কালো টাকা দিয়েই কালো টাকাকে সাদা করা যাবে না।
সিন্দুকে কালো টাকা থাকলে বা কালো টাকায় কেনা সম্পত্তি থাকলে তা জানিয়ে ৪৫ শতাংশ কর-জরিমানা মিটিয়ে দিন। তা হলেই কেউ আর কোনও প্রশ্ন করবে না বলে জানিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। শিল্পমহল থেকে ব্যবসায়ী মহলের দাবি ছিল, কর-জরিমানাটা যেন কালো টাকা দিয়েই মেটাতে দেওয়া হয়। সেই অর্থের উৎস নিয়েও যেন আয়কর দফতর কোনও প্রশ্ন না করে।
আজ সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে অরুণ জেটলির অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে, সাদা টাকা দিয়েই কর-জরিমানা মেটাতে হবে। অর্থাৎ কেউ যদি জানান, তাঁর হিসাব বহির্ভূত আয় বা সম্পত্তির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকা, তা হলে আইনত আয় থেকেই ৪৫ কোটি টাকা কর-জরিমানা মেটাতে হবে। না হলে ধরে নেওয়া হবে, কালো টাকার পরিমাণই ১৪৫ কোটি টাকা। তখন তার উপরে কর-জরিমানা মেটাতে হবে।
কালো টাকা রুখতে:
কালো টাকা ঘোষণা করে কালো টাকা দিয়েই কর-জরিমানা মেটানো যাবে না
কর-জরিমানা মেটাতে বাড়তি সময়
আজ বণিকসভা ফিকি-র কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ‘‘যাঁরা সততার সঙ্গে বছরের পর বছর কর জমা করছেন, তাঁদের থেকে অসৎ পথে, কর ফাঁকি দেওয়া ব্যক্তিদের বেশি সুবিধা দিতে পারি না। তা হলে সৎ করদাতাদের প্রতি অবিচার করা হয়।’’ ১৯৯৭ সালে কালো টাকা জমা প্রকল্পে এমনই বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়েছিল বলেও জেটলির মত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘অনেকে বলছেন, এই প্রকল্পটিকে আকর্ষণীয় করুন। এটি মরসুমি সেল চলছে না। কালো টাকার মালিকদের হেনস্থা থেকে বাঁচার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।’’
তবে শিল্পমহলের দাবি মেনে কর-জরিমানা মেটানোর সময়সীমা অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে অর্থমন্ত্রক। ১ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কালো টাকা ঘোষণা করার সময় দেওয়া হয়েছে। কর-জরিমানা মেটানো যাবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। শিল্পমহলের আর্জি ছিল, নগদের জোগানে সমস্যা হয়। তাই জরিমানা মেটানোর সময় আরও বাড়ানো হোক। না হলে যারা কালো টাকার ঘোষণা করবেন, তাঁদের জরিমানা দিতে জলের দরে সম্পত্তি বেচে দিতে হতে পারে।
আজ অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে, এটি বাস্তব সমস্যা। তাই ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মোট কর-জরিমানার ২৫ শতাংশ মেটালেই চলবে। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে আরও ২৫ শতাংশ এবং বাকিটা মেটানোর জন্য আগামী বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় মিলবে। অর্থমন্ত্রকের রাজস্ব সচিব হাসমুখ আঢ়িয়া বলেন, ‘‘৪৫ শতাংশের মধ্যে মাত্র ৭.৫ শতাংশ জরিমানা। ৩০ শতাংশ কর এবং বাকি ৭.৫ শতাংশ কৃষিকল্যাণ সেস।’’
সিট-এর সুপারিশ:
৩ লক্ষ টাকার বেশি নগদ লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা
হাতে নগদের ঊর্ধ্বসীমা ১৫ লক্ষ টাকা
কালো টাকার রমরমা রুখতে এই ধরনের প্রকল্পের পাশাপাশি নগদ লেনদেন কমানোও দরকার বলে মনে করছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম বি শাহ-র নেতৃত্বাধীন সিট। কালো টাকা উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা মোদী সরকার প্রথম দিনই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করেছিল। আজ সরকারের কাছে সিট সুপারিশ করেছে, ৩ লক্ষ টাকার বেশি পরিমাণে নগদ লেনদেনের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক। এর বেশি পরিমাণে নগদ লেনদেনে আইন করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। এর ফলে আবাসনের মতো ক্ষেত্রে কালো টাকার লেনদেন বন্ধ হবে বলে সিট-এর মত। একই ভাবে কালো টাকার মালিকরা বেশির ভাগ অর্থই নগদে নিজেদের কাছে রাখেন বলে সিট-এর মত। তার জন্য হাতে নগদ রাখার ঊর্ধ্বসীমাও ১৫ লক্ষ টাকায় বেঁধে দেওয়া হোক বলে সিট আজ সুপারিশ করেছে। সিট-এর সুপারিশ, বিশেষ প্রয়োজনে এর বেশি নগদ রাখতে হলে আয়কর দফতরের অনুমতি নেওয়ার ব্যবস্থা হোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy