—প্রতীকী ছবি।
জিতেও যেন জিত হল না বিজেপি তথা এনডিএ-র। তিন রাজ্যে মোট চারটি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনের ভোট গোনা হল সোমবার। চারটি আসনের মধ্যে তিনটিই এনডিএ-র ঝুলিতে। কিন্তু ‘মর্যাদার লড়াই’ ছিল যে আসনকে ঘিরে, দিল্লির সেই ববানা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে আম আদমি পার্টির (আপ) কাছে বড় ব্যবধানে হার হল বিজেপির। গোয়ার দু’টি আসনে বিজেপির এবং অন্ধ্রপ্রদেশের একটি আসনে শরিক তেলুগু দেশম পার্টির (টিডিপি) বড় জয়ে এনডিএ শিবিরে খুশির হাওয়াই থাকার কথা। কিন্তু হরিষে বিষাদ আনল দিল্লির হার।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব ছেড়ে নিজের রাজ্য গোয়ায় ফিরে মার্চেই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেছিলেন মনোহর পর্রীকর। কিন্তু তিনি গোয়া বিধানসভার সদস্য ছিলেন না। মুখ্যমন্ত্রীকে বিধানসভায় আনতে পানাজির বিজেপি বিধায়ক সিদ্ধার্থ কুঙ্কালিনেকর পদত্যাগ করেন। সেই আসন থেকেই উপনির্বাচনে লড়লেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি পেলেন ৯ হাজার ৮৬২টি ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস প্রার্থী পেলেন ৬ হাজার ৫৯টি ভোট। ফলে ৩ হাজার ৮০০-রও বেশি ভোটে জয়ী হয়ে ফের গোয়া বিধানসভায় ঢুকলেন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকর।
আরও পড়ুন: আজই শশিকলাকে বহিষ্কার করছে এআইএডিএমকে?
গোয়ায় আরও একটি আসনে উপনির্বাচন ছিল— ভলপোই। চলতি বছরের গোড়ায় হওয়া সাধারণ নির্বাচনে ভলপোই থেকে জয়ী হয়েছিলেন বিধানসভার তৎকালীন বিরোধী দলনেতা তথা গোয়া প্রদেশ কংগ্রেসের সে সময়কার অন্যতম স্তম্ভ বিশ্বজিৎ রাণে। কিন্তু গোয়ায় বৃহত্তম দল হয়েও কংগ্রেস সরকার গড়তে না পারায় দলের সর্বভারতীয় নেতৃত্বকেই দায়ী করেন বিশ্বজিৎ। বিধায়ক পদে ইস্তফা দেন। কংগ্রেসও ছেড়ে দেন। পর্রীকর এর পরেই বিশ্বজিৎ রাণেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করেন, ভলপোই থেকেই ফের বিজেপির টিকিটে লড়তে নামেন বিশ্বজিৎ। আজ ফল প্রকাশের পর দেখা গেল স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ রাণে পেয়েছেন ১৬ হাজার ১৬৭ ভোট এবং কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন ৬ হাজার ১০১ ভোট। অর্থাৎ বিপুল ব্যবধানে জয় বিশ্বজিৎ রাণের।
গোয়ায় দু’টি আসনেই জয়ের সুবাদে বিধানসভায় আসন বেড়ে গেল বিজেপির। —ফাইল চিত্র।
অন্ধ্রপ্রদেশের নান্দিয়াল আসনেও উপনির্বাচন ছিল। শাসক দল টিডিপি এবং বিরোধী দল ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরিবেশেই ভোট হয়েছিল। কিন্তু গণনার শুরু থেকেই এ দিন এগিয়ে হু হু করে এগোতে থাকেন টিডিপি প্রার্থী ব্রহ্মানন্দ রেড্ডি। ২৭ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। আর কংগ্রেস চলে গিয়েছে বহু পিছনে। ২ লক্ষের কাছাকাছি ভোট পড়েছে যে কেন্দ্রে, সেখানে কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট মাত্র ১ হাজার ৩৮২।
আরও পড়ুন: পটনায় মধ্যমণি মমতাই
দিল্লির ববানা আসনে অবশ্য বিজেপি ধাক্কা খেয়েছে। ববানার বিধায়ক বেদ প্রকাশ আপ ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন এবং বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তার পর বিজেপির টিকিটেই ওই কেন্দ্র থেকে ফের লড়লেন তিনি। কিন্তু আপ বড় ব্যবধানে দুর্গ রক্ষা করেছে। আপ প্রার্থী রাম চন্দ্র পেয়েছেন ৬০ হাজারের কাছাকাছি ভোট। সেখানে বিজেপির বেদ প্রকাশ পেয়েছেন ৩৬ হাজারের কাছাকাছি। চমকপ্রদ ফল করে কংগ্রেসের সুরেন্দ্র কুমার প্রায় ৩২ হাজার ভোট টেনেছেন।
দিল্লির পৌর নির্বাচন এবং রাজৌরি গার্ডেন উপনির্বাচনে সম্প্রতি পর পর ভরাডুবি হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবালের দল আপের। একের পর এক পরাজয় এবং দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে দিল্লির রাজনৈতিক ময়দানে ক্রমশ কোণঠাসা হতে থাকা অরবিন্দ কেজরীবালকে ববানার জয় অনেকটা অক্সিজেন দেবে বলে রাজনৈতিক শিবির মনে করছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই জয়ের জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy