—ফাইল চিত্র।
করোনার রক্তচক্ষুর মধ্যেই সপ্তাহ দুয়েক আগে উত্তর-পূর্ব সীমান্তে মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে চিনা ও ভারতীয় সেনার মধ্যে। এ বার জানা গেল, গত সপ্তাহের শুরুতেও ভারতীয় জওয়ান ও ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের (আইটিবিপি) টহলদারি দলের সঙ্গে হাতাহাতি বাধে চিনা বাহিনীর। তার জেরে ভারতীয় জওয়ান ও আইটিবিপির টহলদারি দলকে আটক করে রেখেছিল চিনা বাহিনী। বাজেয়াপ্ত করেছিল তাদের অস্ত্রশস্ত্রও। তবে শেষমেশ দু’তরফের কমান্ডারদের মধ্যে বৈঠকের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ভারতীয় জওয়ানদের অস্ত্রশস্ত্র সমেত ছেড়ে দেয় চিনা বাহিনী। যদিও এই অভিযোগ খারিজ করেছে ভারতীয় সেনার একটি সূত্র।
ভারত সরকারের এক শীর্ষ আমলা একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, ‘‘গত বুধবার ভারতীয় জওয়ান ও চিনা বাহিনীর জওয়ানদের মধ্যে হাতাহাতি বাধলে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে। আমাদের বেশ কয়েকজন জওয়ানকে আটক করে চিন। পরে যদিও সকলকে ছেড়ে দেয় তারা।’’ প্যাংগং লেকের কাছে গোটা ঘটনাটি ঘটে বলে জানান তিনি। ভারতীয় বাহিনীর তরফে প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে বিষয়টি জাননো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যে খবর এসে পৌঁছেছে, সেই অনুযায়ী, সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘন করে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিল চিনা বাহিনী। শুধু তাই নয়, মোটর বোটে চেপে প্যাংগং লেকে নজরদারি চালাতেও শুরু করেছিল তারা। তা নিয়েই দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি বেধে যায় এবং তা চরম আকার ধারণ করে। দু’পক্ষের আধিকারিকদের হস্তক্ষেপে উত্তেজনা কমলেও, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি এখনও পর্যন্ত। শুক্রবারই লেহ-তে ফোর্টিন্থ কোরের সদর দফতরে যান সেনা প্রধান এমএম নরবণে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন তিনি।
আরও পড়ুন: রেকর্ড গড়ে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৬৭৬৭, দেশে সংক্রমিত ১ লক্ষ ৩২ হাজার
ভারতীয় এক সেনা অফিসার জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে প্যাংগং সংলগ্ন এলাকায় দু’পক্ষেরই সমান সংখ্যক বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। লাদাখের উত্তর সাব সেক্টরে গালওয়ান নদীর তীর বরাবর তিনটি তাঁবু ফেলেছে চিন। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে ভারতও। প্যাংগংয়ের উত্তরে, দেমজক এবং গালওয়ান উপত্যকা এলাকায় তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান করছে দু’পক্ষের সেনা। সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিদিন রিপেোর্ট নিচ্ছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।
আরও পড়ুন: বিচ্ছিন্ন বহু এলাকা, বাড়ছে ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ
এ মাসের শুরুতে পূর্ব লাদাখে চিনা হেলিকপ্টারও চেখে পড়েছিল বলে প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে ভারতীয় সেনা। কিন্তু লাদাখের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে চিনা ও ভারতীয় সেনার মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। গালওয়ান উপত্যকায় ভারতের রাস্তা ও সেতু নির্মাণ নিয়ে আপত্তি তুলে আসছে চিন। সেই পরিস্থিতিতেই গত ৯ মে উত্তর সিকিমের নাকু লা সেক্টরে ভারতীয় সেনার সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে চিনা বাহিনী। তাতে দু’পক্ষেরই কয়েক জন আহত হন। স্থানীয় স্তরে আলোচনার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। অভিযোগ ওঠে, নাকু লা সেক্টরে সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘন করে এগোচ্ছিল চিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy