এনআরসি নিয়ে ১০ জুলাই বরাক বনধের ডাক দিয়েছে নাগরিকত্ব সুরক্ষা সংগ্রাম কমিটি। সংগঠনের দাবি, ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে এ দেশে যারা এসেছেন, তাঁদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার পরই এনআরসি নবীকরণ করা হোক। কংগ্রেস-বিজেপি উভয়েই এ নিয়ে দ্বিচারিতা করছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।
প্রাক্তন মন্ত্রী, কংগ্রেস বিধায়ক অর্ধেন্দুকুমার দে ২৮ জুন এনআরসি ইস্যুতে রাজ্যভিত্তিক সভা ডেকেছেন। তা ভাল চোখে দেখছে না নাগরিকত্ব সুরক্ষা সংগ্রাম কমিটি। কমিটির নেতৃত্বের বক্তব্য— এ আসলে কংগ্রেসেরই চাল। কারণ এনআরসি নির্দেশিকা প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন অর্ধেন্দুবাবু। তাঁরা তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, প্রকৃতই বাঙালি-দরদী হলে সে দিনের সভায় যেন ১০ জুলাইয়ের বরাক বনধের বদলে রাজ্য বনধের ডাক দেন।
নাগরিকত্ব সুরক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অরুণাংশু ভট্টাচার্য, প্রদীপকুমার দেব ও শশাঙ্কশেখর পাল জানান, লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শিলচর এসে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি তখন জানিয়েছিলেন— ১৯৭১ সালের পরও যাঁরা ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে এ দেশে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু এক বছরে সে কাজ এগোয়নি। একই ভাবে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈও বিজেপির পালের হাওয়া কেড়ে নিতে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব ইস্যুতে সহমত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু রাজ্য সরকার এনআরসি-র যে নির্দেশিকা তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টকে দিয়েছে, সেখানে তাঁর সেই চিন্তাভাবনার কোনও প্রতিফলন ঘটেনি।
সংগ্রাম কমিটির আর্জি, প্রকৃতই শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের ইচ্ছে থাকলে আগে তা কার্যকর করা হোক, পরে হোক এনআরসি নবীকরণ। তা হলে আবেদনপত্র পূরণ এবং নথিপত্র সংগ্রহের জন্য মানুষকে যে সঙ্কটের মুখে পড়তে হয়েছে, তা থেকে তাঁরা রেহাই পাবেন। ডাউটফুল ভোটার নিয়েও তাঁরা চান, আগে সে সব মামলার নিষ্পত্তি করেই এনআরসি-র কাজ করা হোক। কারণ ৪ লক্ষ নাগরিককে সন্দেহভাজন রেখে কী করে নাগরিক পঞ্জী নবীকরণ করা যেতে পারে? প্রশ্ন তোলেন কমিটির কার্যকরী সদস্য নির্মলকুমার দাস।
সংগ্রাম কমিটির দাবি, অসমে নাগরিক পঞ্জী প্রণয়ণের জন্য যে পৃথক নীতির কথা বলা হয়েছে, সেই ৪ (ক) ধারা বাতিল করতে হবে। সারা দেশে এক নিয়ম, অসমের জন্য পৃথক প্রক্রিয়ায় এনআরসি প্রণয়ন করা উচিত নয়।
অরুণাংশুবাবুর আশঙ্কা, লক্ষ লক্ষ ভারতীয় বঙ্গভাষীকে বিদেশি করার চক্রান্ত চলছে। ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে আসা সবাইকে নাগরিকত্বের আশ্বাস দিয়ে কংগ্রেস-বিজেপি তাঁদের আন্দোলন থেকে সরিয়ে রাখছে। এআইইউডিএফ-ও সংখ্যালঘুদের সবাইকে আবেদনপত্র পূরণের কথা বলে চুপ করে বসে রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘উগ্র প্রাদেশিকতাবাদের কাছে সবাই আত্মসমর্পণ করে বসে আছে। তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আন্দোলনই একমাত্র উপায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy