ছেলে বৈভব গহলৌত প্রায় ২ লক্ষ ৭০ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন। অশোক মনে করেন, ‘‘এই হারের দায় নেওয়া উচিত সচিন পায়লটের।’’ এবিপি নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘জোধপুর আসন থেকে আমরা বড় ব্যবধানে জিতব, বলেছিলেন সচিন। ওখানে ৬ জন বিধায়ক আছেন আমাদের দলের। তা ছাড়া, প্রচারও খুব ভালো হয়েছে। তবু আমরা জিততে পারিনি। বরং বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছে আমাদের। এই হারের দায় সচিনকে নিতে হবে।’’ বিজেপির গজেন্দ্র সিং শেখওয়াত রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর ছেলেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছেন। অশোক নিজেও ছেলের জন্য একটানা প্রচার করেছিলেন জোধপুরে। তবু আসনটি ধরে রাখতে পারেনি কংগ্রেস। রাজ্যে ক্ষমতায় থেকেও।

কয়েক দিন আগে সচিন পায়লট প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, ‘‘বৈভবকে প্রার্থী করার ব্যাপারে হাইকমান্ডকে আমিই রাজি করিয়েছিলাম। অশোক কোনও উদ্যোগ নেননি।’’ সেই কথার প্রেক্ষিতেই অশোক বলেছেন, ‘‘সচিন যখন দলের ভিতরে বলেছিলেন, আমার ছেলের টিকিটের ব্যবস্থা তিনিই করেছেন, তিনিই আমার ছেলেকে বড় জয় এনে দেবেন, তখন আমার ছেলের হারের দায়টাও তো সচিনকেই নিতে হবে।’’ অন্য একটি প্রসঙ্গে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সামগ্রিক ভাবে রাজস্থানে যে শোচনীয় ফল হয়েছে কংগ্রেসের, তার দায় প্রদেশ কংগ্রেস এবং হাইকমান্ডকেই নিতে হবে।’’ কেন তাঁর ছেলে বৈভব হারলেন, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এমন ঘটনা সমস্ত ব্যাখ্যার বাইরে।’’

আরও পড়ুন- আসল প্রশ্ন

আরও পড়ুন- বেকারত্বের জন্যও কি নেহরু-গাঁধী পরিবারকে দুষবেন মোদী? কটাক্ষ শিবসেনার​

লোকসভা নির্বাচনে রাজস্থানে একটি আসনও পায়নি কংগ্রেস। গোটা দেশেই কংগ্রেসের ফল খারাপ হয়েছে। ফলাফল বেরনোর পর তাঁর নিজের পদ ছাড়ার কথা বলেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। দলের নেতারা আপত্তি করলেও দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে নিজের অবস্থানে অনড় রাহুল। এমনকী, শোনা গিয়েছে দলের অন্দরে কয়েক জন নেতার সমালোচনা করে রাহুল বলেছেন, ‘‘ওই নেতারা নিজেদের ছেলেদের জেতানোর জন্য যে পরিশ্রম করেছেন, তাতে দলের ক্ষতি হয়েছে।’’ কারও নাম না বললেও অশোক ওই তালিকায় রয়েছেন বলেই রাজনৈতিক মহলের একটা অংশের ধারণা।

এ ব্যাপারে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘দলের ভিতরে বৈঠকে কী আলোচনা হচ্ছে তা একান্ত ভাবেই দলের বিষয়। আর তা নিয়ে বাইরে মন্তব্য করার কোনও যুক্তি আছে বলে আমি মনে করি না।’’ উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পায়লট অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সচিন মন্তব্য করতে রাজি না হলেও, দলের অন্দরে যে সমস্যা দানা বাঁধতে শুরু করেছে, তা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট। রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সচিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেও, অশোক তাঁর নিজের এলাকাতেও ছেলেকে জেতাতে পারেননি। সেখানেও ৪০০ ভোটের ব্যবধানে হারতে হয়েছে কংগ্রেস প্রার্থীকে।

শুধুই রাজস্থান নয়, পাঁচ মাসে আগে বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া আরও একটি রাজ্য, মধ্যপ্রদেশেও লোকসভা ভোটের ভরাডুবির পর কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়ে গিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের দুই হেভিওয়েট কমল নাথ ও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মধ্যে। কর্নাটকেও মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী-সহ জেডিএসের নেতাদের ভোট-পরবর্তী মন্তব্যে কংগ্রেসের সঙ্গে দলের ব্যবধান উত্তরোত্তর বেড়ে ওঠার ইঙ্গিত স্পষ্ট হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE