Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সুরক্ষার কারণে হাজেলাকে বদলি

অ্যাটর্নি-জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানতে চেয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হঠাৎ একজন আমলার বদলির নির্দেশ কেন দিচ্ছেন?

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৩৫
Share: Save:

এনআরসি মামলার মূল আবেদনকারী আসাম পাবলিক ওয়ার্কস (এপিডব্লিউ)-এর আবেদনের শুনানি ছিল। তাদের দাবি ছিল, চূড়ান্ত তালিকার ১০০ শতাংশ তথ্য যাচাই করা হোক, এনআরসি কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলার কাজকর্ম ও খরচ করা ১৬০০ কোটি টাকার হিসেব পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হোক। কিন্তু এনআরসি নিয়ে সম্ভবত তাঁর শেষ শুনানিতে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আবেদনের শুনানির পরিবর্তে এনআরসি কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলাকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়ে মধ্যপ্রদেশে, তাঁর নিজের রাজ্যে ডেপুটেশনে বদলির নির্দেশ দিলেন।

অ্যাটর্নি-জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানতে চেয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হঠাৎ একজন আমলার বদলির নির্দেশ কেন দিচ্ছেন? প্রধান বিচারপতি কারণ স্পষ্ট না করে শুধু বলেন, ‘‘নির্দেশ যখন দেওয়া হয়েছে নিশ্চয় কারণও আছে।’’ তিনি সাত দিনের মধ্যে হাজেলার বদলির বিজ্ঞপ্তি জারি করার জন্য অসম সরকারকে নির্দেশ দেন। পরের শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ২৬ নভেম্বর। তার আগেই অবসর নিচ্ছেন তিনি।

এনআরসি দফতর সূত্রে খবর, ১৯ লক্ষাধিক মানুষের নাম বাদ পড়ার জেরে রাজ্যের সব সংগঠন তাঁর বিরুদ্ধে থাকায় এবং খোদ রাজ্য সরকার তাঁকে কাঠগড়ায় তোলায় হাজেলা নিজেই পরিবারের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে মধ্যপ্রদেশে বদলির আবেদন জানিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। ২০১৩ থেকে এনআরসির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এনআরসির তথ্য-প্রযুক্তি কাঠামো তৈরির ক্ষেত্রেও দিল্লি আইআইটির ছাত্র হাজেলার বড় ভূমিকা ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরে হাজেলা সব মহলের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। রাজ্য সরকার দাবি করে, সরকারকে পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে একতরফা ভাবে কাজ করেছেন হাজেলা। তাই সব দায় তাঁর। হাজেলার নামে বেশ কয়েকটি এফআইআরও দায়ের হয়েছে। হাজেলা এ নিয়ে মুখ খোলেননি।

এপিডব্লিউ-র সভাপতি অভিজিৎ শর্মা বলেন, ‘‘হাজেলার বিরুদ্ধে তদন্ত তো দূরের কথা, উল্টে প্রধান বিচারপতি হাজেলাকে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দিলেন। ফলে হাজেলা পালানোর সুযোগ পেয়ে গেলেন।’’ সারা অসম বাঙালি ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক শান্তনু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এনআরসির কাজ এখনও শেষ হয়নি। স্পিকিং অর্ডারও দেওয়ার কাজ শুরু হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কি ভাবে হাজেলাকে সরানো হল!’’ কংগ্রেস মুখপাত্র অপূর্ব ভট্টাচার্যের কথায়, ১৯ লক্ষ মানুষের ভাগ্য ঝুলছে। এই অবস্থায় হাজেলাকে হঠাৎ সরানোয় প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে বাধ্য।

আসুর সাধারণ সম্পাদক লুরিণজ্যোতি গগৈয়ের মতে, ‘‘শুদ্ধ এনআরসি তৈরির ক্ষেত্রে রাজ্য ও কেন্দ্র ব্যর্থ। হাজেলার উপরে দোষ দিয়ে পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছিল। হাজেলা সরে যাওয়ায় গোটা প্রক্রিয়া আরও জটিল হতে পারে।’’ আমসুর উপদেষ্টা আজিজুর রহমানের আশঙ্কা, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে হাজেলাকে সরানোয় প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হবে আশঙ্কা। বিজেপির মুখপাত্র রূপম গোস্বামী সরকারের কাছে দাবি করেছেন, কেন্দ্র থেকে এনআরসির কাজের জন্য পাওয়া ১৬০০ কোটি টাকার হিসেব দাখিল না করা পর্যন্ত যেন প্রতীক হাজেলাকে অব্যাহতি না দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Assam NRC Prateek Hajela Security
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE