Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সিবিআই দ্বন্দ্বে লাভ আঞ্চলিক দলগুলিরই

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হোক বা মায়াবতী। সারদা কেলেঙ্কারি থেকে তাজ করিডর। আঞ্চলিক দলকে হাতে রাখতে সিবিআই হয়ে থাকে শাসক দলের অন্যতম রাজনৈতিক হাতিয়ার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৪৯
Share: Save:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হোক বা মায়াবতী। সারদা কেলেঙ্কারি থেকে তাজ করিডর। আঞ্চলিক দলকে হাতে রাখতে সিবিআই হয়ে থাকে শাসক দলের অন্যতম রাজনৈতিক হাতিয়ার। কিন্তু মোদী সরকারের শেষ পর্যায়ে সিবিআইয়ের দ্বন্দ্বে লোকসভার আগে আঞ্চলিক দলগুলিকে সিবিআই জুজু দেখিয়ে ভয় দেখানোর প্রচেষ্টা ধাক্কা খেল বলেই মনে করছেন রাজধানীর রাজনীতির অনেকেই।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল নেতৃত্ব প্রথম থেকেই সিবিআইকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলে আসছেন। এখন সিবিআইয়ের অফিসারদের একে অপরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনায়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তোলায় ওই তদন্তকারী সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে জনমানসে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বলেই মনে করছেন বিরোধী নেতারা। তৃণমূলের সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের মতে, ‘‘সিবিআইয়ের দুই শীর্ষ অফিসার একে অপরের বিরুদ্ধে ঘুষ খাওয়ার, টাকা নিয়ে মামলা চেপে দেওয়ার অভিযোগ তুলছেন। তা-ও প্রকাশ্যে। বিষয়টি গড়াচ্ছে আদালত পর্যন্ত। এর পর সিবিআই কারওর বিরুদ্ধে তদন্ত করলে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটা কি স্বাভাবিক নয়!’’

কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচনের পরে জেডিএস-কংগ্রেসের শপথ গ্রহণ মঞ্চে সনিয়া গাঁধী-মায়াবতীর আলিঙ্গন দেখার পর থেকে প্রমাদ গুনছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশেও বোঝাপড়ার দিকে যাচ্ছেন রাহুল-অখিলেশ-মায়াবতী। যে জোট হলে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির ফল খারাপ হওয়া অনিবার্য। তাই লোকসভার আগে মায়াবতীকে চাপে রাখতে তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই। লক্ষ্য জোট প্রচেষ্টা ভেঙে দেওয়া। দলিত নেত্রী যাতে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান বা ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না করেন তার জন্যও বিএসপির উপর পরোক্ষে চাপ ছিল বিজেপির, এমনই অভিযোগ। কিন্তু সিবিআইয়ের কোন্দল প্রকাশ্যে এসে পড়ায় সেই চাপ কতটা বাস্তবে ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে। এসপি নেতা কিরণময় নন্দের মতে, ‘‘সিবিআইকে ব্যবহার করে আঞ্চলিক দলগুলিকে ভয় দেখানোর যে রাজনৈতিক খেলা চলছিল তা এর পর থেকে লঘু হয়ে পড়বে।’’

তৃণমূল বা এসপি’র মতো দলগুলি যারা বৃহত্তর আঞ্চলিক জোটে বিশ্বাসী, তারাও এতে শাপে বর দেখছে। প্রথমে গতি পেলেও মাঝে বিরোধী দলগুলির ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রশ্নে গতিহীনতা দেখা যাচ্ছিল। সিবিআইয়ের কলহের পরে জোটের প্রশ্নে ফের গতি আসবে বলেই মনে করেছে সুখেন্দুবাবুরা। তবে আপাতত মেপে পা ফেলতেই চাইছে আঞ্চলিক দলগুলি। সিবিআইয়ের কোন্দল কত দূর গড়ায়, মোদী সমস্যা সমাধানে কতটা সক্রিয় ভূমিকা নেন আগে তা বুঝে নিতে চাইছে বিরোধীরা।

সিবিআইয়ের কোন্দলে বিরোধীরা খুশি হলেও, ইডি বা আয়কর দফতর মতো অন্য তদন্তকারী সংস্থাগুলি নিজেদের কাজ করে যাবে বলে স্পষ্ট করে দিয়েছে সরকারের একটি শীর্ষ সূত্র। ইডি সূত্র বলছে, সিবিআই-তে ঝামেলা হচ্ছে বলে ইডির তদন্ত চালিয়ে যেতে কোনও সমস্যা নেই। তারা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। একই ভাবে আয়কর দফতরও আজ লালুপ্রসাদ ও পরিবারের ১২৮ কোটির ১৭টি বেনামি সম্পত্তির দখল নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CBI Conflict Mayawati Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE