বিপ্লব দেব
কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন অমিত শাহেরা। দক্ষিণের রাজ্যের ভোট মিটতেই তাঁদের নজর ফিরেছে উত্তর-পূর্বে। দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব ও রাজ্যে দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল দেওধরকে।
দেওধর রবিবারই দিল্লি পৌঁছে উত্তর-পূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব-সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে এক প্রস্ত আলোচনা সেরেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের পূর্ণাঙ্গ আলোচনা হওয়ার কথা আজ, সোমবার। ত্রিপুরায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি ছিলেন বিপ্লববাবু। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও তাঁর সেই দায়িত্ব এখনও রয়ে গিয়েছে। এ বার সভাপতির পদে অন্য মুখ নিয়ে আসার বিষয়েও ভাবনাচিন্তা রয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের।
সিপিএমের ২৫ বছরের জমানার অবসান ঘটিয়ে ত্রিপুরায় বিজেপির সরকার গড়ার দু’মাসের মধ্যেই লাগাতার বিতর্কিত মন্তব্য করে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার সুনীল-বিপ্লব জুটি নির্বাচনে বিরাট সাফল্য এনে দিলেও ক্ষমতায় আসার পরে দু’জনের মধ্যে মনোমালিন্য মাথাচাড়া দিয়েছে। তাঁর ‘পরামর্শ’ নিতে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব আর উৎসাহ না দেখানোয় ত্রিপুরার পর্যবেক্ষক দেওধরও রাজ্যের বাইরেই বেশি সময় কাটিয়েছেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এ বার গোটা ঘটনাপ্রবাহ খতিয়ে দেখে মীমাংসাসূত্র বেঁধে দিতে চান। দেওধরের ঘনিষ্ঠ এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘গত দু’মাসে যা যা হয়েছে, সকলেই জানেন। কিন্তু কর্নাটকের গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন থাকায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই দিকে নজর দিতে পারছিলেন না। এখন তাঁরাই পরবর্তী পথের রূপরেখা তৈরি করে দেবেন।’’
বিজেপির একটি সূত্রের খবর, বিপ্লববাবু সভাপতি হলেও ভোটের সময়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পাঠানো তহবিল খরচ করা হয়েছিল মূলত দেওধরের পরিকল্পনাতেই। সেই খরচের হিসেব দাখিল করা নিয়েও শাসক দলের অন্দরে টানাপড়েন আছে। নতুন সভাপতি নিয়োগ করতে গেলেও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এই প্রশ্ন মাথায় রাখতে হবে বলে বিজেপি সূত্রের বক্তব্য।
এরই মধ্যে আবার ত্রিপুরায় বিজেপি-আইপিএফটি বিরোধের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে ব্লক উন্নয়ন উপদেষ্টা কমিটির (বিএসি) ২৭ জন চেয়ারম্যান নিয়োগকে ঘিরে। যেখানে তাদের বিধায়ক আছেন, সেখানেও বিজেপি নিজেদের লোকজনকে কমিটির মাথায় বসিয়ে দিয়েছে বলে আইপিএফটি-র অভিযোগ। এর জেরে গন্ডাছড়া, আমবাসায় বাজার বন্ধ রেখে ওই জনজাতি সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছে। সমস্যা না মিটলে আরও বড় প্রতিবাদের পথে যাওয়ার কথাও ভাবছে তারা।
রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা অবশ্য বলছেন, ‘‘নতুন চেয়ারম্যানদের তালিকা তৈরির জন্য একটি সমন্বয় কমিটি করা হয়েছিল। আমি এবং বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতিমা ভৌমিক যেমন সেখানে ছিলাম, তেমনই আইপিএফটি-র সাধারণ সম্পাদক তথা মন্ত্রী মেবার কুমার জামাতিয়া ও মঙ্গল দেববর্মাও ছিলেন। আলোচনা করেই তালিকা হয়েছে। সেই তালিকায় মুখ্যমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন।’’ তার পরেও কোনও সমস্যা থাকলে আরও আলোচনা করতে আপত্তি নেই বলে জিষ্ণুবাবু জানাচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy